২০-২৬ নং আয়াতের তাফসীর: কিয়ামত অস্বীকারকারীরা বলবেঃ হায়, দুর্ভোগ আমাদের! এটাই তো প্রতিফল দিবস! মুমিন ও ফেরেশতারা তাদের লজ্জা আরো বাড়ানোর জন্যে বলবেনঃ হ্যা, এটাই ফায়সালার দিন যা তোমরা অবিশ্বাস করতে।অতঃপর ফেরেশতাদেরকে আল্লাহ্ তা'আলা নির্দেশ দিবেনঃ তোমরা তাদের সহচরদেরকে, তাদের ভাই বন্ধুদেরকে এবং তাদের অনুরূপ ব্যক্তিবর্গকে এক জায়গায় একত্রিত কর। যেমন ব্যভিচারীকে ব্যভিচারীর সাথে, সুদখোরকে সুদখোরের সাথে, মদ্যপায়ীকে মদ্যপায়ীর সাথে ইত্যাদি। একটি উক্তি এও আছে যে, এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ যালিমদেরকে ও তাদের স্ত্রীদেরকে একত্রিত কর। কিন্তু এটা খুবই দুর্বল উক্তি। সঠিক ভাবার্থ এটাই তাদের অনুরূপ লোকদেরকে এবং তাদের সাথে তাদের উপাস্যদেরকে একত্রিত কর যাদেরকে আল্লাহর শরীক হিসেবে গ্রহণ করেছিল। অতঃপর তাদেরকে জাহান্নামের পথে পরিচালিত কর। যেমন আল্লাহ তা'আলা অন্য জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি তাদেরকে কিয়ামতের দিন মুখের ভরে অন্ধ, মূক ও বধির করে একত্রিত করবো। তাদের আশ্রয়স্থল হবে জাহান্নাম, যার আগুন যখনই কিছুটা হালকা হবে তখনই আমি ঐ আগুনকে আরো বেশী প্রজ্বলিত করে দিবো।”(১৭:৯৭) আল্লাহ তা'আলা ফেরেশতাদেরকে আরো বলবেনঃ তাদেরকে জাহান্নামের নিকট কিছু সময়ের জন্যে দণ্ডায়মান রাখো। কেননা, আমি তাদেরকে কিছু প্রশ্ন করবো এবং তাদের হিসাব নিবো।হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে কোন জিনিসের দিকে ডাকবে, কিয়ামতের দিন তাকে তারই সাথে খাড়া করা হবে, বিশ্বাসঘাতকতাও হবে না এবং বিচ্ছিন্নতাও হবে না, যদিও একজন লোক একজন লোককেও ডেকে থাকে।” অতঃপর তিনি (আরবী)-এ আয়াতটি পাঠ করেন। (এ হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন) হযরত উসমান ইবনে যায়েদাহ (রাঃ) বলেন যে, মানুষকে সর্বপ্রথম তার সঙ্গীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তারপর তাকে প্রশ্ন করা হবেঃ আজ কেন একে অপরকে সাহায্য করছো না? অথচ তোমরা দুনিয়ায় বলে বেড়াতে আমরা সবাই একত্রে রয়েছি এবং আমরা পরস্পরকে সাহায্য করবো? কিন্তু আজ তো তারা অস্ত্র-শস্ত্র ফেলে দিয়ে আল্লাহ্ তা'আলার নিকট আত্মসমর্পণ করেছে। না আজ তারা তার কোন বিরুদ্ধাচরণ করবে, না তারা তাঁর আযাব থেকে বাঁচতে পারবে, না পালাতে পারবে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।