وقال الذي اشتراه من مصر لامراته اكرمي مثواه عسى ان ينفعنا او نتخذه ولدا وكذالك مكنا ليوسف في الارض ولنعلمه من تاويل الاحاديث والله غالب على امره ولاكن اكثر الناس لا يعلمون ٢١
وَقَالَ ٱلَّذِى ٱشْتَرَىٰهُ مِن مِّصْرَ لِٱمْرَأَتِهِۦٓ أَكْرِمِى مَثْوَىٰهُ عَسَىٰٓ أَن يَنفَعَنَآ أَوْ نَتَّخِذَهُۥ وَلَدًۭا ۚ وَكَذَٰلِكَ مَكَّنَّا لِيُوسُفَ فِى ٱلْأَرْضِ وَلِنُعَلِّمَهُۥ مِن تَأْوِيلِ ٱلْأَحَادِيثِ ۚ وَٱللَّهُ غَالِبٌ عَلَىٰٓ أَمْرِهِۦ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ ٢١
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

আর মিসরের যে ব্যক্তি তাকে কিনেছিল, সে তার স্ত্রীকে বলল, ‘এর থাকার সম্মানজনক ব্যবস্থা কর, সম্ভবত সে আমাদের উপকারে আসবে বা আমরা একে পুত্ররূপেও গ্রহণ করতে পারি [১]।‘ আর এভাবেই আমরা ইউসুফকে সে দেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম [২]; এবং যাতে আমরা তাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দেই [৩]। আর আল্লাহ্‌ তাঁর কাজ সম্পাদনে অপ্রতিহত; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না [৪]।

[১] অর্থাৎ যে ব্যক্তি ইউসুফ ‘আলাইহিস্ সালাম-কে মিসরে ক্রয় করল, সে তার স্ত্রীকে বললঃ ইউসুফের বসবাসের সুন্দর বন্দোবস্ত কর। ইবনে কাসীর বলেনঃ যে ব্যক্তি ইউসুফ ‘আলাইহিস্ সালাম-কে ক্রয় করেছিলেন, তিনি ছিলেন মিসরের অর্থমন্ত্রী। আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ দুনিয়াতে তিন ব্যক্তি অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং চেহারা দেখে শুভাশুভ নিরূপণকারী প্রমাণিত হয়েছেন। প্রথম- আযীযে মিসর। তিনি স্বীয় নিরূপণ শক্তি দ্বারা ইউসুফ ‘আলাইহিস্ সালাম-এর গুণাবলী অবহিত হয়ে স্ত্রীকে উপরোক্ত নির্দেশ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়- ঐ কন্যা, যে মূসা ‘আলাইহিস্ সালাম সম্পর্কে তার পিতাকে বলেছিলঃ “পিতঃ, তাকে কর্মচারী রেখে দিন। কেননা, উত্তম কর্মচারী ঐ ব্যক্তি, যে সবল, সুঠাম ও বিশ্বস্ত হয় "[আল-কাসাসঃ ২৬] তৃতীয়-আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু, যিনি ফারুকে আযম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-কে খলীফা মনোনীত করেছিলেন। [তাবারী; ইবনে কাসীর]

[২] অর্থাৎ যেভাবে ইউসুফকে কুপ থেকে বের করে আযীযে মিসর পর্যন্ত পৌছে দিলাম তেমনিভাবে তাকে আমি যমীনের বুকে প্রতিষ্ঠিত করেছি। [ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]

[৩] (وَ لِنُعَلِّمَهٗ مِنۡ تَاۡوِیۡلِ الۡاَحَادِیۡثِ) – এখানে শুরুতে (واو) কে (عطف) অর্থে নিলে এ অর্থেরই একটি বাক্য উহ্য মেনে নেয়া হবে। অর্থাৎ আমি ইউসুফ আলাইহিস সালাম-কে প্রতিষ্ঠিত করেছি। যাতে তিনি এ সময়টুকুতে প্রচুর জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। আহকাম বিষয়ক ও স্বপ্নের ব্যাখ্যা বিষয়ক সব জ্ঞান অর্জন করার সুযোগই তিনি লাভ করতে পারবেন। সুতরাং এভাবে তাকে আমরা বাক্যাদির পরিপূর্ণ মর্ম অনুধাবনের পদ্ধতি শিক্ষা দেই। [সা’দী] অথবা এ বাক্যটি পূর্ববতী বাক্যের কারণ হিসেবে এসেছে অর্থাৎ তাকে আমি যমীনের বুকে প্রতিষ্ঠা দান করেছি, যার ভূমিকা হিসাবে আমি তাকে স্বপ্লের তা'বীর শিক্ষা দিয়েছি। [বাগভী] বস্তুতঃ তিনি এর মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিলেন। অথবা ইয়াকুব আলাইহিস সালামের পূর্ব ঘোষিত বাণী, আল্লাহ আপনাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিবেন’ এ কথাটির সত্যয়ণ হিসেবে আমি আপনাকে যমীনে প্রতিষ্ঠিত করেছি। [কুরতুবী]

