undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

‘হে রাসূলগণ [১]! আপনারা পবিত্র বস্তু থেকে খাদ্য গ্রহণ করুন এবং সৎকাজ করুন [২]; নিশ্চয় আপনারা যা করেন সে সম্পর্কে আমি সবিশেষ অবগত।

[১] এ থেকে একথা বলাই উদ্দেশ্য যে, প্রতি যুগে বিভিন্ন দেশে ও জাতির মধ্যে আগমনকারী নবীদেরকে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং স্থান-কালের বিভিন্নতা সত্ত্বেও তাদের সবাইকে একই হুকুম দেয়া হয়েছিল। তাদের সবাইকে হালাল খাওয়ার এবং সৎকাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। [ইবন কাসীর]

[২] طيبات শব্দের আভিধানিক অর্থ, পবিত্র ও উত্তম বস্তু। [ফাতহুল কাদীর]। এখানে এর দ্বারা এমন জিনিস বুঝানো হয়েছে যা নিজেও পাক-পবিত্র এবং হালাল পথে অর্জিতও হয়। তাই طيبات দ্বারা শুধু বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ দিক দিয়ে পবিত্র ও হালাল বস্তুসমূহই বুঝতে হবে। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর] পবিত্র জিনিস খাওয়ার নির্দেশ দিয়ে নাসারাদের বৈরাগ্যবাদ ও অন্যদের ভোগবাদের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ মধ্যপন্থার দিকে ইংগিত করা হয়েছে। [দেখুন, আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর]

এখানে আরো প্রণিধানযোগ্য বিষয় হলো এই যে, নবী-রাসূলগণকে তাদের সময়ে দুই বিষয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক, হালাল ও পবিত্ৰ বস্তু আহার কর। দুই, সৎকর্মকর। আর এটা সৰ্বজনবিদিত সত্য যে, আল্লাহ্‌ তা‘আলা নবী-রাসূলগণকে নিষ্পাপ রেখেছিলেন, তাদেরকেই যখন একথা বলা হয়েছে, তখন উম্মতের জন্যে এই আদেশ আরও বেশী পালনীয়। বস্তুতঃ আসল উদ্দেশ্য উম্মতকে এই আদেশের অনুগামী করা। আলেমগণ বলেনঃ এই দু’টি আদেশকে একসাথে বর্ণনা করার মধ্যে ইঙ্গিত এই যে, সৎকর্ম সম্পাদনে হালাল খাদ্যের প্রভাব অপরিসীম। খাদ্য হালাল হলে সৎকর্মের তাওফীক হতে থাকে। [দেখুন, ইবন কাসীর] পক্ষান্তরে খাদ্য হারাম হলে সৎকর্মের ইচ্ছা করা সত্ত্বেও তাতে নানা আপত্তি প্রতিবন্ধক হয়ে যায়। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “হে লোকেরা! আল্লাহ্‌ নিজে পবিত্র, তাই তিনি পবিত্র জিনিসই পছন্দ করেন।” তারপর তিনি এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেন এবং বলেনঃ “এক ব্যক্তি আসে সুদীর্ঘ পথ সফর করে। দেহ ধূলি ধূসরিত। মাথার চুল এলোমেলো। আকাশের দিকে হাত তুলে প্রার্থনা করেঃ হে প্ৰভু! হে প্ৰভু! কিন্তু অবস্থা হচ্ছে এই যে, তার খাবার হারাম, পানীয় হারাম, কাপড় চোপড় হারাম এবং হারাম খাদ্যে তার দেহ প্রতিপালিত হয়েছে। এখন কিভাবে এমন ব্যক্তির দোয়া কবুল হবে?” [মুসলিমঃ ১০১৫] এ থেকে বোঝা গেল যে, ইবাদতে ও দো‘আ কবুল হওয়ার ব্যাপারে হালাল খাদ্যের অনেক প্রভাব আছে। খাদ্য হালাল না হলে ইবাদত ও দো‘আ কুবল হওয়ার যোগ্য হয় না।