Je leest een tafsir voor de groep verzen 5:94tot 5:95
يا ايها الذين امنوا ليبلونكم الله بشيء من الصيد تناله ايديكم ورماحكم ليعلم الله من يخافه بالغيب فمن اعتدى بعد ذالك فله عذاب اليم ٩٤ يا ايها الذين امنوا لا تقتلوا الصيد وانتم حرم ومن قتله منكم متعمدا فجزاء مثل ما قتل من النعم يحكم به ذوا عدل منكم هديا بالغ الكعبة او كفارة طعام مساكين او عدل ذالك صياما ليذوق وبال امره عفا الله عما سلف ومن عاد فينتقم الله منه والله عزيز ذو انتقام ٩٥
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَيَبْلُوَنَّكُمُ ٱللَّهُ بِشَىْءٍۢ مِّنَ ٱلصَّيْدِ تَنَالُهُۥٓ أَيْدِيكُمْ وَرِمَاحُكُمْ لِيَعْلَمَ ٱللَّهُ مَن يَخَافُهُۥ بِٱلْغَيْبِ ۚ فَمَنِ ٱعْتَدَىٰ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَلَهُۥ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ ٩٤ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تَقْتُلُوا۟ ٱلصَّيْدَ وَأَنتُمْ حُرُمٌۭ ۚ وَمَن قَتَلَهُۥ مِنكُم مُّتَعَمِّدًۭا فَجَزَآءٌۭ مِّثْلُ مَا قَتَلَ مِنَ ٱلنَّعَمِ يَحْكُمُ بِهِۦ ذَوَا عَدْلٍۢ مِّنكُمْ هَدْيًۢا بَـٰلِغَ ٱلْكَعْبَةِ أَوْ كَفَّـٰرَةٌۭ طَعَامُ مَسَـٰكِينَ أَوْ عَدْلُ ذَٰلِكَ صِيَامًۭا لِّيَذُوقَ وَبَالَ أَمْرِهِۦ ۗ عَفَا ٱللَّهُ عَمَّا سَلَفَ ۚ وَمَنْ عَادَ فَيَنتَقِمُ ٱللَّهُ مِنْهُ ۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌۭ ذُو ٱنتِقَامٍ ٩٥
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

৯৪-৯৫ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, (আরবী) আয়াতের ভাবার্থ হচ্ছে- আল্লাহ তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান যে, শিকার দুর্বল হোক বা ছোট হোক, তোমরা ইহরামের অবস্থায় শিকার করা থেকে বিরত থাকছে কি-না। এমনকি যদি লোকেরা চায় তবে সেই শিকারকে হাতে ধরে নিতে পারে, তাই তাদেরকে তার নিকটবর্তী হতেও আল্লাহ পাক নিষেধ করলেন। মুজাহিদ বলেন যে, (আরবী) দ্বারা ছোট ও বাচ্চা শিকারকে বুঝানো হয়েছে। (আরবী) দ্বারা বুঝানো হয়েছে বড় শিকার। মূকাতিল ইবনে হাইয়ান (রঃ) বলেন যে, মুসলমানরা যখন উমরা পালনের উদ্দেশ্যে হুদায়বিয়ায় অবস্থান করছিলেন সে সময় এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। সেখানে বন্য চতুষ্পদ জন্তু, পাখী এবং অন্যান্য শিকার তাদের অবস্থান স্থলে জমা হয়ে গিয়েছিল। এরূপ দৃশ্য তাঁরা ইতিপূর্বে দেখেননি। সুতরাং ইহরামের অবস্থায় তাদেরকে শিকার করতে নিষেধ করা হয়, যাতে আল্লাহ তা'আলা জানতে পারেন যে, কে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করছে এবং কে করছে না। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ নিশ্চয়ই যারা তাদের প্রতিপালককে না দেখেই ভয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও বড় পুরস্কার।'