42:40至42:43节的经注
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

৪০-৪৩ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ ‘মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ।' যেমন অন্য জায়গায় বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যে কেউ তোমাদেরকে আক্রমণ করবে তোমরাও তাকে অনুরূপ আক্রমণ করবে।”(২:১৯৪) এর দ্বারা জানা যাচ্ছে যে, প্রতিশোধ গ্রহণ করা জায়েয। কিন্তু ক্ষমা করে দেয়াই হচ্ছে ফযীলতের কাজ। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যখমের কিসাস বা প্রতিশোধ রয়েছে। তবে যে ব্যক্তি মাফ করে দিবে ওটা তার জন্যে তার গুনাহ মাফের কারণ হবে।”(৫:৪৫) আর এখানে বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যে ক্ষমা করে দেয় ও আপোষ-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট আছে।” হাদীসে আছেঃ “ক্ষমা করে দেয়ার কারণে আল্লাহ তা'আলা বান্দার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।”এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “তিনি যালিমদেরকে পছন্দ করেন না। অর্থাৎ প্রতিশোধ গ্রহণের ব্যাপারে যে সীমালংঘন করে তাকে আল্লাহ তাআলা ভালবাসেন না। সে আল্লাহর শত্রু। মন্দের সূচনা তার পক্ষ হতেই হলো এটা মনে করা হবে।অতঃপর মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘অত্যাচারিত হবার পর যারা প্রতিবিধান করে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না।'হযরত ইবনে আউন (রঃ) বলেনঃ “আমি (আরবী) শব্দটির তাফসীর জানবার আকাঙ্ক্ষা করছিলাম। আমাকে আলী ইবনে যায়েদ ইবনে জাদআন (রঃ) তাঁর মাতা উম্মে মুহাম্মাদ (রাঃ)-এর বরাত দিয়ে বলেন, যিনি হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট যাতায়াত করতেন, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একদা হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট গমন করেন। ঐ সময় হযরত যয়নব (রাঃ) তথায় উপস্থিত ছিলেন। এটা কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর জানা ছিল না। তিনি আয়েশা (রাঃ)-এর দিকে হাত বাড়ালে হযরত আয়েশা (রাঃ) ইঙ্গিতে হযরত যয়নবের উপস্থিতির কথা তাঁকে জানিয়ে দেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর হাত টেনে নেন। হযরত যয়নব (রাঃ) তখন হযরত আয়েশা (রাঃ)-কে গালমন্দ দিতে শুরু করেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিষেধ সত্ত্বেও তিনি চুপ হলেন না। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ)-কে অনুমতি দিলেন যে, তিনি যেন হযরত যয়নব (রাঃ)-এর কথার উত্তর দেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) যখন তাঁকে উত্তর দিতে শুরু করলেন তখন হযরত যয়নব (রাঃ) তাকে আর পেরে উঠলেন না। সুতরাং তিনি সরাসরি হযরত আলী (রাঃ)-এর নিকট গমন করে তাঁকে বলেনঃ “হযরত আয়েশা (রাঃ) আপনার সম্পর্কে এরূপ এরূপ কথা বলেছেন এবং এরূপ এরূপ করেছেন।” একথা শুনে হযরত ফাতেমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট আগমন করেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বললেনঃ “কা’বার প্রতিপালকের শপথ! তোমার আব্বার (অর্থাৎ আমার) হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর প্রতি ভালবাসা রয়েছে। তিনি তৎক্ষণাৎ ফিরে যান এবং হযরত আলী (রাঃ)-এর নিকট সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করেন। অতঃপর হযরত আলী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট গমন করে তাঁর সাথে আলাপ আলোচনা করেন। এ ঘটনাটি ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) এভাবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এর বর্ণনাকারী তার রিওয়াইয়াতে প্রায়ই অস্বীকার্য হাদীসগুলো আনয়ন করে থাকেন এবং এই রিওয়াইয়াতটিও মুনকার বা অস্বীকার্য।