আর তোমরা যখন নামাযের জন্য আহবান কর, তখন তারা ওকে হাসি-তামাসা ও ক্রীড়ার বস্তুরূপে গ্রহণ করে।[১] কেননা তারা এক নির্বোধ জাতি।
[১] হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, শয়তান আযানের শব্দ শোনামাত্রই পাদতে পাদতে পলায়ন করে। তারপর আযান শেষ হওয়ার পর পুনরায় আসে এবং তাকবীর শুনে আবার পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে। আর তাকবীর শেষে পুনরায় এসে যায় এবং নামাযীদের অন্তরে কুমন্ত্রণা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। (বুখারীঃ আযান অধ্যায় ও মুসলিমঃ নামায অধ্যায়) অনুরূপভাবে শয়তানের অনুসারীদেরকেও আযানের শব্দাবলী শুনতে ভালো লাগে না। যার জন্য তারা এ ব্যাপারে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। এই আয়াত হতে এটাও প্রমাণিত হয় যে, রসূল (সাঃ)-এর হাদীসও দ্বীনের মূল উৎস এবং অকাট্যপ্রমাণ স্বরূপ। কেননা কুরআনে নামাযের জন্য আযানের কথা উল্লেখ হয়েছে কিন্তু এই আযান কেমন করে দেওয়া হবে? তার শব্দাবলী কি হবে? এটা কুরআনে কোথাও উল্লেখ হয়নি বরং এটা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, যা তার দ্বীনের মূল উৎস হওয়ার ব্যাপারে অকাট্য প্রমাণ। হাদীস দ্বীনের অকাট্য প্রমাণ, মূল উৎস ও শরয়ী বিধান হওয়ার ভাবার্থ হচ্ছে, যেরূপে কুরআনের উক্তি দ্বারা প্রমাণিত বিধান ও ফরযসমূহ পালন করা জরুরী ও অপরিহার্য এবং তা পরিত্যাগ করা কুফরী, অনুরূপ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত বিধান ও ফরযসমূহ পালন করা জরুরী ও অপরিহার্য এবং তা পরিত্যাগ করা কুফরী। কিন্তু শর্ত হচ্ছে, হাদীসকে সহীহ সনদে, নবী (সাঃ) থেকে অবিছিন্ন সূত্রে বর্ণিত হওয়া জরুরী। আর সহীহ হাদীস চাহে তা খবরে ওয়াহেদ (একটি মাত্র বর্ণনাকারী দ্বারা বর্ণিত) হোক অথবা মুতাওয়াতির (বহু বর্ণনাকারী দ্বারা বর্ণিত) হোক, নবী (সাঃ)-এর কথা হোক অথবা কর্ম অথবা মৌনসম্মতি হোক, সকল শ্রেণীর হাদীসের উপর আমল করা অপরিহার্য। হাদীসকে 'খবরে ওয়াহেদ' আখ্যা দিয়ে কিংবা কুরআনের উপর অতিরিক্ত মনে করে কিংবা উলামাদের ইজতিহাদ ও কিয়াসকে প্রাধান্য দিয়ে কিংবা বর্ণনাকারী ফকীহ নয় দাবী করে কিংবা হাদীসের বক্তব্য জ্ঞান ও বিবেকের প্রতিকূল মনে করে কিংবা আরো অন্য রকম কিছু মনে করে আমল না করা ও প্রত্যাখ্যান করা অবশ্যই ঠিক নয়; বরং এ সব হাদীস অমান্য করার বিভিন্ন ধরণ বা পদ্ধতি।