(৬৭:১২) এখন আল্লাহ তা'আলা বলেন যে, এরপরে যারা নাফরমানী করবে তাদের জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। কেননা, সে মহান আল্লাহর হুকুমের বিরোধিতা করলো।(আরবী) -এ নিষেধাজ্ঞা অর্থের দিক দিয়ে ধরা হলে হালাল জন্তু, ওর বাচ্চা এবং হারাম প্রাণীগুলোও এর অন্তর্ভুক্ত হবে। কিন্তু ইমাম শাফিঈ (রঃ)-এর মতে যেসব শিকারের মাংস হালাল নয় সেগুলো শিকার করা ইহরামের অবস্থায় জায়েয। তবে জমহুর উলামার মতে এ ধরনের শিকারও ইহরামের অবস্থায় জায়েয নয়। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীস দ্বারা যে প্রাণীগুলোকে সর্বাবস্থায় হত্যা করার বৈধতা সাব্যস্ত আছে, সেগুলো ছাড়া জমহুর উলামা কোন প্রাণীকেই ইহরামের অবস্থায় শিকার করা হারামকৃত প্রাণীগুলোর বহির্ভূত মনে করেন না। হাদীসটি নিম্নরূপঃউম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “পাঁচটি ফাসিক (প্রাণী)-কে হালাল ও হারাম সর্বাবস্থায় হত্যা করা যায়। ঐ পাঁচটি হচ্ছে-- কাক, চিল, বিচ্ছু, ইদুর এবং কামড়িয়ে নেয় এমন কুকুর।” ইমাম মালিক (রঃ) হযরত নাফে’ (রাঃ) ও হযরত ইবনে উমার (রাঃ)-এর মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “পাঁচটি বিচরণকারীকে হত্যা করা মুহরিমের জন্যে কোন অপরাধমূলক কাজ নয়। সেগুলো হচ্ছে- কাক, চিল, বিচ্ছু, ইঁদুর এবং কামড়িয়ে নেয় এ ধরনের কুকুর।” আইউব (রঃ) বলেন, আমি নাফে' (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, সাপের হুকুম কি? তিনি উত্তরে বললেনঃ সাপকে হত্যা করার ব্যাপারে তো কোন সন্দেহই নেই এবং আলেমদের মধ্যে এ ব্যাপারে কোন মতভেদও সৃষ্টি হয়নি।' ইমাম মালিক (রঃ), ইমাম আহমাদ (রঃ) প্রমুখ আলেমগণ কামড়িয়ে নেয় এরূপ কুকুরের সাথে নেকড়ে বাঘ, হিংস্র জন্তু এবং চিতা বাঘকেও সামিল করেছেন। কেননা, এগুলো তো কুকুর অপেক্ষাও ক্ষতিকারক। আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম (রঃ) এবং হযরত সুফইয়ান সওরী (রঃ) বলেন যে, প্রত্যেক হামলাকারী হিংস্র জন্তুর হুকুম কুকুরের হুকুমেরই অন্তর্ভুক্ত। এর সমর্থন এই হাদীসে পাওয়া যায় যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) উৎবা ইবনে আবি লাহাবের উপর দু'আ করতে গিয়ে বলেনঃ “হে আল্লাহ! সিরিয়ায় তার উপর আপনি আপনার এক কুকুরকে কর্তৃত্ব দান করুন!” তখন যারকা’ নামক স্থানে একটি নেকড়ে বাঘ তাকে খেয়ে ফেলে।