এবং তাদেরকে পথভ্রষ্ট করবই; তাদের হৃদয়ে মিথ্যা বাসনার সৃষ্টি করবই,[১] আমি তাদেরকে নিশ্চয় নির্দেশ দেব, ফলে তারা পশুর কর্ণচ্ছেদ করবেই[২] এবং তাদেরকে নিশ্চয় নির্দেশ দেব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবেই।’ [৩] আর যে আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে, নিশ্চয় সে প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
[১] মিথ্যা বাসনা হল এমন আশা-আকাঙ্ক্ষা, যা মানুষের মনে শয়তানের কুমন্ত্রণা ও তার হস্তক্ষেপ দ্বারা সৃষ্টি হয় এবং মানুষের ভ্রষ্টতার কারণ হয়।
[২] এটা হল 'বাহিরা' এবং 'সায়েবা' পশুগুলোর নিদর্শন ও তাদের আকার-আকৃতি। এই পশুগুলোকে মুশরিকরা মূর্তিদের নামে উৎসর্গ করত এবং নিদর্শন স্বরূপ তাদের কান চিড়ে দিত।
[৩] تَغْيِيْرُ خَلْقِ اللهِ আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন করা তিনভাবে হয়। প্রথম এটা, যা এখন আলোচিত হল। যেমন, কান কাটা, চিড়া এবং ছিদ্র করা। এ ছাড়াও আরো কয়েকভাবে তা করা হয়। যেমন, মহান আল্লাহ চাঁদ, সূর্য, পাথর এবং আগুন ইত্যাদি অনেক জিনিস বিভিন্ন উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু তাঁর সৃষ্টির উদ্দেশ্য পরিবর্তন করে সেগুলোকে উপাস্যে পরিণত করা। আবার পরিবর্তনের অর্থ প্রাকৃতিক নিয়মে পরিবর্তন এবং হালাল ও হারামের মধ্যে পরিবর্তনও হয়। পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা অনুরূপ মহিলাদের গর্ভাশয় তুলে ফেলে তাদের সন্তান জন্মানোর যোগ্যতা থেকে বঞ্চিত করাও এই পরিবর্তনের আওতায় পড়ে। মেকআপের নামে ভ্রূর চুল চেঁছে নিজের আকৃতির পরিবর্তন করা এবং চেহারা ও হাতে দেগে নকসা করা ইত্যাদিও এরই মধ্যে শামিল। এ সবই হল শয়তানী কার্যকলাপ, তা থেকে বিরত থাকা জরুরী। তবে পশু দ্বারা অধিক উপকৃত হওয়ার জন্য, তার ভালো গোশত লাভের জন্য অথবা এই ধরনের আরো কোন বৈধ উদ্দেশ্যে যদি তার খাসি করানো হয়, তবে তা বৈধ হবে। এর সমর্থন এ থেকেও হয় যে, নবী করীম (সাঃ) খাসি ছাগল কুরবানীতে জবাই করেছেন। যদি পশুর খাসি করানো বৈধ না হত, তাহলে তিনি (সাঃ) তার কুরবানী করতেন না। (বা খাসি হওয়া একটি ত্রুটি বলে গণ্য করতেন।)