يا ايها الذين امنوا لا تدخلوا بيوت النبي الا ان يوذن لكم الى طعام غير ناظرين اناه ولاكن اذا دعيتم فادخلوا فاذا طعمتم فانتشروا ولا مستانسين لحديث ان ذالكم كان يوذي النبي فيستحيي منكم والله لا يستحيي من الحق واذا سالتموهن متاعا فاسالوهن من وراء حجاب ذالكم اطهر لقلوبكم وقلوبهن وما كان لكم ان توذوا رسول الله ولا ان تنكحوا ازواجه من بعده ابدا ان ذالكم كان عند الله عظيما ٥٣
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تَدْخُلُوا۟ بُيُوتَ ٱلنَّبِىِّ إِلَّآ أَن يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَىٰ طَعَامٍ غَيْرَ نَـٰظِرِينَ إِنَىٰهُ وَلَـٰكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَٱدْخُلُوا۟ فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَٱنتَشِرُوا۟ وَلَا مُسْتَـْٔنِسِينَ لِحَدِيثٍ ۚ إِنَّ ذَٰلِكُمْ كَانَ يُؤْذِى ٱلنَّبِىَّ فَيَسْتَحْىِۦ مِنكُمْ ۖ وَٱللَّهُ لَا يَسْتَحْىِۦ مِنَ ٱلْحَقِّ ۚ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَـٰعًۭا فَسْـَٔلُوهُنَّ مِن وَرَآءِ حِجَابٍۢ ۚ ذَٰلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ ۚ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَن تُؤْذُوا۟ رَسُولَ ٱللَّهِ وَلَآ أَن تَنكِحُوٓا۟ أَزْوَٰجَهُۥ مِنۢ بَعْدِهِۦٓ أَبَدًا ۚ إِنَّ ذَٰلِكُمْ كَانَ عِندَ ٱللَّهِ عَظِيمًا ٥٣
یٰۤاَیُّهَا
الَّذِیْنَ
اٰمَنُوْا
لَا
تَدْخُلُوْا
بُیُوْتَ
النَّبِیِّ
اِلَّاۤ
اَنْ
یُّؤْذَنَ
لَكُمْ
اِلٰی
طَعَامٍ
غَیْرَ
نٰظِرِیْنَ
اِنٰىهُ ۙ
وَلٰكِنْ
اِذَا
دُعِیْتُمْ
فَادْخُلُوْا
فَاِذَا
طَعِمْتُمْ
فَانْتَشِرُوْا
وَلَا
مُسْتَاْنِسِیْنَ
لِحَدِیْثٍ ؕ
اِنَّ
ذٰلِكُمْ
كَانَ
یُؤْذِی
النَّبِیَّ
فَیَسْتَحْیٖ
مِنْكُمْ ؗ
وَاللّٰهُ
لَا
یَسْتَحْیٖ
مِنَ
الْحَقِّ ؕ
وَاِذَا
سَاَلْتُمُوْهُنَّ
مَتَاعًا
فَسْـَٔلُوْهُنَّ
مِنْ
وَّرَآءِ
حِجَابٍ ؕ
ذٰلِكُمْ
اَطْهَرُ
لِقُلُوْبِكُمْ
وَقُلُوْبِهِنَّ ؕ
وَمَا
كَانَ
لَكُمْ
اَنْ
تُؤْذُوْا
رَسُوْلَ
اللّٰهِ
وَلَاۤ
اَنْ
تَنْكِحُوْۤا
اَزْوَاجَهٗ
مِنْ
بَعْدِهٖۤ
اَبَدًا ؕ
اِنَّ
ذٰلِكُمْ
كَانَ
عِنْدَ
اللّٰهِ
عَظِیْمًا
۟

হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের অনুমতি না দেওয়া হলে তোমরা আহার্য প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা না করে ভোজনের জন্য নবী-গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমাদেরকে আহবান করা হলে তোমরা প্রবেশ কর এবং ভোজন-শেষে তোমরা চলে যাও; তোমরা কথাবার্তায় মশগুল হয়ে পড়ো না। কারণ এ নবীর জন্য কষ্টদায়ক; সে তোমাদেরকে উঠে যাবার জন্য বলতে সংকোচ বোধ করে। কিন্তু আল্লাহ সত্য বলতে সংকোচবোধ করেন না।[১] তোমরা তার পত্নীদের নিকট হতে কিছু চাইলে পর্দার অন্তরাল হতে চাও।[২] এ বিধান তোমাদের এবং তাদের হৃদয়ের জন্য অধিকতর পবিত্র।[৩] তোমাদের কারও পক্ষে আল্লাহর রসূলকে কষ্ট দেওয়া[৪] অথবা তার মৃত্যুর পর তার পত্নীদেরকে বিবাহ করা কখনও সংগত নয়। নিশ্চয় আল্লাহর দৃষ্টিতে এ ঘোরতর অপরাধ। [৫]