(আরবী) জমহুরের উক্তি এই যে, কাফফারা আদায় করার ব্যাপারে ইচ্ছাপূর্বক ও ভুলবশতঃ হত্যাকারী উভয়েই সমান। ইমাম যুহরী (রঃ) বলেন যে, কুরআন কারীম দ্বারা শুধু ইচ্ছাপূর্বক হত্যাকারীর উপর কাফফারা ওয়াজিব হওয়া প্রমাণিত হয় বটে, কিন্তু হাদীস দ্বারা ভুলবশতঃ হত্যাকারীর উপরও কাফফারা ওয়াজিব হওয়া প্রমাণিত হয়ে যায়। ভাবার্থ হলো এই যে, কুরআন কারীম দ্বারা ইচ্ছাপূর্বক হত্যাকারীর উপর যেমন কাফফারা ওয়াজিব হওয়া সাব্যস্ত হলো, তেমনিভাবে তার গুনাহগার হওয়াও সাব্যস্ত হলো। যেমন আল্লাহ্ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যেন সে তার পাপের শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করে, তবে যা অতীত হয়েছে তা আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন, আর যে ব্যক্তি পুনরায় সেই কাজ করবে, আল্লাহ তার উপর প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন।” আহকামে নবভী (সঃ) এবং আহকামে আসহাব দ্বারাও এর সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে যে, ভুলবশতঃ হত্যা করার অবস্থাতেও কাফফারা দিতে হবে, যেমন ইচ্ছাপূর্বক হত্যা করলে কুরআন কারীমের নির্দেশ অনুযায়ী কাফফারা দিতে হয়। কেননা, যদি শিকারকে হত্যা করা হয় তবে তাকে নষ্ট করা হলো। আর যখন ইচ্ছাপূর্বক নষ্ট করবে তখন তাকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হয়, দ্রুপ ভুলবশতঃ নষ্ট করলেও এটাই হুকুম। পার্থক্য শুধু এইটুকু যে, ইচ্ছাপূর্বক শিকারকারী কাফফারার সাথে গুনাহগারও হয়, কিন্তু ভুলবশতঃ শিকারকারী গুনাহগার হয় না।(আরবী) কেউ কেউ (আরবী) শব্দটিকে (আরবী) পড়েছেন, আবার কেউ কেউ -এর সাথে পড়েছেন। হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) (আরবী) পড়েছেন। কিন্তু যেভাবেই পড়া হোক না কেন, ইমাম মালিক (রঃ), ইমাম শাফিঈ (রঃ), ইমাম আহমাদ (রঃ) এবং জমহুরের দলীল সর্বাবস্থাতেই কায়েম থাকছে যে, শিকারকৃত জন্তুর অনুরূপ বিনিময় ওয়াজিব হবে। যদি ওরই অনুরূপ বা প্রায় অনুরূপ কোন গৃহপালিত পশু পাওয়া যায় তবে ওটাই দিতে হবে, অন্যথায় ওর মূল্য দিতে হবে। কিন্তু ইমাম আবু হানীফা (রঃ)-এর এতে মতানৈক্য রয়েছে। তাঁর মতে শিকারকৃত জন্তুর গৃহপালিত জন্তুর সাথে সাদৃশ্য থাক বা না-ই থাক, সর্বাবস্থাতেই ওর মূল্য দিতে হবে।(আরবী) অর্থাৎ এ কাফফারার ফায়সালা করবেন মুসলমানদের মধ্য হতে দু’জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি, যারা এ ফায়সালা করবেন যে, সাদৃশ্যযুক্ত জন্তু শিকারের বেলায় সাদৃশ্যযুক্ত জন্তু দিতে হবে কিংবা সাদৃশ্যহীন জন্তু শিকারের বেলায় মূল্য দিতে হবে। আলেমদের মধ্যে মতানৈক্য শুধু এ ব্যাপারে রয়েছে যে, ঐ দুই মীমাংসাকারীর মধ্যে একজন স্বয়ং শিকারী হতে পারেন কি না? এই ব্যাপারে দু'টি উক্তি রয়েছে। একটি উক্তি এই যে, স্বয়ং শিকারী মীমাংসাকারী হতে পারেন না। এটাই হচ্ছে ইমাম মালিকের মাযহাব। দ্বিতীয় উক্তি এই যে, স্বয়ং শিকারী মীমাংসাকারী হতে পারেন। কেননা আয়াতটি আম বা সাধারণ। আর এটা হচ্ছে ইমাম শাফিঈ (রঃ) ও ইমাম আহমাদ (রঃ)-এর মাযহাব। ইবনে আবি হাতিম (রঃ) মায়মুন ইবনে মাহরান (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, এক