১৭৬-১৮০ নং আয়াতের তাফসীরএ লোকগুলো মাদইয়ানের অধিবাসী ছিল। হযরত শুআইবও (আঃ) তাদেরই মধ্যে একজন ছিলেন। তাঁকে তাদের ভাই না বলার কারণ শুধু এই যে, তারা আয়কার পূজা করতো। আর এই আয়কার সাথেই তাদেরকে সম্পর্কযুক্ত করা হয়েছে। আয়কা ছিল একটি গাছ। এ কারণেই অন্যান্য নবীদেরকে বংশগত সম্পর্কের কারণে যেমন তাদের উম্মতের ভাই বলা হয়েছে, হযরত শুআইব (আঃ)-কে তাঁর উম্মতের ভাই বলা হয়নি, যদিও বংশগত হিসেবে তিনিও তাদের ভাই ছিলেন। যারা এই বিন্দু পর্যন্ত পৌছতে পারেননি তারা বলেন যে, এ লোকগুলো হযরত শুআইব (আঃ)-এর কম ছিল না বলেই তাঁকে তাদের ভাই বলা হয়নি। তারা অন্য কওম ছিল। হযরত শুআইব (আঃ)-কে তাঁর নিজের কওমের নিকটও পাঠানো হয়েছিল এবং ঐ কওমের নিকটও তিনি প্রেরিত হয়েছিলেন। অন্য কেউ বলেন যে, তিনি তৃতীয় একটি কওমের নিকটও প্রেরিত হয়েছিলেন। যেমন হযরত ইকরামা (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, কোন নবীকে আল্লাহ দুই বার প্রেরণ করেননি, শুধু হযরত শুআইব (আঃ)-কে ছাড়া। একবার তাকে মাদইয়ানবাসীর নিকট পাঠানো হয়। তারা তাকে অবিশ্বাস করে। তখন বিকট চীৎকার দ্বারা তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হয়। দ্বিতীয়বার তাকে প্রেরণ করা হয় আয়কাবাসীর নিকট। তারাও তাকে অস্বীকার করে। ফলে তাদের উপর আল্লাহর মেঘাচ্ছন্ন দিনের শাস্তি নেমে আসে এবং তারা ধ্বংস হয়ে যায় ।হযরত কাতাদা (রঃ) বলেন যে, আসহাবে রস ও আসহাবে আয়কা হলো হযরত শুআইব (আঃ)-এর কওম। একজন বুযর্গ ব্যক্তির উক্তি এই যে, আসহাবে আয়কা ও আসহাবে মাদইয়ান একই। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “কওমে মাদইয়ান ও আসহাবে আয়কা দু’টি উম্মত, যাদের নিকট আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নবী হযরত শুআইব (আঃ)-কে প্রেরণ করেছিলেন।” (এ হাদীসটি হাফিয ইবনে আসাকির (রঃ) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু হাদীসটি গারীব এবং এর মারফু হওয়া সম্পর্কে সমালোচনা করা হয়েছে। খুব সম্ভব এটা মাওকুফ হাদীস) আর সঠিক কথা এই যে, দুটো একই উম্মত।