ثم قست قلوبكم من بعد ذالك فهي كالحجارة او اشد قسوة وان من الحجارة لما يتفجر منه الانهار وان منها لما يشقق فيخرج منه الماء وان منها لما يهبط من خشية الله وما الله بغافل عما تعملون ٧٤
ثُمَّ قَسَتْ قُلُوبُكُم مِّنۢ بَعْدِ ذَٰلِكَ فَهِىَ كَٱلْحِجَارَةِ أَوْ أَشَدُّ قَسْوَةًۭ ۚ وَإِنَّ مِنَ ٱلْحِجَارَةِ لَمَا يَتَفَجَّرُ مِنْهُ ٱلْأَنْهَـٰرُ ۚ وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَشَّقَّقُ فَيَخْرُجُ مِنْهُ ٱلْمَآءُ ۚ وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَهْبِطُ مِنْ خَشْيَةِ ٱللَّهِ ۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَـٰفِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ ٧٤
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

৭৪ নং আয়াতের তাফসীর:

বানী ইসরাঈলরা আল্লাহ তা‘আলার এতসব নিদর্শন প্রত্যক্ষ করার পরেও যখন আল্লাহ তা‘আলার নাফরমানি করল ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য হল তখন তিনি তাদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে এ কথা বললেন। তাদের অন্তর কঠিন হবার কারণ এখানে বর্ণিত না হলেও আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বর্ণনা করে বলেন:

(فَبِمَا نَقْضِھِمْ مِّیْثَاقَھُمْ لَعَنّٰھُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوْبَھُمْ قٰسِیَةًﺆ یُحَرِّفُوْنَ الْکَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِھ۪ﺫ وَنَسُوْا حَظًّا مِّمَّا ذُکِّرُوْا بِھ۪ﺆ وَلَا تَزَالُ تَطَّلِعُ عَلٰی خَا۬ئِنَةٍ مِّنْھُمْ اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْھُمْ فَاعْفُ عَنْھُمْ وَاصْفَحْﺚ اِنَّ اللہَ یُحِبُّ الْمُحْسِنِیْنَﭜ)

“তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমি তাদেরকে লা‘নত করেছি ও তাদের হৃদয়কে কঠিন করে দিয়েছি; তারা শব্দগুলোর আসল অর্থ বিকৃত করেছে এবং তারা যা আদিষ্ট হয়েছিল তার এক অংশ ভুলে গিয়েছে। তুমি সর্বদা তাদের অল্পসংখ্যক ব্যতীত সকলকেই বিশ্বাসঘাতকতা করতে দেখতে পাবে, সুতরাং তাদেরকে ক্ষমা কর ও উপেক্ষা কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎ কর্মপরায়ণদেরকে ভালবাসেন।”(সূরা মায়িদাহ ৫:১৩)

এ ঘটনা তুলে ধরার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে এরূপ কঠোর হৃদয়ের মানুষ হতে নিষেধ করেছেন।

অন্তরকে পাথরের চেয়ে কঠিন বলার কারণ হল, অনেক পাথর রয়েছে যা থেকে ঝর্ণা প্রবাহিত হয়। আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে তারা কাঁদে এমনকি আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহও তারা পাঠ করে। কিন্তু অন্তর যখন কঠিন হয় তখন আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে চক্ষু থেকে পানি ঝরে না, আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহও পাঠ করে না বরং আল্লাহ বিমুখ হয়ে যায়। অত্র আয়াতে প্রমাণিত হয় যে, পাথর আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে, শুধু তাই নয় বরং আসমান ও জমিনের মাঝে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহ পাঠ করে কিন্তু আমরা তা বুঝতে পারি না।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(تُسَبِّحُ لَھُ السَّمٰوٰتُ السَّبْعُ وَالْاَرْضُ وَمَنْ فِیْھِنَّﺚ وَاِنْ مِّنْ شَیْءٍ اِلَّا یُسَبِّحُ بِحَمْدِھ۪ وَلٰکِنْ لَّا تَفْقَھُوْنَ تَسْبِیْحَھُمْﺚ اِنَّھ۫ کَانَ حَلِیْمًا غَفُوْرًا)

“সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং তাদের অন্তর্বর্তী সমস্ত কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং এমন কিছু নেই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না; কিন্তু তাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পার না; নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।”(সূরা বানী ইসরাঈল ১৭:৪৪)

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:

إِنِّى لأَعْرِفُ حَجَرًا بِمَكَّةَ كَانَ يُسَلِّمُ عَلَىَّ قَبْلَ أَنْ أُبْعَثَ إِنِّى لأَعْرِفُهُ الآنَ

আমি মক্কার ঐ পাথরকে চিনি, যে আমার নবুওয়াতের পূর্বে আমাকে সালাম দিত। (সহীহ মুসলিম হা: ২২৭৭, তিরমিযী হা: ৩৬২৪) উহুদ পাহাড় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:

هَذَا جَبَلٌ يُحِبُّنَا وَنُحِبُّهُ

এ পাহাড়টি আমাদেরকে ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪২)

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. আল্লাহ তা‘আলাকে দেয়া অঙ্গীকার ভঙ্গ করার কারণে বানী ইসরাঈলের অন্তর কঠিন করে দেয়া হয়েছিল এবং তাদের ওপর লা‘নত করা হয়েছিল। আমাদেরকে তাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।

২. মু’মিনদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল তারা কোমল হৃদয়ের অধিকারী।

৩. আসমান ও জমিনের মাঝে যা কিছু আছে সব আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহ পাঠ করে।