বেদুঈন হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর নিকট এসে বললোঃ “আমি ইহরামের অবস্থায় একটি শিকারকে হত্যা করেছি। সুতরাং আপনার মতে আমাকে এর কি বিনিময় দিতে হবে?” তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) তাঁর পাশে উপবিষ্ট হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ)-কে বললেন, “তোমার নিকট এর ফায়সালা কি?” বর্ণনাকারী বলেন যে, তখন "ঐ বেদুঈন বললোঃ “আমি এসেছি আপনার নিকট। আর আপনি হচ্ছেন মুসলমানদের খলীফা। আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করলাম, আর আপনি জিজ্ঞেস করছেন অন্যকে?” তখন আবূ বকর (রাঃ) তাকে বললেন, তুমি আপত্তি করছো কেন? আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তোমাদের মধ্যে দুজন। ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি যেন এর ফায়সালা করে।” সুতরাং আমি আমার সঙ্গীর সাথে পরামর্শ করলাম। আমরা দুজন যে ফায়সালার উপর একমত হবো, তোমাকে আমি সেই ফায়সালা শুনিয়ে দেবো।” (ইবনে কাসীর (রঃ) বলেন যে, এটা খুবই উত্তম ইসনাদ। কিন্তু মায়মূন (রাঃ) ও আবু বকর (রাঃ)-এর মধ্যে (আরবী) রয়েছে) এখানে এটারই সম্ভাবনা ছিল। যেহেতু, হযরত সিদ্দীকে আকবর (রাঃ) যখন দেখলেন যে, বেদুঈন মূখ এবং দুই ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির মাসআলা অবহিত নয়, তাই নম্রতার সাথে তাকে বুঝিয়ে দিলেন। কেননা মূর্খতার ওষুধ হচ্ছে শিক্ষাদান।ইবনে জারীর বাজলী (রঃ) বলেন, ইহরামের অবস্থায় আমি একটি হরিণ শিকার করি। হযরত উমার (রাঃ)-এর নিকট আমি তা বর্ণনা করলে তিনি বলেন, “তুমি দু’জন সঙ্গীকে নিয়ে আস যারা তোমার এ কাজের ফায়সালা করবেন।” আমি তখন আব্দুর রহমান (রাঃ) ও সা’দ (রাঃ)-কে নিয়ে আসলাম। তারা দু'জন ফায়সালা করলেন যে, আমাকে একটা হৃষ্টপুষ্ট ছাগ ফিদ্ইয়া স্বরূপ দিতে হবে। এ ব্যাপারেও আলেমদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে যে, যদি পরবর্তী যুগেও কোন অপরাধীর মধ্যে এই অপরাধ প্রকাশ পায় তবে কি সেই সময়েরই দু'জন ফায়সালাকারীর প্রয়োজন হয়, না এরূপ মাসআলায় সাহাবীদের যে ফায়সালা ছিল ওরই আলোকে ফতওয়া দেয়া যেতে পারে? এতে দু’টি উক্তি রয়েছে। ইমাম আহমাদ (রঃ) ও ইমাম শাফিঈ (রঃ) বলেন যে, সাহাবীগণ এ ব্যাপারে যে ফায়সালা দিয়েছিলেন তারই অনুসরণ করতে হবে, ফায়সালাকারী দু’জন সাহাবীর ফায়সালার বৈপরীত্ব করা চলবে না। আর যেখানে সাহাবীদের কোন ফায়সালা বিদ্যমান নেই, সেখানে সেই যুগেরই দু’জন ন্যায়পরায়ণ ফায়সালাকারীর ফায়সালা কার্যকরী হবে। কিন্তু ইমাম মালিক (রঃ) ও ইমাম আবু হানীফা (রঃ) বলেন যে, প্রত্যেক যুগের ফায়সালা পৃথক পৃথক হবে এবং প্রত্যেক যামানায় সেই যামানারই দু’জন ন্যায়পরায়ণ ফায়সালাকারী নির্ধারণ করতে হবে, সেখানে সাহাবীদের ফায়সালা বিদ্যমান থাক আর নই থাক। কেননা, আল্লাহ তাআলা (আরবী) অর্থাৎ “তোমাদের মধ্য হতে’ শব্দ ব্যবহার করেছেন।