اتل ما اوحي اليك من الكتاب واقم الصلاة ان الصلاة تنهى عن الفحشاء والمنكر ولذكر الله اكبر والله يعلم ما تصنعون ٤٥
ٱتْلُ مَآ أُوحِىَ إِلَيْكَ مِنَ ٱلْكِتَـٰبِ وَأَقِمِ ٱلصَّلَوٰةَ ۖ إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ تَنْهَىٰ عَنِ ٱلْفَحْشَآءِ وَٱلْمُنكَرِ ۗ وَلَذِكْرُ ٱللَّهِ أَكْبَرُ ۗ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ ٤٥
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

আল্লাহ তাআলা স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে ও মুমিনদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তাঁরা যেন কুরআন কারীম নিজেরা পাঠ করেন এবং অন্যদেরকেও শুনিয়ে দেন। আর তাঁরা যেন নিয়মিতভাবে নামায সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। নিশ্চয়ই নামায অশ্লীল ও মন্দ কার্য হতে বিরত রাখে।হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তির নামায তাকে অশ্লীল ও মন্দ কার্য হতে বিরত রাখে না সে আল্লাহ হতে বহু দূরে রয়ে যায়।”হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে (আরবি) এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ “যার নামায তাকে অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে বিরত রাখে না, (তাহলে জানবে যে,) তার নামায নাই (অর্থাৎ আল্লাহর দরবারে তার নামায কবুল হয় না)। (এ হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)আর একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যার নামায তাকে অশ্লীল ও মন্দ কার্য হতে বিরত রাখে না, সে আল্লাহ হতে বহু দূরে চলে যায়।” (এ হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ) ও তিবরানী (রঃ) বর্ণনা করেছেন)একটি মাওকূফ রিওয়াইয়াতে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি ভাল কাজ করে না ও মন্দ কাজ হতে বিরত থাকে না, তার নামায তাকে আল্লাহ হতে (ক্রমে ক্রমে) দূর করতেই থাকে। (এটা ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) বর্ণনা করেছেন)হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি নামাযের আনুগত্য করে না তার নামায নাই।” (এ হাদীসটিও ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) বর্ণনা করেছেন) নামাযের আনুগত্য এই যে, নামায নামাযীকে অশ্লীল ও দুষ্কর্ম হতে বিরত রাখবে। হযরত শুআয়েব (আঃ)-কে তাঁর কওম বলেছিলঃ “হে শুআয়েব (আঃ)! তোমার প্রভু কি তোমাকে আদেশ করে?” হযরত সুফইয়ান (রঃ)-এর তাফসীরে বলেনঃ “হ্যা, আল্লাহর কসম! নামায আদেশ করে এবং নিষেধও করে।”হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে কোন একজন লোক বলেঃ “অমুক লোক দীর্ঘক্ষণ ধরে নামায পড়ে থাকে। তিনি তখন বলেনঃ “নামায তারই উপকার করে যে ওর আনুগত্য করে।” আমি তাহকীক করে যা বুঝেছি তা এই যে, উপরে যে মার’ রিওয়াইয়াত বর্ণিত হয়েছে তা মাওকুফ হওয়াই বেশী সঠিক। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। একটি লোক রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞেস করেঃ “হে আল্লাহর নবী (সঃ)! অমুক লোক নামায পড়ে, কিন্তু চুরিও করে।” উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “অতিসত্বরই তার নামায তার এ মন্দ কাজ ছাড়িয়ে দেবে। (এ হাদীসটি হাফিয আবু বকর আল বাযার (রঃ) বর্ণনা করেছেন) নামায় আল্লাহর যিকরের নাম, এ জন্যেই এর পরেই বলা হয়েছেঃ আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ। তোমরা যা কর আল্লাহ তা জানেন।আবুল আলিয়া (রঃ) বলেনঃ “নামাযে তিনটি জিনিস রয়েছে। এ তিনটি জিনিস না থাকলে নামায হবে না। প্রথম হলো ইখলাস বা আন্তরিকতা, দ্বিতীয় হলো আল্লাহর ভয় এবং তৃতীয় হলো আল্লাহর যিকর। ইখলাস দ্বারা মানুষ সৎ হয়ে যায়। আল্লাহর ভয়ের কারণে মানুষ পাপকার্য পরিত্যাগ করে এবং আল্লাহর যিকর অর্থাৎ কুরআন মানুষকে ভাল ও মন্দ বলে দেয় এবং আদেশও করে, নিষেধও করে।”ইবনে আউন আনসারী (রঃ) বলেনঃ “যখন তুমি নামাযে থাকো তখন ভাল কাজে থাকো এবং নামায তোমাকে অশ্লীলতা ও মন্দ কার্য হতে বিরত রাখে। আর ওর মধ্যে যে যিকর তুমি কর তা তোমার জন্যে বড়ই উপকারের বিষয়।”হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এই আয়াতের ভাবার্থ বলেনঃ “নামাযের অবস্থায় কমপক্ষে তুমি তো মন্দ কার্য হতে বেঁচে থাকবে। যে বান্দা আল্লাহকে স্মরণ করে, আল্লাহও তাকে স্মরণ করেন। (আরবি) মহান আল্লাহর এই উক্তির ভাবার্থে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “তোমার আহারের সময় ও শয়নের সময় আল্লাহকে স্মরণ করা। তার এ তাফসীর শুনে একটি লোক তাঁকে বলেনঃ “আমার একজন সঙ্গী রয়েছেন যিনি আপনার অর্থের বিপরীত অর্থ করে থাকেন। তিনি তখন প্রশ্ন করলেনঃ “সে কি অর্থ করে?” উত্তরে লোকটি বলেন, তিনি বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ “যখন তোমরা আল্লাহকে স্মরণ করবে তখন তিনিও তোমাদেরকে স্মরণ করবেন। আর এটা খুব বড় জিনিস। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করবো।” (২:১৫২) এ কথা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “সে ঠিকই বলেছে। দু'টি ভাবার্থই সঠিক। অর্থাৎ তারটাও ঠিক, আমারটাও ঠিক।” আর স্বয়ং ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতেও এরূপ তাফসীর বর্ণিত আছে। একদা হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে রাবীআহ্ (রঃ)-কে জিজ্ঞেস করেনঃ “তুমি এই বাক্যটির ভাবার্থ কি বুঝেছো?” জবাবে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে রাবীআহ (রঃ) বলেনঃ “এর ভাবার্থ হচ্ছে- নামাযে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার ইত্যাদি বলা।” তাঁর এ উত্তর শুনে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) তাকে বলেনঃ “তুমি তো এক বিস্ময়কর কথা বললে! ভাবার্থ এটা নয়। বরং এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ আদেশ ও নিষেধ করার সময় আল্লাহর তোমাদেরকে স্মরণ করা। তোমাদের আল্লাহর যিকর করা বড়ই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।” হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ), হযরত আবু দারদা (রাঃ), হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) প্রমুখ গুরুজন হতেও এটাই বর্ণিত আছে। ইমাম ইবনে জারীরও (রঃ) এটাই পছন্দ করেছেন।