৪১-৪৫ নং আয়াতের তাফসীর: মক্কার মুশরিকরা যারা মূর্তিপুজক ছিল এবং নিজেদেরকে হযরত ইবরাহীমের (আঃ) অনুসারী মনে করতো তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন এবং স্বীয় নবীকে (সঃ) বলছেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি তাদের সামনে স্বয়ং হযরত ইবরাহীম খলীলের (আঃ) ঘটনা বর্ণনা কর। এ সত্য নবী নিজের পিতাকেও পরওয়া করেন নাই। তার সামনে তিনি সত্যকে খুলে দিয়েছিলেন এবং তাকে মূর্তিপূজা হতে বিরত থাকতে বলেছিলেন। তাকে তিনি পরিষ্কারভাবে বলেছিলেনঃ “যে মূর্তি তোমার কোন লাভ বা ক্ষতি করতে পারে তার পূজা কর কেন?তিনি স্বীয় পিতাকে বলেছিলেনঃ “নিশ্চয়ই আমি তোমার পুত্র। কিন্তু আমার মধ্যে আল্লাহর দেয়া যে জ্ঞান রয়েছে তা তোমাদের মধ্যে নেই। তুমি আমার অনুসরণ করো। আমি তোমাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করছি এবং আমি তোমাকে অকল্যাণের পথ হতে সরিয়ে কল্যাণের পথে পৌঁছিয়ে দেবো। হে আমার পিতা! মূর্তি পূজা দ্বারা তো শয়তানেরই অনুসরণ করা হয়। সে ঐ পথে পরিচালিত করে এবং এতে সে খুশী হয়। যেমন সূরায়ে ইয়াসীনে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি কি তোমাদেরকে সতর্ক করে দিই নাই হে অদিম সন্তানগণ (এবং হে জ্বিনগণ)! তোমরা শয়তানের পূজা করো না, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু!" (৩৬:৬০) আর এক আয়াতে আছেঃ (আরবী) অর্থাৎ তারা স্ত্রীলোকদেরকে ডেকে থাকে এবং আল্লাহকে পরিত্যাগ করে, প্রকৃত পক্ষে তারা উদ্ধত শয়তানকেই ডেকে থাকে।" (৪:১১৭)হযরত ইবরাহীম (আঃ) তাঁর পিতাকে আরো বলেনঃ শয়তান আল্লাহ তাআলার অবাধ্য ও বিরোধী। তার আনুগত্য স্বীকার করার ব্যাপারে সে অহংকারী। এ কারণেই সে মহান আল্লাহর দরবার হতে বিতাড়িত হয়েছে। যদি তুমিও এই শয়তানের আনুগত্য কর, তবে সে তোমাকেও তার অবস্থায় পৌঁছিয়ে দেবে। হে আমার পিতা! তেমাির এই শিরুক ও অবাধ্যতার কারণে আমি আশংকা করছি যে, হয়তো তোমার উপর আল্লাহর শাস্তি এসে পড়বে এবং তুমি শয়তানের বন্ধু ও সঙ্গী হয়ে যাবে। আর এর ফলে তোমার উপর থেকে আল্লাহর সাহায্য সহানুভূতি দূর হয়ে যাবে। দেখো, শয়তানের কোনই ক্ষমতা নেই। তার আনুগত্য করলে তুমি অতি জঘন্য স্থানে পৌঁছে যাবে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “এটা নিশ্চিত ও শপথ যুক্ত কথা যে, তোমার পূর্ববর্তী উম্মতদের নিকট ও আমি রাসূল পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু শয়তান তাদের খারাপ কাজগুলিকে তাদের কাছে শোভনীয় ও সুন্দররূপে দেখিয়েছিল এবং সেই আজ তাদের সঙ্গী ও বন্ধু হয়ে যায় (কিন্তু সুফল কিছুই হলো না), তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” (১৬:৬৩)