(আরবী) অর্থাৎ এ কুরবানী কা'বা পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে। সেখানেই ওটা জবেহ করতে হবে এবং হারাম শরীফের মিসকীনদের মধ্যে ওর গোশত বন্টন করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনই মতভেদ নেই, বরং সবাই এতে একমত।(আরবী) অর্থাৎ মুহরিম ব্যক্তি যদি নিহত শিকারের অনুরূপ জিনিস না পায় অথবা নিহত জন্তু এমন শ্রেণীর জন্তুই না হয় যে, গৃহপালিত জন্তুর মধ্যে ওর সাদৃশ্য থাকতে পারে, তবে বিনিময়, খাদ্য খাওয়ানো এবং রোযা রাখার ব্যাপারে যে কোন একটি পালন করার ইখতিয়ার বা স্বাধীনতা রয়েছে। কুরআনে কারীমে (আরবী) শব্দটি ইখতিয়ারের অর্থেই এসেছে। ইমাম মালিক (রঃ), ইমাম আবু হানীফা (রঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রঃ) এবং ইমাম মুহাম্মাদ (রঃ)-এর এটাই উক্তি। ইমাম শাফিঈ (রঃ)-এরও একটি উক্তি এটাই আছে। ইমাম আহমাদ (রঃ)-এরও প্রসিদ্ধ উক্তি এটাই যে, (আরবী) শব্দটি ইখতিয়ারের উদ্দেশ্যেই আনা হয়েছে। অন্য একটি উক্তি এই যে, (আরবী) শব্দটি ইখতিয়ারের উদ্দেশ্যে আনা হয়নি, বরং ক্রমিক হিসেবে আনা হয়েছে। আর এর রূপ এই যে, মূল্যের সমান হলেই থেমে যেতে হবে এবং এতেই নিহত শিকারের ক্ষতিপূরণ হয়ে যাবে। এটাই ইমাম মালিক (রঃ), ইমাম আবু হানীফা (রঃ), হাম্মাদ (রঃ) এবং ইমরাহীম (রঃ)-এর মত। কিন্তু ইমাম শাফিঈ (রঃ) বলেন যে, এ মূল্য ঐ জানোয়ারের বিনিময় রূপ হবে যে, যদি ওটা বিদ্যমান থাকতো ।তবে এটাই ওর মূল্য হতো। অতঃপর এ অর্থ দ্বারা খাদ্য ক্রয় করে সাদকা করে দিতে হবে এবং প্রত্যেক মিসকীনকে এক মুদ' অর্থাৎ ৫৬ তোলা খাবার দিতে হবে। এটা হচ্ছে ইমাম শাফিঈ (রঃ), ইমাম মালিক (রঃ) এবং হেজাযবাসী আলেমদের মাসআলা। আর ইমাম আবু হানীফা (রঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রঃ), ইমাম মুহাম্মাদ (রঃ) প্রমুখ মনীষীগণ বলেন যে, প্রত্যেক মিসকীনকে দুই মুদ' করে আহার্য দিতে হবে। ইমাম আহমাদ (রঃ) বলেন যে, গম হলে এক ‘মুদ' এবং অন্য কোন জিনিস হলে দুই ‘মুদ’ দিতে হবে। যদি এটা দিতে অপারগ হয় তবে রোযা রাখতে হবে। অর্থাৎ মিসকীনকে যে কয়েকদিন খানা খাওয়াতে হয়, ততদিন রোযা রাখতে হবে।এখন এ খানা কোথায় খাওয়াতে হবে এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। ইমাম শাফিঈ (রঃ) বলেন, এ খানা হারাম শরীফে খাওয়াতে হবে। আতা’রও এটাই উক্তি। ইমাম মালিক (রঃ) বলেন, যে স্থানে শিকারকে হত্যা করা হয়েছে। সেখানেই বা ওরই নিকটবর্তী কোন এক স্থানে এ খানা খাওয়াতে হবে। ইমাম। আবু হানীফা (রঃ) বলেন যে, এ খানা খাওয়াবার জন্যে কোন স্থান নির্দিষ্ট নেই। সেটা হারাম শরীফেই হোক বা অন্য কোন জায়গাই হোক, সব জায়গাতেই খাওয়ানো চলবে।