بنصر الله ينصر من يشاء وهو العزيز الرحيم ٥
بِنَصْرِ ٱللَّهِ ۚ يَنصُرُ مَن يَشَآءُ ۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ ٥
بِنَصْرِ
اللّٰهِ ؕ
یَنْصُرُ
مَنْ
یَّشَآءُ ؕ
وَهُوَ
الْعَزِیْزُ
الرَّحِیْمُ
۟ۙ

আল্লাহর সাহায্যে।[১] তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন এবং তিনিই পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

[১] নবী (সাঃ)-এর যুগে পারস্য (ইরান) ও রোম দুটি বৃহৎ শক্তি ছিল। পারসীকরা ছিল অগ্নিপূজক মুশরিক এবং রোমানরা ছিল খ্রিষ্টান (আহলে কিতাব)। মক্কার মুশরিকদের সহানুভূতি ছিল পারসীকদের প্রতি; কারণ তারা উভয়েই গায়রুল্লাহর উপাসক ছিল। পক্ষান্তরে মুসলিমদের সহানুভূতি রোমের খ্রিষ্টান রাজ্যের প্রতি ছিল; কারণ খ্রিষ্টানরাও মুসলিমদের মত (আহলে কিতাব) ছিল এবং অহী ও রিসালাতের প্রতি বিশ্বাসী ছিল। তাদের উভয়ের মধ্যে যুদ্ধ-বিবাদ লেগেই থাকত। নবী (সাঃ)-এর নবুঅত প্রাপ্তির কয়েক বছর পর পারসীকরা খ্রিষ্টানদের উপর বিজয়লাভ করার ফলে মুশরিকদের আনন্দ ও মুসলিমদের দুঃখ হয়। সেই সময় কুরআন কারীমের এই আয়াতগুলি অবতীর্ণ হয়। যাতে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, কয়েক বছরের মধ্যে রোমানরা বিজয়ী হবে এবং বিজয়ীরা পরাজিত ও পরাজিতরা বিজয়ী হয়ে যাবে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে উক্ত ভবিষ্যদ্বাণী অসম্ভব মনে হলেও আল্লাহর উক্ত বাণীর ফলে মুসলিমদের মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। যার ফলে আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) আবু জাহলের সাথে বাজি করে ফেলেন যে, পাঁচ বছরের মধ্যে রোমানরা বিজয়ী হবেই। উক্ত বাজির কথা নবী (সাঃ) জানতে পারলে তিনি বললেন, بِضع (কয়েক) শব্দটি তিন থেকে নয় পর্যন্ত সংখ্যা বুঝাতে ব্যবহার হয়। অতএব পাঁচ বছর বাজির সময় কম করে ফেলেছ, এতে আরো সময় বাড়িয়ে নাও। সুতরাং নবী (সাঃ)-এর কথামত আবু বাকর (রাঃ) তাঁর প্রস্তাবিত সময় আরো কিছু বাড়িয়ে দিলেন। ফল এই দাঁড়ালো যে, রোমানরা নয় বছর সময়ের মধ্যেই (সূরা অবতীর্ণ হওয়ার) ঠিক সপ্তম বছরে পুনরায় পারসীকদের উপর জয়যুক্ত হল। যাতে মুসলিমগণ অনেক অনেক আনন্দিত হয়েছিলেন। (তিরমিযী, তাফসীর সূরা রূম) অনেকে বলেন যে, রোমানদের এই বিজয় ঠিক ঐ সময় হয়েছিল, যখন মুসলিমগণ বদরের যুদ্ধে কাফেরদের উপর বিজয় লাভ করেছিলেন। মুসলিমগণ নিজেরা জয়ী হওয়ার ফলে আনন্দিত হন। রোমানদের এই বিজয় কুরআন কারীমের সত্যতার এক উজ্জ্বল প্রমাণ বহন করে। فِي أدنَى الأرض এর অর্থ হলঃ আরব ভূমির নিকটবর্তী এলাকা যেমন শাম, ফিলিস্তীন ইত্যাদি যেখানে খ্রিষ্টানদের সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল।