ثُمَّ
اَنْتُمْ
هٰۤؤُلَآءِ
تَقْتُلُوْنَ
اَنْفُسَكُمْ
وَتُخْرِجُوْنَ
فَرِیْقًا
مِّنْكُمْ
مِّنْ
دِیَارِهِمْ ؗ
تَظٰهَرُوْنَ
عَلَیْهِمْ
بِالْاِثْمِ
وَالْعُدْوَانِ ؕ
وَاِنْ
یَّاْتُوْكُمْ
اُسٰرٰی
تُفٰدُوْهُمْ
وَهُوَ
مُحَرَّمٌ
عَلَیْكُمْ
اِخْرَاجُهُمْ ؕ
اَفَتُؤْمِنُوْنَ
بِبَعْضِ
الْكِتٰبِ
وَتَكْفُرُوْنَ
بِبَعْضٍ ۚ
فَمَا
جَزَآءُ
مَنْ
یَّفْعَلُ
ذٰلِكَ
مِنْكُمْ
اِلَّا
خِزْیٌ
فِی
الْحَیٰوةِ
الدُّنْیَا ۚ
وَیَوْمَ
الْقِیٰمَةِ
یُرَدُّوْنَ
اِلٰۤی
اَشَدِّ
الْعَذَابِ ؕ
وَمَا
اللّٰهُ
بِغَافِلٍ
عَمَّا
تَعْمَلُوْنَ
۟
3

তারপর তোমরাই তারা, যারা নিজেদের কে হত্যা করছো এবং তোমাদের এক দলকে তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করছ। তোমরা একে অন্যের সহযোগীতা করছ তাদের উপর অন্যায় ও সীমালঙ্ঘন দ্বারা। আর তারা যখন বন্দীরুপে তোমাদের কাছে উপস্থিত হয় তখন তোমরা মুক্তিপণ দাও [১] ; অথচ তাদের কে বহিষ্কার করাই তোমাদের উপর হারাম ছিলো। তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশে ঈমান আনো এবং কিছু অংশে কুফরী করো ? তাহলে তোমাদের যারা এরুপ করে তাদের একমাত্র প্রতিফল দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ও অপমান এবং কেয়ামতের দিন তাদের কে ফিরিয়ে নেয়া হবে কঠিনতম শাস্তির দিকে। আর তারা যা করে আল্লাহ্‌ সে সম্পর্কে গাফিল নন।

[১] ইসরাঈল-বংশধরকে তিনটি নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। প্রথমতঃ খুনোখুনী না করা, দ্বিতীয়তঃ বহিস্কার অর্থাৎ দেশ ত্যাগে বাধ্য না করা এবং তৃতীয়তঃ স্বগোত্রের কেউ কারো হাতে বন্দী হলে অর্থের বিনিময়ে তাকে মুক্ত করা। কিন্তু তারা প্রথমোক্ত দুটি নির্দেশ অমান্য করে তৃতীয় নির্দেশ পালনে বিশেষ তৎপর ছিল ঘটনার বিবরণ এরূপঃ মদীনাবাসীদের মধ্যে ‘আউস' ও ‘খাযরাজ’ নামে দুটি গোত্রের মধ্যে শক্রতা লেগেই থাকত। মাঝে মাঝে যুদ্ধও বাধত। মদীনার আশেপাশে ইয়াহুদীদের দুটি গোত্র ‘বনী-কুরাইযা’ ও ‘বনী-নাদীর’ বসবাস করত। আউস গোত্র ছিল বনী-কুরাইযার মিত্র এবং খাযরাজ ছিল বনী-নাদীরের মিত্র। আউস ও খাযরাজের মধ্যে যুদ্ধ আরম্ভ হলে মিত্রতার ভিত্তিতে বনী-কুরাইযা সাহায্য করত এবং নাযীর খাযরাজের পক্ষ অবলম্বন করত। যুদ্ধে আউস ও খাযরাজের যেমন লোকক্ষয় ও ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত হত, তাদের মিত্র বনী-নাদীরেরও তেমনি হত। বনী কুরাইযাকে হত্যা ও বহিস্কারের ব্যাপারে শক্ৰ পক্ষের মিত্র বনী-নাদীরেরও হাত থাকত। তেমনি নাদীরের হত্যা ও বাস্তুভিটা থেকে উৎখাত করার কাজে শক্র পক্ষের মিত্র বনী-কুরাইযারও হাত থাকত। তবে তাদের একটি আচরণ ছিল অদ্ভুত ৷ ইয়াহুদীদের দুই দলের কেউ আউস অথবা খাযরাজের হাতে বন্দী হয়ে গেলে প্রতিপক্ষীয় দলের ইয়াহুদী স্বীয় মিত্রদের অর্থে বন্দীকে মুক্ত করে দিত। কেউ এর কারণ জিজ্ঞেস করলে বলতঃ বন্দীকে মুক্ত করা আমাদের উপর ওয়াজিব। পক্ষান্তরে যুদ্ধে সাহায্য করার ব্যাপারে কেউ আপত্তি করলে তারা বলতঃ কি করব, মিত্রদের সাহায্যে এগিয়ে না আসা লজ্জার ব্যাপার। আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ্‌ তাদের এ আচরণেরই নিন্দা করেছেন এবং তাদের এ অপকৌশলের মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছেন। [ইবনে কাসীর]