হে আমাদের সম্প্রদায়! আল্লাহর দিকে আহবানকারীর আহবানে সাড়া দাও এবং তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর,[১] আল্লাহ তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হতে তোমাদেরকে রক্ষা করবেন। [২]
[১] এখানে জ্বিনরা তাদের জাতিকে নবী করীম (সাঃ)-এর নবুঅতের উপর ঈমান আনার দাওয়াত দেয়। এর পূর্বের আয়াতে কুরআন কারীম সম্পর্কে বলে যে, এটি তাওরাতের পর আরও একটি আসমানী কিতাব যা সঠিক ধর্ম এবং সরল ও সোজা পথের নির্দেশনা দেয়।
[২] এখানে ঈমান আনার দু'টি উপকারিতার কথা বলা হয়েছে, যা তারা পরকালে লাভ করবে। مِنْ ذُنُوْبِكُمْ এ من অক্ষরটি 'তাবঈয' তথা আংশিক অর্থ দেওয়ার জন্যে ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ কিছু পাপ ক্ষমা করে দেবেন। আর এগুলো হবে এমন সব পাপ, যার সম্পর্ক হবে আল্লাহর অধিকারের সাথে। কারণ, বান্দার অধিকার (বান্দা ক্ষমা না করলে) ক্ষমা করা হয় না। এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, প্রতিদান ও শাস্তি এবং আদেশ ও নিষেধাবলীর ব্যাপারে জ্বিনদের বিধানও মানুষদের মতনই। এ ব্যাপারে উলামাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে যে, মহান আল্লাহ জ্বিনদের মধ্য হতে তাদের জন্য কোন নবী প্রেরণ করেছিলেন, না করেননি? কুরআনের কিছু আয়াতের বাহ্যিক অর্থ থেকে প্রমাণিত হয় যে, জ্বিনদের মধ্যে কেউ নবী হয়নি। সমস্ত নবী ও রসূল মানুষদের মধ্য হতেই হয়েছেন। {وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ} (النحل: ৪৩) {وَمَا أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ المُرْسَلِينَ إِلَّا إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُونَ الطَّعَامَ وَيَمْشُونَ فِي الْأَسْوَاقِ} (الفرقان: ২০) কুরআনের এই আয়াতগুলো থেকে এ কথা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, যত জনই রসূল হয়েছেন, সকলেই মানুষ ছিলেন। এই জন্য রসূল (সাঃ) যেমন মানুষদের জন্য রসূল ছিলেন এবং আছেন, অনুরূপ জ্বিনদের রসূলও তিনিই। আর তাঁর পয়গামকে জ্বিনদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। যেমন, কুরআনের আলোচ্য আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয়।