এটা হচ্ছে ঐ বিষয়ের দলীল যে, ঐ গুহাটির মুখ ছিল উত্তর দিকে। সূর্য উদয়ের সময় ওর ডান দিকে রৌদ্রের ছায়া প্রবেশ করতো। সুতরাং দুপুরের সময় সেখানে রৌদ্র মোটেই থাকতো না। সূর্য উপরে উঠার সাথে সাথে এরূপ জায়গা হতে রৌদ্রের আলো কমে যায় এবং সূর্যাস্তের সময় তাদের গুহার দিকে ওর দরজার উত্তর দিক থেকে রৌদ্র প্রবেশ করে থাকে। জ্যোতিষ্ক বিদ্যায় পারদর্শী লোকেরা এটা খুব ভালভাবে বুঝতে পারেন, যাদের সূর্য, চন্দ্র ও তারকারাজির চলন গতি সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে। যদি গুহার দরজাটি পূর্ব মুখী হতো তবে সূর্যাস্তের সময় সেখানে রৌদ্র মোটেই যেতো না আর যদি কিবলামুখী হতো তবে সূর্যোদয়ের সময়ও সেখানে সূর্যের আলো পৌঁছতো না। এবং সূর্যাস্তের সময়ও না এবং সূর্যের ছায়া ডান বামেও ঝুঁকে পড়তো না আর যদি দরজাপশ্চিমমুখী হতো তবে তখনো সুর্যোদয়ের সময় ভিতরে সূর্যের আলো প্রবেশ করতো না, বরং সূর্য হেলে পড়ার পরে আলো ভিতরে প্রবেশ করতো। তারপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত বরবারই আলো থাকতো। সুতরাং আমরা যা বর্ণনা করলাম সঠিক কথা ওটাই। অতএব, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) (আরবী) এর অর্থ করেছেন ছেড়ে দেয়া ও পরিত্যাগ করা। মহামহিমান্বিত আল্লাহ আমাদেরকে এটা জানিয়ে দিলেন যাতে আমরা চিন্তা করি ও বুঝি। ঐ গুহাটি কোন শহরের কোন পাহাড়ে রয়েছে, তা তিনি বলে দেন নাই। কারণ, এটা জেনে আমাদের কোনই উপকার নাই। এর দ্বারা শরীয়তের কোন উদ্দেশ্যই লাভ হয় না। তবুও কোন কোন তাফসীরকার এ ব্যাপারে কষ্ট করেছেন। কেউ কেউ বলেন যে, ওটা ঈলার নিকটবর্তী জায়গায় অবস্থিত, কেউ বলেন যে, ওটা নীনওয়ার পাশে রয়েছে। কেউ বলেন যে, রোমের মধ্যে রয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেছেন যে, ওটা রয়েছে বালকাতে। ওটা যে কোথায় রয়েছে এর প্রকৃত জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তাআলারই আছে। যদি এতে আমাদের কোন দ্বীনী বা মাযহাবী উপকার থাকতো তবে অবশ্যই তিনি তা আমাদেরকে তার নবীর (সঃ) মাধ্যমে জানিয়ে দিতেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে যে কাজ ও জিনিস তোমাদেরকে জান্নাতের নিকটবর্তী ও জাহান্নাম হতে দূরে করে থাকে ওগুলির একটিও না ছেড়ে সবই আমি বর্ণনা করে দিয়েছি।” সুতরাং আল্লাহ তাআলা ওর বিশেষ বর্ণনা করেছেন, কিন্তু ওর জায়গার উল্লেখ করেন নাই। তিনি বলেন যে, সূর্যোদয়ের সময় তাদের গুহা হতে ওটা ডানে-বামে ঝুঁকে পড়ে এবং সূর্যাস্তের সময় তাদেরকে বাম দিকে ছেড়ে দেয়। তারা প্রশস্ততার মধ্যে রয়েছে। সুতরাং তাদের উপর সূর্যের তাপ পোঁছে না। অন্যথায় তাদের দেহ ও কাপড় পুড়ে যেতো। এটা আল্লাহ তাআলার একটা নিদর্শন যে, তিনি তাদেরকে ঐগুহায় পৌঁছিয়েছেন, যেখানে তাদেরকে জীবিত রেখেছেন। সেখানে রৌদ্রও পৌঁছেছে, বাতাসও পৌঁছেছে এবং চন্দ্রালোকও প্রবেশ করেছে; যাতে তাদের নিদ্রার কোন ব্যাঘাত না ঘটে, না কোন ক্ষতি হয়। প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে এটাও একটা পূর্ণক্ষমতার নিদর্শন। ঐ একত্ববাদী যুবকদেরকে হিদায়াত স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই দান করেছিলেন। কারো ক্ষমতা ছিল না যে, তাদের পথভ্রষ্ট করে। পক্ষান্তরে তিনি যাদেরকে হিদায়াত দান করেন না, তাদেরকে হিদায়াত করার ক্ষমতা কারো নেই।