آپ 38:71 سے 38:80 آیات کے گروپ کی تفسیر پڑھ رہے ہیں
اِذْ
قَالَ
رَبُّكَ
لِلْمَلٰٓىِٕكَةِ
اِنِّیْ
خَالِقٌۢ
بَشَرًا
مِّنْ
طِیْنٍ
۟
فَاِذَا
سَوَّیْتُهٗ
وَنَفَخْتُ
فِیْهِ
مِنْ
رُّوْحِیْ
فَقَعُوْا
لَهٗ
سٰجِدِیْنَ
۟
فَسَجَدَ
الْمَلٰٓىِٕكَةُ
كُلُّهُمْ
اَجْمَعُوْنَ
۟ۙ
اِلَّاۤ
اِبْلِیْسَ ؕ
اِسْتَكْبَرَ
وَكَانَ
مِنَ
الْكٰفِرِیْنَ
۟
قَالَ
یٰۤاِبْلِیْسُ
مَا
مَنَعَكَ
اَنْ
تَسْجُدَ
لِمَا
خَلَقْتُ
بِیَدَیَّ ؕ
اَسْتَكْبَرْتَ
اَمْ
كُنْتَ
مِنَ
الْعَالِیْنَ
۟
قَالَ
اَنَا
خَیْرٌ
مِّنْهُ ؕ
خَلَقْتَنِیْ
مِنْ
نَّارٍ
وَّخَلَقْتَهٗ
مِنْ
طِیْنٍ
۟
قَالَ
فَاخْرُجْ
مِنْهَا
فَاِنَّكَ
رَجِیْمٌ
۟ۚۖ
وَّاِنَّ
عَلَیْكَ
لَعْنَتِیْۤ
اِلٰی
یَوْمِ
الدِّیْنِ
۟
قَالَ
رَبِّ
فَاَنْظِرْنِیْۤ
اِلٰی
یَوْمِ
یُبْعَثُوْنَ
۟
قَالَ
فَاِنَّكَ
مِنَ
الْمُنْظَرِیْنَ
۟ۙ
3

৭১-৮৫ নং আয়াতের তাফসীর: এ ঘটনাটি সূরায়ে বাকারা, সূরায়ে আ'রাফ, সূরায়ে হিজ্বর, সূরায়ে সুবহান, সূরায়ে কাহাফ এবং সূরায়ে সোয়াদে বর্ণিত হয়েছে। হযরত আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করার পূর্বে আল্লাহ্ ফেরেশতাদেরকে নিজের ইচ্ছার কথা বলেন যে, তিনি মাটি দ্বারা আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করবেন। তিনি তাদেরকে এ কথাও বললেন যে, যখন তিনি আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করবেন তখন যেন তারা তাকে সিজদা করেন, যাতে আল্লাহর আদেশ পালনের সাথে সাথে আদম (আঃ)-এরও আভিজাত্য প্রকাশ পায়। ফেরেশতারা সাথে সাথে আল্লাহর আদেশ পালন করেন। কিন্তু ইবলীস এ আদেশ পালনে বিরত থাকে। সে ফেরেশতাদের শ্রেণীভুক্ত ছিল না। বরং সে ছিল জ্বিনদের অন্তর্ভুক্ত। তার প্রকৃতিগত অশ্লীলতা এবং স্বভাবগত ঔদ্ধত্যপনা প্রকাশ পেয়ে গেল। মহান আল্লাহ্ তাকে প্রশ্ন করলেনঃ “হে ইবলীস! আমি যাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি, তার প্রতি সিজদাবনত হতে। তোমাকে কিসে বাধা দিলো? তুমি কি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে, না তুমি উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন?” সে উত্তরে বললোঃ “আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। কেননা, আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন আগুন হতে এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি হতে। সুতরাং মর্যাদার দিক দিয়ে আমি তার চেয়ে বহুগুণে উচ্চ।” ঐ পাপী শয়তান হযরত আদিম (আঃ)-কে বুঝতে ভুল করলো এবং আল্লাহর আদেশ অমান্য করার কারণে নিজেকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিলো। আল্লাহ্ তা'আলা তাকে বললেন:“তুমি এখান হতে বের হয়ে যাও, নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত। তুমি আমার রহমত হতে দূর হয়ে গেলে। তোমার উপর আমার লা'নত কর্মফল দিবস পর্যন্ত স্থায়ী হবে।” সে বললোঃ “হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আপনি পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।” মহান ও সহনশীল আল্লাহ্, যিনি স্বীয় মাখলুককে তাদের পাপের কারণে তাড়াতাড়ি পাকড়াও করেন না, ইবলীসের এ প্রার্থনাও কবুল করলেন এবং তিনি তাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিলেন। অতঃপর সে বললোঃ “আপনার ক্ষমতার শপথ! আমি আদম (আঃ)-এর সমস্ত সন্তানকে পথভ্রষ্ট করবো, তবে তাদেরকে নয় যারা তাদের মধ্যে আপনার একনিষ্ঠ বান্দা।” যেমন আল্লাহ্ তা'আলা অন্য আয়াতে ইবলীসের উক্তি উদ্ধৃত করেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তাকে যে আপনি আমার উপর মর্যাদা দান করলেন, কেন? কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দেন তাহলে আমি অল্প কয়েকজন ব্যতীত তার বংশধরদেরকে কর্তৃত্ত্বাধীন করে ফেলবো।” (১৭:৬২) এই স্বতন্ত্ৰকৃতদের কথা আল্লাহ্ তা'আলা অন্য আয়াতে বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমার বান্দাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা নেই। কর্মবিধায়ক হিসেবে তোমার প্রতিপালকই যথেষ্ট।” (১৭:৬৫)(আরবী) এখানে (আরবী) শব্দকে মুজাহিদ (রঃ) পেশ দিয়ে পড়েছেন এবং ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন যে, এর অর্থ হলোঃ “আমি স্বয়ং সত্য এবং আমার কথাও সত্য হয়ে থাকে।” হযরত মুজাহিদ (রঃ) হতেই আর একটি রিওয়াইয়াতে রয়েছে যে, এর অর্থ হলোঃ “সত্য আমার পক্ষ হতে হয় এবং আমি সত্যই বলে থাকি।” অন্যেরা (আরবী) শব্দ দুটোকেই যবর দিয়ে পড়ে থাকেন। সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, এটা হলো কসম, যার দ্বারা আল্লাহ কসম খেয়েছেন। আমি (ইবনে কাসীর রঃ) বলি যে, এ আয়াতটি আল্লাহ তা'আলার নিম্নের উক্তির মতঃ (আরবী) অর্থাৎ “কিন্তু আমার এ কথা অবশ্যই সত্যঃ আমি নিশ্চয়ই জ্বিন ও মানুষ উভয় দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবো।” (৩২:১৩) আর এক জায়গায় মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আল্লাহ বললেনঃ যাও, তাদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করবে, জাহান্নামই তোমাদের সকলের শাস্তি- পূর্ণ শাস্তি।” (১৭:৬৩)।