[৪] অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলা স্বীয় কর্মে প্রবল ও শক্তিমান। তিনি যা ইচ্ছে তা করতে পারেন। [ইবন কাসীর] কেউই তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে গিয়ে কোন কাজ হাসিল করতে পারে না। কোন কিছু করতে হলে তিনি তো শুধু বলেন ‘হও’ আর সাথে সাথে তা হয়ে যায়। [কুরতুবী] এর উদাহরণ হিসেবে কেউ কেউ বলেন, ইয়া’কুব আলাইহিস সালাম চেয়েছিলেন যেন ইউসুফের স্বপ্ন তার ভাইয়েরা না জানে, কিন্তু আল্লাহ চাইলেন যে, তারা জানুক, সুতরাং তাই হয়েছে। ইউসুফের ভাইয়েরা চেয়েছিল ইউসুফকে হত্যা করতে, কিন্তু আল্লাহ চাইলেন যে, সে বেঁচে থাকবে এবং কর্ণধার হবে, বাস্তবে হয়েছেও তাই। ইউসুফের ভাইয়েরা চেয়েছিল ইয়াকুবের মন থেকে ইউসুফের কথা ঘুচে যাক কিন্তু আল্লাহ চাইলেন যে, তা জাগরুক থাকুক। সুতরাং ইয়া’কুব সর্বক্ষণ ইউসুফের কথাই বলেছিল। তারা চাইলো যে, তাদের পিতাকে চোখের পানি দিয়ে ধোকা দিবে, কিন্তু আল্লাহ চাইলেন যে, ইয়া’কুব তাদের কথায় বিশ্বাস করবেন না, ফলে তাই হলো। আযীয পত্নী চেয়েছিল ইউসুফকে দোষারোপ করতে কিন্তু আল্লাহ চাইলেন যে, তিনি দোষমুক্ত ঘোষিত হবেন, ফলে আযীযের মুখ থেকে আযীয পত্নীই দোষী সাব্যস্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করার নির্দেশ পেলেন। ইউসুফ চাইলেন যে, শরাব পরিবেশনকারী তার কথা বাদশাহকে বলে তাকে বিমুক্ত করে দিক, কিন্তু আল্লাহ চাইলেন যে, শরাব পরিবেশনকারী তা ভুলে যাক, ফলে তাই হলো। এসবই প্রমাণ করে যে, আল্লাহ তার ইচ্ছায় প্রবল। [কুরতুবী]

কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্ তা'আলা ইউসুফ আলাইহিস সালামের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে অত্যন্ত প্রবল। তিনি নিজে ইউসুফের কর্মকাণ্ডগুলো নিয়ন্ত্রণ করেছেন, তার কোন ব্যাপার অন্যের উপর ন্যস্ত করেন নি। যাতে করে তার বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্রকারীর যড়যন্ত্র সফল হতে না পারে। [বাগভী]

তারপর আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, কিন্তু অধিকাংশ লোক এ সত্য বোঝে না। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে অধিকাংশ বলে সকল মানুষকেই বোঝানো হয়েছে। কারণ, কেউই গায়েব জানে না। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে অধিকাংশই উদ্দেশ্য, কারণ, কোন কোন নবী-রাসূলকে আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর কোন কাজের হিকমত সম্পর্কে পূর্ব থেকে অবহিত করেন। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে অধিকাংশ মানুষ বলে মুশরিক এবং যারা তাকদীরের উপর ঈমান রাখে না তাদের উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। [কুরতুবী]