ان الذين توفاهم الملايكة ظالمي انفسهم قالوا فيم كنتم قالوا كنا مستضعفين في الارض قالوا الم تكن ارض الله واسعة فتهاجروا فيها فاولايك ماواهم جهنم وساءت مصيرا ٩٧
إِنَّ ٱلَّذِينَ تَوَفَّىٰهُمُ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ ظَالِمِىٓ أَنفُسِهِمْ قَالُوا۟ فِيمَ كُنتُمْ ۖ قَالُوا۟ كُنَّا مُسْتَضْعَفِينَ فِى ٱلْأَرْضِ ۚ قَالُوٓا۟ أَلَمْ تَكُنْ أَرْضُ ٱللَّهِ وَٰسِعَةًۭ فَتُهَاجِرُوا۟ فِيهَا ۚ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ مَأْوَىٰهُمْ جَهَنَّمُ ۖ وَسَآءَتْ مَصِيرًا ٩٧
اِنَّ
الَّذِیْنَ
تَوَفّٰىهُمُ
الْمَلٰٓىِٕكَةُ
ظَالِمِیْۤ
اَنْفُسِهِمْ
قَالُوْا
فِیْمَ
كُنْتُمْ ؕ
قَالُوْا
كُنَّا
مُسْتَضْعَفِیْنَ
فِی
الْاَرْضِ ؕ
قَالُوْۤا
اَلَمْ
تَكُنْ
اَرْضُ
اللّٰهِ
وَاسِعَةً
فَتُهَاجِرُوْا
فِیْهَا ؕ
فَاُولٰٓىِٕكَ
مَاْوٰىهُمْ
جَهَنَّمُ ؕ
وَسَآءَتْ
مَصِیْرًا
۟ۙ
3

যারা নিজেদের উপর যুলুম করে তাদের প্রাণ গ্রহণের সময় ফিরিশতাগণ বলে, ‘তোমরা কি অবস্থায় ছিলে?’ তারা বলে, ‘দুনিয়ায় আমরা অসহায় ছিলাম;’ তারা বলে, ‘আল্লাহর যমীন কি এমন প্রশস্ত ছিল না যেখানে তোমরা হিজরত করতে [১] ?’ এদেরই আবাসস্থল জাহান্নাম, আর তা কত মন্দ আবাস! [২]

চৌদ্দতম রুকূ‘

[১] হিজরত সম্পর্কিত আয়াতসমূহে তিন রকমের বিষয়বস্তু বর্ণিত হয়েছে। (এক) হিজরতের ফযীলত, (দুই) হিজরতের দুনিয়া ও আখেরাতের বরকত ও (তিন) সামর্থ্য থাকা সত্বেও দারুল-কুফর থেকে হিজরত না করার কারণে শাস্তিবাণী।

হিজরতের ফযীলতঃ

এ বিষয়ে সূরা বাকারার এক আয়াতে রয়েছে-

(اِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَالَّذِيْنَ ھَاجَرُوْا وَجٰهَدُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ ۙ اُولٰۗىِٕكَ يَرْجُوْنَ رَحْمَتَ اللّٰهِ ۭ وَاللّٰهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ)

অর্থাৎ “যারা ঈমান এনেছে এবং যারা হিজরত করেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, তারা আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহ-প্রার্থী। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, করুণাময়” [সূরা আল-বাকারাহঃ ২১৮] অনুরুপভাবে আছে-

(اَلَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَهَاجَرُوْا وَجٰهَدُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ بِاَمْوَالِهِمْ وَاَنْفُسِهِمْ)

-অর্থাৎ “যারা ঈমান এনেছে ও হিজরত করেছে এবং আল্লাহর পথে মাল ও জান দ্বারা জিহাদ করেছে, তারা আল্লাহ্‌র কাছে বিরাট পদমর্যাদার অধিকারী এবং তারাই সফলকাম”। [সূরা আত-তাওবাহঃ ২০] অন্যত্র এসেছে

(وَمَنْ يُّھَاجِرْ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ يَجِدْ فِي الْاَرْضِ مُرٰغَمًا كَثِيْرًا وَّسَعَةً ۭ وَمَنْ يَّخْرُجْ مِنْۢ بَيْتِهٖ مُھَاجِرًا اِلَى اللّٰهِ وَرَسُوْلِهٖ ثُمَّ يُدْرِكْهُ الْمَوْتُ فَقَدْ وَقَعَ اَجْرُهٗ عَلَي اللّٰهِ)

অর্থাৎ “যে ব্যাক্তি আল্লাহ্‌ ও রাসূলের নিয়তে নিজ গৃহ থেকে বেরিয়ে পথেই মৃত্যুবরণ করে তার সওয়াব আল্লাহর যিম্মায় সাব্যস্ত হয়ে যায়”। [সূরা আন-নিসাঃ ১০০]

মোটকথা, উপরোক্ত তিনটি আয়াতে দারুল-কুফর থেকে হিজরতে উৎসাহ দান এবং এর বিরাট ফযীলত সুস্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত হয়েছে। এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ‘হিজরত পূর্বকৃত সব গোনাহকে নিঃশেষ করে দেয়’। [মুসলিম: ১২১; সহীহ ইবন খুযাইমাহ ২৫১৫]

হিজরতের বরকতঃ

হিজরতের বরকত সম্পর্কে সূরা নাহলের ৪১ নং আয়াতে বলা হয়েছেঃ “যারা আল্লাহর জন্য হিজরত করে নির্যাতিত হওয়ার পর, আমি তাদেরকে দুনিয়াতে উত্তম ঠিকানা দান করবো এবং আখেরাতের বিরাট সওয়াব তো রয়েছেই, যদি তারা বুঝে।” সূরা নিসার উল্লেখিত চার আয়াতে বলা হয়েছেঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে হিজরত করবে, সে পৃথিবীতে অনেক জায়গা ও সুযোগ-সুবিধা পাবে”।

[২] আব্দুল্লাহ্‌ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেনঃ কিছু মুসলিম কাফেরদের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাসত্বেও অংশগ্রহণ করত। এতেকরে কাফেরদের পাল্লা ভারী হত। কিন্তু যুদ্ধের সময় কোন কোন তীর এসে তাদেরকে হত্যা করত। তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করে তাদেরকে এ অবস্থায় থাকা থেকে নিষেধ করেছেন৷ [বুখারীঃ ৪৫৯৬, ৭০৮৫]