মুনাফিক পুরুষেরা এবং মুনাফিক নারীরা এক অপরের অনুরূপ।[১] তারা অসৎকর্মের নির্দেশ দেয়, সৎকর্ম হতে বিরত রাখে এবং নিজেদের হাতগুলিকে (আল্লাহর পথে ব্যয় করা হতে) বন্ধ করে রাখে।[২] তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, সুতরাং তিনিও তাদেরকে ভুলে গেছেন।[৩] নিঃসন্দেহে মুনাফিকরাই হচ্ছে অতি অবাধ্য।
[১] মুনাফিক্বরা যে কসম খেয়ে মুসলিমদেরকে জানাত যে, 'আমরা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত' আল্লাহ পাক তাদের এই কথার খন্ডন করলেন যে, ঈমানদারদের সাথে এদের কি সম্পর্ক? অবশ্য এরা হল সবাই মুনাফিক্ব, চাহে পুরুষ হোক অথবা মহিলা, তারা সকলে সমান। অর্থাৎ, কুফরী ও মুনাফিক্বীতে উভয়েই তুল্যমূল্য। পরবর্তীতে তাদের গুণ বর্ণনা করা হচ্ছে যা মু'মিনদের গুণের সম্পূর্ণ উল্টো ও বিপরীত।[২] এ থেকে উদ্দেশ্য হল কৃপণতা করা। অর্থাৎ, মু'মিনদের গুণ হল; তারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে থাকে। কিন্তু মুনাফিক্বদের গুণ এর বিপরীত; তারা কৃপণতা করে থাকে। অর্থাৎ, আল্লাহর পথে ব্যয় করে না।[৩] অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলাও তাদের সাথে এমন ব্যবহার করবেন যে, যেন তিনি তাদেরকে ভুলে গেছেন। যেমন, অন্যত্র আল্লাহ পাক বলেন, "আজ আমি তোমাদেরকে ভুলে যাব, যেমন তোমরা এ দিনের সাক্ষাৎকে ভুলে গিয়েছিলে।" (সূরা জাষিয়াহ ৪৫:৩৪ আয়াত) তার মানে হল, যেমন তারা দুনিয়াতে আল্লাহর হুকুম-আহকামকে বর্জন করেছিল, তেমনি কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাদেরকে নিজ অনুগ্রহ ও দয়া হতে বঞ্চিত করবেন। এখানে আল্লাহর ভুলে যাওয়া (কর্মের অনুরূপ দন্ডদান নীতি এবং) অলংকার শাস্ত্রের রীতি অনুযায়ী সাদৃশ্য সাধনের জন্য বলা হয়েছে। নচেৎ আল্লাহর সত্তা ভুলে যাওয়া থেকে পাক ও পবিত্র। (ফাতহুল ক্বাদীর)