(আরবী) যেন সে তার দুষ্কর্মের শাস্তি গ্রহণ করে। অর্থাৎ আল্লাহ পাক বলেনঃ আমি তার উপর কাফফারা এ জন্যেই ওয়াজিব করেছি যে, যেন সে আমার হুকুমের বিরোধিতার শাস্তি ভোগ করে। কিন্তু অজ্ঞতার যুগে তার দ্বারা যা কিছু সাধিত হয়েছিল তা আমি ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবো। কেননা, সে ইসলাম গ্রহণের পর ভাল কাজ করেছে। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ ইসলাম গ্রহণের পর এর নিষিদ্ধতা সত্ত্বেও যে আল্লাহর নাফরমানী করতঃ ওটা করে বসবে, আল্লাহ তার থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন। তিনি বিরুদ্ধচারীদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী। তবে অজ্ঞতার যুগে যা কিছু হয়েছে তা তিনি ক্ষমা করবেন। আবার এ প্রশ্নের উত্তর না বাচক হবে যে, ইসলামের ইমাম কি এর কোন শাস্তি দিতে পারেন? অর্থাৎ ইমামের শাস্তি প্রদানের কোন অধিকার নেই। এ গুনাহ হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর বান্দাদের মধ্যকার ব্যাপার। হ্যা, তবে ইমামের তাকে শাস্তি দেয়ার অধিকার না থাকা সত্ত্বেও ফিদইয়া তাকে অবশ্যই আদায় করতে হবে। এটা ইবনে জারীর (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এর ভাবার্থ এই যে, আল্লাহ তা'আলা কাফফারার মাধ্যমেই প্রতিশোধ নিয়ে নেবেন এবং প্রতিশোধ গ্রহণের রূপ এটাই হবে।পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুরুজনবৃন্দ এর উপর একমত যে, মুহরিম যখন শিকারকে হত্যা করে ফেললো তখন তার উপর ফিদইয়া ওয়াজিব হয়ে গেল। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভুলের মধ্যে কোন পর্থক্য নেই, ভুল যতবারই হোক না কেন। ভুলবশতঃ কাজ এবং ইচ্ছাপূর্বক কাজ হুকুমের দিক দিয়ে সব সমান। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, মুহরিমের দ্বারা যদি ভুলবশতঃ শিকারের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় তবে তার উপর প্রতিবারের হত্যার সময়েই এ হুকুম প্রযোজ্য হবে। কিন্তু যদি ইচ্ছাপূর্বক সে এই কাজ করে তবে প্রথমবারে তো তার উপর এ হুকুম প্রযোজ্য হবে, কিন্তু দ্বিতীয়বার তার দ্বারা এ কার্য সংঘটিত হলে তাকে বলা হবে- “আল্লাহ স্বয়ং তোমার এ কাজের প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন।” (শুরাইহ্ (রঃ), মুজাহিদ (রঃ), সাঈদ ইবনে জুবাইর (রঃ) এবং হাসান বসরীও (রঃ) এ উক্তিই করেছেন। ইবনে জারীর (রঃ) প্রথম উক্তিটি পছন্দ করেছেন)(আরবী) অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর সাম্রাজ্যে প্রবল পরাক্রান্ত, মহা বিজয়ী। কেউ তাঁকে তাঁর কাজে বাধা দিতে পারে না। তিনি প্রতিশোধ গ্রহণ করতে চাইলে কে এমন আছে যে, তার এ কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে? সারা জগত তাঁরই সৃষ্ট। সুতরাং এখানে হুকুম শুধু তারই চলবে। বিরুদ্ধাচারীদেরকে তিনি শাস্তি অবশ্যই দেবেন।