[১] এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ এই যে, নবী (সাঃ) যয়নাবের ওলীমাতে সাহাবায়ে কিরামগণকে দাওয়াত করেছিলেন। খাওয়ার পরেও কিছু লোক সেখানেই বসে আপোসে কথাবার্তায় লিপ্ত ছিল। যাতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর বিশেষ কষ্ট অনুভব হচ্ছিল। তিনি লজ্জা-সংকোচবশতঃ তাদেরকে চলে যাওয়ার জন্য কিছুই বলতে পারেননি। (বুখারীঃ তাফসীর সূরা আহযাব) এই আয়াতে দাওয়াতের কিছু রীতি-নীতি বর্ণনা করা হয়েছে; প্রথম রীতি এই যে, আহার্য প্রস্তুত হওয়ার পর দাওয়াতে যাবে, সময়ের পূর্বে উপস্থিত হয়ে ধরনা দিয়ে বসে থাকবে না। দ্বিতীয় রীতি এই যে, খাওয়া শেষ হওয়া মাত্র নিজ নিজ গৃহে ফিরে যাবে। সেখানে বসে বসে পরস্পর কথাবার্তা বলতে থাকবে না। খাওয়ার উল্লেখ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হিসাবে করা হয়েছে। নচেৎ আসল উদ্দেশ্য এই যে, তোমাদেরকে যখনই ডাকা হবে -- খাওয়ার জন্য হোক বা অন্য কোন কাজের জন্য -- অনুমতি ছাড়া গৃহে প্রবেশ করবে না।[২] এই বিধান উমার (রাঃ)-এর বাসনার পরিপ্রেক্ষিতে অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনার নিকট সৎ-অসৎ হরেক রকমের লোক আসা যাওয়া করে, আপনি আপনার পত্নীগণকে পর্দা করার আদেশ দিলে খুবই ভাল হত। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা এই পর্দার হুকুম নাযিল করেন।(বুখারীঃ কিতাবুস স্বালাহ ও তাফসীর সুরা বাক্বারাহ, মুসলিমঃ বাবু ফাযায়েলে ওমর বিন খাত্তাব)[৩] পর্দা বিধিবদ্ধ হওয়ার হিকমত, যুক্তি ও কারণ এই যে, তার মাধ্যমে পুরুষ ও নারী উভয়েই আন্তরিক কুবাসনা থেকে এবং একে অপরের দ্বারা ফিতনাতে পড়া থেকে পবিত্র থাকবে ও রক্ষা পাবে।[৪] তা যে কোন প্রকারে হতে পারে। নবী (সাঃ)-এর গৃহে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা, তাঁর ইচ্ছা ছাড়া তাঁর ঘরে বসে থাকা এবং পর্দা ছাড়া সরাসরি পবিত্র নবী-পত্নীগণের সঙ্গে কথা বলা, এ সকল কর্মও তাঁর কষ্টের কারণ। তাই এ সব থেকে দূরে থাকবে।[৫] এই নির্দেশ ঐ সকল পবিত্র নবী-পত্নীগণের জন্য যাঁরা নবী (সাঃ)-এর মৃত্যুর সময় তাঁর বিবাহ বন্ধনে ছিলেন। পক্ষান্তরে নবী (সাঃ) যে স্ত্রীকে সঙ্গমের পর তালাক দিয়ে বিদায় করে দিয়েছেন, তিনি এই সাধারণ নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত হবেন কি না? উক্ত বিষয়ে দ্বিমত আছে। অনেকে তাঁকেও আদেশের অন্তর্ভুক্ত মনে করেন। আবার অনেকে অন্তর্ভুক্ত মনে করেন না। কিন্তু নবী (সাঃ)-এর এই রকম কোন স্ত্রীই ছিলেন না। অতএব এটা একটা শুধু কল্পিত মাসআলা মাত্র। পক্ষান্তরে ঐ সকল নারীদের এক তৃতীয় শ্রেণী; যাদের সাথে নবী (সাঃ)-এর বিবাহ হয়েছিল; কিন্তু সঙ্গমের পূর্বে তালাক দিয়ে দিয়েছেন, তাদেরকে অন্য লোক বিবাহ করতে পারে -- এতে কোন মতভেদ নেই। (তাফসীর ইবনে কাসীর)