অংশীবাদীরা বলবে, ‘আল্লাহ ইচ্ছা করলে আমাদের পিতৃ-পুরুষেরা ও আমরা তিনি ব্যতীত অপর কোন কিছুর উপাসনা করতাম না এবং তাঁর নির্দেশ ব্যতীত আমরা কোন কিছু নিষিদ্ধ করতাম না।’ ওদের পূর্ববর্তিগণও এরূপ করেছে। সুতরাং রসূলদের কর্তব্য সুস্পষ্ট বাণী প্রচার করা ছাড়া আর কি? [১]
[১] এই আয়াতে মহান আল্লাহ মুশরিকদের একটি ভুল ধারণা দূর করেছেন, তারা বলত, 'আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্যের ইবাদত করি, বা তাঁর আদেশ ছাড়াই কিছু জিনিসকে আমরা অবৈধ করে নিই, যদি আমাদের এ সকল কাজ ভুল হয়, তাহলে মহান আল্লাহ তাঁর পরিপূর্ণ কুদরত দিয়ে আমাদেরকে বাধা দেন না কেন? তিনি চাইলে আমরা এ কাজ করতেই পারতাম না। আর যদি বাধা না দেন, তাহলে এর অর্থ এই যে, আমরা যা কিছু করছি সবই তাঁর ইচ্ছায় করছি।' মহান আল্লাহ তাদের উক্ত সন্দেহ এই বলে দূর করেছেন যে, রসূলদের কাজ শুধু পৌঁছে দেওয়া। অর্থাৎ, তোমাদের এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল যে, আল্লাহ তোমাদেরকে বাধা দেননি। মহান আল্লাহ তোমাদেরকে শিরকী কর্মকান্ড হতে কঠিনভাবে বাধা দিয়েছেন। সেই কারণে তিনি প্রত্যেক জাতির নিকট রসূল ও কিতাব পাঠিয়েছেন, আর প্রত্যেক নবী তাঁর জাতিকে প্রথমে শিরক হতে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। যার পরিষ্কার অর্থ হল, আল্লাহ কখনই পছন্দ করেন না যে, মানুষ শিরক করুক। যদি তিনি একাজ পছন্দ করতেন, তাহলে এর প্রতিবাদে রসূল পাঠাতেন কেন? কিন্তু এর পরও যদি তোমরা রসূলদেরকে মিথ্যা মনে করে শিরকের রাস্তা অবলম্বন কর, আর আল্লাহ যদি নিজ ইচ্ছায় তোমাদেরকে বাধা না দিয়ে থাকেন, তাহলে এটা তাঁর হিকমতের এক অংশ। যেহেতু তিনি মানুষকে ইচ্ছা প্রয়োগের পূর্ণ স্বাধীনতা দান করেছেন। কেননা এ ছাড়া তাদের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব ছিল না। (আল্লাহ বলেন,) আমার রসূলগণ আমার বাণী তোমাদের নিকট যথাযথভাবে পৌঁছে দিয়ে বুঝাতে চেষ্টা করেছে যে, তোমরা এই স্বাধীনতার অপব্যবহার করো না। বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানে তা ব্যবহার কর। রসূলদের যা করণীয় তারা তাই করেছে। আর তোমরা শিরক করে স্বাধীনতার অপব্যবহার করেছ, যার শাস্তি হল চিরস্থায়ী আযাব।