হে লোক সকল! একটি উপমা দেওয়া হচ্ছে, তোমরা মনোযোগ সহকারে তা শ্রবণ কর; তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো, তারা তো কখনো একটি মাছিও সৃষ্টি করতে পারে না, যদিও তারা এই উদ্দেশ্যে সবাই একত্রিত হয়।[১] আর মাছি যদি তাদের নিকট হতে কিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায়, তাহলে সেটাও তারা ওর নিকট হতে উদ্ধার করতে পারে না; [২] পূজারী ও দেবতা কতই না দুর্বল। [৩]
[১] অর্থাৎ, এই সব বাতিল উপাস্যরা যাদেরকে তোমরা আল্লাহ ব্যতীত সাহায্যের জন্য আহবান কর, এরা সকলে সম্মিলিত হয়ে একটি সামান্য ছোট মাছি সৃষ্টি করতে চাইলে তাও তারা পারবে না। এ সত্ত্বেও যদি তোমরা তাদেরকে নিজেদের অভাব-অভিযোগ দূর করার মালিক মনে কর, তাহলে তোমাদের জ্ঞানের অবস্থা সত্যিই শোচনীয়। এখান হতে পরিষ্কার হয় যে, আল্লাহ ছাড়া যাদের ইবাদত করা হত তারা শুধুমাত্র পাথরের প্রাণহীন প্রতিমাই ছিল না; (যেমন বর্তমানের কবরপূজারীরা বলে থাকে) বরং তারা ছিল জ্ঞানের অধিকারী। অর্থাৎ, তারা আল্লাহর নেক বান্দা ছিল, যাদের মৃত্যুর পর মানুষ তাদেরকে (মূর্তি বানিয়ে) আল্লাহর অংশীদার বানিয়ে নিয়েছিল। সেই জন্য মহান আল্লাহ বলেছেন, 'এরা সকলে একত্রিত হলেও একটি সামান্য মাছি পর্যন্ত সৃষ্টি করায় সক্ষম নয়।' এই চ্যালেঞ্জ কেবলমাত্র পাথরের প্রাণহীন মূর্তিদেরকে দেওয়া যেতে পারে না।
[২] এখানে তাদের অধিক অক্ষমতা ও অসহায়তার কথা প্রকাশ পেয়েছে। আর তা এই যে, সৃষ্টি করা তো দূরের কথা; তাদের নিকট হতে মাছির ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া খাবারটুকুও উদ্ধার করার ক্ষমতা পর্যন্ত তারা রাখে না।
[৩] طالب বলতে মনগড়া দেবতা আর مطلوب বলতে মাছিকে বুঝানো হয়েছে। আবার অনেকের নিকট طالب বলতে পূজারী ও مطلوب বলতে দেবতাকে বুঝানো হয়েছে। হাদীসে কুদসীতে বাতিল উপাস্যদের অক্ষমতার কথা এইভাবে বর্ণিত হয়েছে, মহান আল্লাহ বলেন, "তার চাইতে বড় অত্যাচারী কে হতে পারে, যে আমার (সৃষ্টি করার) মত সৃষ্টি করতে চায়। যদি সত্যিকারে কারো মধ্যে এ শক্তি থাকে, তাহলে সে যেন একটি পিঁপড়ে বা একটি যব সৃষ্টি করে দেখাক।" (বুখারীঃ লেবাস অধ্যায়)