হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের আত্মরক্ষা করাই কর্তব্য। তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও, তবে যে পথভ্রষ্ট হয়েছে, সে তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।[১] আল্লাহরই দিকেই তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তোমরা যা করতে, তিনি সে সম্বন্ধে তোমাদেরকে অবহিত করবেন।
[১] কিছু লোকের মনে বাহ্যিক এই শব্দাবলীর কারণে সংশয়ের সৃষ্টি হয় যে, নিজেকে সংশোধন করে নেওয়াই যথেষ্ট। আর সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে বাধা দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু এ ধরনের ধারণা সঠিক নয়, তার কারণ হচ্ছে, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে বাধা দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফরয বিষয়। যদি একজন মুসলিম এই ফরয ত্যাগ করে, তাহলে পথভোলাকে কে পথ দেখাবে? (এই কাজ ত্যাগ করলে কেউ কি সৎপথে থাকতে পারে?) অথচ কুরআন শর্তারোপ করেছে যে, যদি তোমরা সৎপথে পরিচালিত হও তবে। এই আয়াতের মর্মার্থ সম্পর্কে যখন আবু বাকর (রাঃ) অবগত হলেন, তখন তিনি বললেন, 'হে লোক সকল! তোমরা আয়াতকে ভুল জায়গায় ব্যবহার করছ। আমি তো রসূল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, "লোকেরা যখন কাউকে কোন পাপ কাজে লিপ্ত দেখে এবং পরিবর্তন করার পরিকল্পনা বা চেষ্টা না করে, সম্ভবতঃ আল্লাহ তাদেরকে অচিরেই আযাব দ্বারা গ্রেফতার করবেন।" (আহমাদ, তিরমিযী ২১৭৮, আবু দাউদ ৪৩৩৮নং) সুতরাং আয়াতের সঠিক ভাবার্থ এই যে, তোমাদের বুঝানো সত্ত্বেও যদি তারা পাপ থেকে বিরত না থাকে এবং সৎপথ অবলম্বন না করে, তাহলে এই অবস্থায় তোমাদের কোন ক্ষতি হবে না; বরং তোমরা সৎপথে আছ এবং পাপ করা হতে বিরত আছ। অবশ্য একটি অবস্থায় সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে বাধা দেওয়া থেকে বিরত থাকা বৈধ, যদি কেউ সে কাজে নিজের মধ্যে দুর্বলতা পায় এবং জীবননাশের আশঙ্কা থাকে, তাহলে এই অবস্থায় "তাতে যদি সক্ষম না হয়, তাহলে হৃদয় দ্বারা; আর এ হল সবচেয়ে দুর্বল ঈমানের পরিচায়ক" হাদীসের ভিত্তিতে অনুমতি আছে। উক্ত আয়াতও এই অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত বহন করতে পারে।