ইমাম নাসাঈ (রঃ) এবং ইমাম ইবনে মাজাহ (রঃ) ঘটনাটি এভাবে আনয়ন করেছেন যে, হযরত যয়নব (রাঃ) ক্রোধান্বিতা অবস্থায় পূর্বে কোন খবর না দিয়েই হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর ঘরে আগমন করেন। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে হযরত আয়েশা (রাঃ) সম্পর্কে কিছু বলেন। তারপর হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর সাথে ঝগড়া করতে শুরু করেন। কিন্তু হযরত আয়েশা (রাঃ) চুপ থাকেন। হযরত যয়নব (রাঃ)-এর বক্তব্য শেষ হলে রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ)-কে প্রতিশোধ গ্রহণ করতে বলেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) জবাব দিতে শুরু করলে হযরত যয়নব (রাঃ)-এর মুখের থুথু শুকিয়ে যায়। তিনি হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর কথার জবাব দিতে পারলেন না। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর চেহারা মুবারক হতে দুঃখের চিহ্ন দূর হয়ে গেল। মোটকথা (আরবী)-এর অর্থ হলো অত্যাচারিত ব্যক্তির অত্যাচারী ব্যক্তি হতে প্রতিশোধ গ্রহণ করা। বাযযার (রঃ) বর্ণনা করেছেন যে, যালিমের বিরুদ্ধে যে বদদু'আ করলো সে প্রতিশোধ নিয়ে নিলো। এ হাদীসটিই ইমাম তিরমিযীও (রঃ) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এর বর্ণনাকারী সম্পর্কে সমালোচনা রয়েছে।এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ ‘শুধু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে যারা মানুষের উপর যুলুম করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণ করে বেড়ায়। সহীহ হাদীসে এসেছে যে, গালিদাতা দুই ব্যক্তির (পাপের) বোঝা প্রথম গালিদাতার উপর পড়বে যে পর্যন্ত না অত্যাচারিত ব্যক্তি প্রতিশোধ গ্রহণে সীমালংঘন করে।প্রবল পরাক্রান্ত আল্লাহ বলেনঃ “এরূপ অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণকারী ব্যক্তির জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।' অর্থাৎ কিয়ামতের দিন এরূপ ব্যক্তি কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে।হযরত মুহাম্মাদ ইবনে ওয়াসি (রঃ) বলেন, একবার আমি মক্কার পথে যাত্রা শুরু করি। দেখি খন্দক বা পরিখার উপর সেতু নির্মিত রয়েছে। আমি ওখানেই রয়েছি এমন সময় আমাকে গ্রেফতার করা হয় এবং বসরার আমীর মারওয়ান ইবনে মাহলাবের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়া হয়। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “হে আবু আবদিল্লাহ! তুমি কি চাও?” আমি উত্তরে বললামঃ আমি এই চাই যে, সম্ভব হলে আপনি বানু আদ্দীর ভাইএর মত হয়ে যান। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ “তিনি কে?" আমি জবাব দিলামঃ তিনি হলেন আলা ইবনে যিয়াদ। তিনি তার এক বন্ধুকে একবার কোন এক কাজে নিযুক্ত করেন। অতঃপর তিনি তার কাছে এক পত্র লিখেনঃ “হামদ ও সানার পর, সমাচার এই যে, যদি সম্ভব হয় তবে তুমি তোমার কোমরকে (পাপের বোঝা হতে শূন্য রাখবে, পেটকে হারাম থেকে রক্ষা করবে এবং তোমার হাত যেন মুসলমানদের রক্ত ও মাল দ্বারা অপবিত্র না হয়। যখন তুমি এরূপ কাজ করবে তখন তোমার উপর কোন গুনাহ থাকবে না। কুরআন কারীমে আল্লাহ পাক বলেন- ‘শুধু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে যারা মানুষের উপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণ করে বেড়ায়। এ কথা শুনে মারওয়ান বলেনঃ “আল্লাহ জানেন