وكذالك اعثرنا عليهم ليعلموا ان وعد الله حق وان الساعة لا ريب فيها اذ يتنازعون بينهم امرهم فقالوا ابنوا عليهم بنيانا ربهم اعلم بهم قال الذين غلبوا على امرهم لنتخذن عليهم مسجدا ٢١
وَكَذَٰلِكَ أَعْثَرْنَا عَلَيْهِمْ لِيَعْلَمُوٓا۟ أَنَّ وَعْدَ ٱللَّهِ حَقٌّۭ وَأَنَّ ٱلسَّاعَةَ لَا رَيْبَ فِيهَآ إِذْ يَتَنَـٰزَعُونَ بَيْنَهُمْ أَمْرَهُمْ ۖ فَقَالُوا۟ ٱبْنُوا۟ عَلَيْهِم بُنْيَـٰنًۭا ۖ رَّبُّهُمْ أَعْلَمُ بِهِمْ ۚ قَالَ ٱلَّذِينَ غَلَبُوا۟ عَلَىٰٓ أَمْرِهِمْ لَنَتَّخِذَنَّ عَلَيْهِم مَّسْجِدًۭا ٢١
وَكَذٰلِكَ
اَعْثَرْنَا
عَلَیْهِمْ
لِیَعْلَمُوْۤا
اَنَّ
وَعْدَ
اللّٰهِ
حَقٌّ
وَّاَنَّ
السَّاعَةَ
لَا
رَیْبَ
فِیْهَا ۗۚ
اِذْ
یَتَنَازَعُوْنَ
بَیْنَهُمْ
اَمْرَهُمْ
فَقَالُوا
ابْنُوْا
عَلَیْهِمْ
بُنْیَانًا ؕ
رَبُّهُمْ
اَعْلَمُ
بِهِمْ ؕ
قَالَ
الَّذِیْنَ
غَلَبُوْا
عَلٰۤی
اَمْرِهِمْ
لَنَتَّخِذَنَّ
عَلَیْهِمْ
مَّسْجِدًا
۟

এভাবে আমি লোকেদেরকে তাদের বিষয় জানিয়ে দিলাম,[১] যাতে তারা জ্ঞাত হয় যে, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামতে কোন সন্দেহ নেই।[২] যখন তারা তাদের কর্তব্য বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করছিল[৩] তখন অনেকে বলল, ‘তাদের উপর সৌধ নির্মাণ কর।’[৪] তাদের প্রতিপালক তাদের বিষয়ে ভাল জানেন।[৫] তাদের কর্তব্য বিষয়ে যাদের মত প্রবল হল, তারা বলল, ‘আমরা তো নিশ্চয়ই তাদের উপর মসজিদ নির্মাণ করব।’[৬]

[১] অর্থাৎ, যেভাবে আমি তাদেরকে ঘুম পাড়িয়েছি ও জাগিয়েছি, অনুরূপভাবে মানুষদেরকেও তাদের ব্যাপারে অবহিত করিয়েছি। কোন কোন বর্ণনা অনুযায়ী এই অবহিত করণ এইভাবে সুসম্পন্ন হয় যে, যখন গুহা অধিবাসীদের একজন রূপার সেই মুদ্রা নিয়ে শহরে গেল, যা ৩০০ বছর পূর্বের রাজা দাকয়ানুসের আমলে প্রচলিত ছিল এবং সেই মুদ্রা সে একজন দোকানদারকে দিল, তখন সে বিস্মিত হল। সে পাশের দোকানদারকেও দেখাল। তারাও আশ্চর্যানিত হল। এদিকে এ লোক তাদেরকে বলছিল যে, আমি এই শহরেরই অধিবাসী, গত কালই এখান থেকে গেছি। কিন্তু এই 'কাল'এর যে তিন শতাব্দি অতিবাহিত হয়ে গেছে। অতএব মানুষ কিভাবে তার কথা মেনে নিবে? লোকদের এই সন্দেহ হল যে, হতে পারে এ লোক কোন গুপ্ত ধন-ভান্ডার পেয়েছে। পরিশেষে ধীরে ধীরে এ কথা রাজা বা শাসক পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং সে (গুহা অধিবাসীদের) এই সঙ্গীর সাহায্যে গুহা পর্যন্ত যায় এবং তাদের সাথে সাক্ষাৎ করে। পরে মহান আল্লাহ পুনরায় তাদেরকে সেখানেই মৃত্যু দেন। (ইবনে কাসীর)

[২] অর্থাৎ, গুহার অধিবাসীদের এই ঘটনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার এবং মৃত্যুর পর আল্লাহর পুনরুত্থানের ওয়াদা সত্য। অস্বীকারকারীদের জন্য রয়েছে এই ঘটনার মধ্যে আল্লাহর মহাশক্তির এক নিদর্শন।

[৩] إِذْ হয় أَعْثَرْنَا (ক্রিয়াপদের) এর 'যারফ' (যার দ্বারা সময়-কাল বুঝানো হয়)। অর্থাৎ, আমি তাদেরকে সেই সময় এদের ব্যাপারে জানালাম, যখন তারা মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের এবং কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে আপোসে বিতর্কে লিপ্ত ছিল। অথবা এখানে أذْكُرْ ক্রিয়া ঊহ্য আছে। অর্থাৎ, সেই সময়কে স্মরণ কর, যখন তারা আপোসে বিতর্ক করছিল।

[৪] এ কথা কে বলেছিল? কেউ বলেন, সেই যুগের ঈমানদাররা। কেউ বলেন, বাদশাহ ও তার সাথের লোকেরা যখন সেখানে গিয়ে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করল এবং এরপর আল্লাহ তাদেরকে পুনরায় ঘুম পাড়িয়ে দিলেন, তখন বাদশাহ ও তার সাথীরা বলল যে, এদের হেফাযতের জন্য একটি অট্টালিকা নির্মাণ করে দেওয়া যাক।

[৫] বিতর্ককারীদেরকে মহান আল্লাহ বললেন যে, তাদের ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান কেবল আল্লাহই রাখেন।

[৬] এই প্রবল দলটি ঈমানদারদের ছিল, না কাফের ও মুশরিকদের? ইমাম শওকানী প্রথম মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং ইমাম ইবনে কাসীর দ্বিতীয় মতকে। কারণ, নেক লোকদের কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করা আল্লাহর পছন্দ নয়। রসূল (সাঃ) বলেছেন, ((لَعَنَ اللهُ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ)) "ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টানদের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ, তারা তাদের আম্বিয়াদের কবরগুলোকে মসজিদে পরিণত করেছে।" (বুখারীঃ জানাযা অধ্যায়, মুসলিমঃ মাসাজিদ অধ্যায়) উমার (রাঃ)-এর খেলাফত কালে ইরাকে দানিয়াল (আঃ)-এর কবর পাওয়া গেল। তিনি নির্দেশ দিলেন যে, গোপনে সেটাকে সাধারণ কবরে পরিণত করা হোক। যাতে মানুষ যেন জানতে না পারে যে, এটা কোন নবীর কবর। (তাফসীর ইবনে কাসীর)