وَاَوْحَیْنَاۤ
اِلٰۤی
اُمِّ
مُوْسٰۤی
اَنْ
اَرْضِعِیْهِ ۚ
فَاِذَا
خِفْتِ
عَلَیْهِ
فَاَلْقِیْهِ
فِی
الْیَمِّ
وَلَا
تَخَافِیْ
وَلَا
تَحْزَنِیْ ۚ
اِنَّا
رَآدُّوْهُ
اِلَیْكِ
وَجَاعِلُوْهُ
مِنَ
الْمُرْسَلِیْنَ
۟
3

মূসার জননীর কাছে অহী পাঠালাম,[১] শিশুটিকে স্তন্যদান কর। যখন তুমি এর সম্পর্কে কোন আশংকা করবে, তখন একে (নীল) দরিয়ায় ভাসিয়ে দাও এবং ভয় করো না, দুঃখও করো না।[২] নিশ্চয় আমি একে তোমার নিকট ফিরিয়ে দেব[৩] এবং একে একজন রসূল করব।

[১] এখানে 'অহী' বলতে অন্তরে কোন কথার উদ্রেক করা, অন্তরে ইঙ্গিতে নির্দেশ দেওয়া বা প্রক্ষিপ্ত করা। 'অহী' বলতে সেই অহী বুঝানো হয়নি, যা জিবরীল ফিরিশতা দ্বারা নবী-রসূলদের নিকট অবতীর্ণ হয়। আর যদি ফিরিশতা দ্বারা উক্ত অহী এসেও থাকে তবুও একটি অহী দ্বারা মূসা (আঃ)-এর মায়ের নবী হওয়ার কথা সাব্যস্ত হয় না। কারণ, কখনো কখনো ফিরিশতাদের আগমন সাধারণ মানুষের কাছেও ঘটে থাকে। যেমন, হাদীসে টাক-ওয়ালা, অন্ধ ও কুষ্ঠরোগীর নিকট ফিরিশতাদের আগমন ও কথাবার্তা প্রমাণিত। (বুখারী, মুসলিম)

[২] অর্থাৎ, নদীতে ডুবে অথবা মরে যাওয়ার ভয় করবে না। আর তার বিরহে দুঃখও করবে না।

[৩] অর্থাৎ, এমনভাবে যে, তার পরিত্রাণ সুনিশ্চিত। কথিত আছে যে, সন্তান হত্যার এই ধারা যখন অনেক লম্বা হয়ে গেল, তখন ফিরআউন জাতির এই আশংকা বোধ হল, যদি এভাবে বানী ইস্রাঈল জাতিই নিঃশেষ হয়ে যায়, তাহলে শ্রমসাধ্য কঠিন কাজগুলি আমাদেরকেই করতে হবে। এই আশংকার কথা তারা ফিরআউনের কাছে ব্যক্ত করলে সে এক নতুন আইন জারী করল যে, এক বছর নবজাত সন্তান হত্যা করা হোক আর এক বছর বাদ দেওয়া হোক। যে বছর সন্তান হত্যা না করার কথা সে বছর হারুন (আঃ)-এর জন্ম হয়। কিন্তু মূসা (আঃ)-এর জন্ম হয় হত্যার বছরে। কিন্তু মহান আল্লাহ তাঁর পরিত্রাণের ব্যবস্থা এইভাবে করলেন যে, প্রথমতঃ মূসা (আঃ)-এর মায়ের গর্ভাবস্থার লক্ষণ এমনভাবে প্রকাশ করলেন না, যাতে ফিরআউনের ছেড়ে রাখা ধাত্রীদের চোখে পড়ে। সেই জন্য গর্ভের এই মাসগুলি নিশ্চিন্তে পার হয়ে গেল এবং এই ঘটনা সরকারের পরিবার পরিকল্পনার দায়িত্বশীলদেরও জানা হল না। কিন্তু জন্মের পর তাঁকে হত্যা করার আশংকা বিদ্যমান ছিল। যার সমাধান মহান আল্লাহ নিজেই ইলহামের মাধ্যমে মূসা (আঃ)-এর মাতাকে বুঝিয়ে দিলেন। অতঃপর তিনি তাঁকে একটি কফিনে (কাঠের বাক্সে) পুরে নীল নদে ভাসিয়ে দিলেন। (ইবনে কাসীর)