যে, তিনি সত্য বলেছেন এবং কল্যাণের কথাই জানিয়েছেন। আচ্ছা, এখন আপনি কি কামনা করেন?” আমি উত্তরে বললামঃ আমি চাই যে, আমাকে আমার বাড়ীতে পৌঁছিয়ে দেয়া হোক। তিনি তখন বললেনঃ “আচ্ছা, ঠিক আছে।” (এটা ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)যুলুম ও যালিম যে নিন্দনীয় এটা বর্ণনা করে এবং যুলুমের প্রতিশোধ গ্রহণের অনুমতি দিয়ে এখন ক্ষমা করে দেয়ার ফযীলত বর্ণনা করতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘অবশ্য যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয়, ওটা তো হবে দৃঢ় সংকল্পেরই কাজ।' এর ফলে সে বড় পুরস্কার এবং পূর্ণ প্রতিদান লাভের যোগ্য হযরত ফুযায়েল ইবনে আইয়ায (রঃ) বলেনঃ তোমার কাছে কোন লোক এসে যদি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তবে তুমি তাকে উপদেশ দিবেঃ ভাই! তাকে তুমি ক্ষমা করে দাও। ক্ষমা করার মধ্যেই বড় মঙ্গল নিহিত রয়েছে। আর এটাই তাকওয়া প্রমাণ করে। যদি সে এটা অস্বীকার করে এবং স্বীয় অন্তরের দুর্বলতা প্রকাশ করে তবে তাকে বলে দাও- যাও, প্রতিশোধ নিয়ে নাও। কিন্তু দেখো, এতে যেন সীমালংঘন না হয়, আর আমি এখনো বলছি যে, তুমি বরং ক্ষমা করেই দাও। এই দরযা খুব প্রশস্ত, আর প্রতিশোধ গ্রহণের রাস্তা খুবই সংকীর্ণ। জেনে রেখো যে, ক্ষমাকারী আরামে মিষ্টি ঘুমে ঘুমিয়ে পড়ে। পক্ষান্তরে প্রতিশোধ গ্রহণকারী প্রতিশোধ গ্রহণের নেশায় সদা মেতে থাকে। এর চিন্তায় তার ঘুম হয় না।হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক হযরত আবু বকর (রাঃ)-কে গালমন্দ দিতে শুরু করে। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-ও তথায় বিদ্যমান ছিলেন। তিনি বিস্মিতভাবে মুচকি হাসছিলেন। হযরত আবু বকর (রাঃ) নীরব ছিলেন। কিন্তু লোকটি যখন গালি দিতেই থাকলো তখন তিনিও কোন কোনটির জবাব দিতে লাগলেন। এতে রাসূলুল্লাহ (সঃ) অসন্তুষ্ট হলেন এবং সেখান হতে চলে গেলেন। তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর খিদমতে হাযির হয়ে আরয করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! লোকটি আমাকে মন্দ বলতেই ছিল এবং আপনি বসে বসে শুনছিলেন। আর আমি যখন তার দু' একটি কথার জবাব দিলাম তখন আপনি অসন্তুষ্ট হয়ে চলে আসলেন (কারণ কি?)।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে উত্তরে বললেনঃ “জেনে রেখো যে, তুমি যতক্ষণ পর্যন্ত নীরব ছিলে ততক্ষণ পর্যন্ত ফেরেশতা তোমার পক্ষ থেকে তার কথার জবাব দিচ্ছিলেন। অতঃপর যখন তুমি নিজেই জবাব দিতে শুরু করলে তখন ফেরেশতা সরে পড়লেন এবং মাঝখানে শয়তান এসে পড়লো। তাহলে বলতো আমি শয়তানের বিদ্যমানতায় কিভাবে বসে থাকতে পারি?” অতঃপর তিনি বললেনঃ “হে আবু বকর (রাঃ)! জেনে রেখো যে, তিনটি জিনিস সম্পূর্ণরূপে সত্য। প্রথমঃ যার উপর কেউ জুলুম করে এবং সে তা সহ্য করে নেয়, আল্লাহ তাআলা তার মর্যাদা অবশ্যই বাড়িয়ে দেন এবং তাকে সাহায্য করেন। দ্বিতীয়তঃ যে ব্যক্তি সদ্ব্যবহার ও অনুগ্রহের দরযা খুলে দিবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক যুক্ত রাখার। উদ্দেশ্যে মানুষকে দান করতে থাকবে, আল্লাহ তার ধন-মালে বরকত দান করবেন এবং আরো বেশী প্রদান করবেন। তৃতীয়তঃ যে ব্যক্তি মাল-ধন বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে ভিক্ষার দরযা খুলে দিবে, এর কাছে, ওর কাছে চেয়ে বেড়াবে, আল্লাহ তার বরকত কমিয়ে দিবেন এবং তার মাল-ধন কমেই থাকবে।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন। সুনানে আবি দাউদের মধ্যেও এ রিওয়াইয়াতটি রয়েছে। বিষয়ের দিক দিয়ে এটি বড়ই প্রিয় হাদীস)

最大化您的 Quran.com 体验!
立即开始您的游览:

0%