يا ايها الذين امنوا لا تتخذوا عدوي وعدوكم اولياء تلقون اليهم بالمودة وقد كفروا بما جاءكم من الحق يخرجون الرسول واياكم ان تومنوا بالله ربكم ان كنتم خرجتم جهادا في سبيلي وابتغاء مرضاتي تسرون اليهم بالمودة وانا اعلم بما اخفيتم وما اعلنتم ومن يفعله منكم فقد ضل سواء السبيل ١
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تَتَّخِذُوا۟ عَدُوِّى وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَآءَ تُلْقُونَ إِلَيْهِم بِٱلْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوا۟ بِمَا جَآءَكُم مِّنَ ٱلْحَقِّ يُخْرِجُونَ ٱلرَّسُولَ وَإِيَّاكُمْ ۙ أَن تُؤْمِنُوا۟ بِٱللَّهِ رَبِّكُمْ إِن كُنتُمْ خَرَجْتُمْ جِهَـٰدًۭا فِى سَبِيلِى وَٱبْتِغَآءَ مَرْضَاتِى ۚ تُسِرُّونَ إِلَيْهِم بِٱلْمَوَدَّةِ وَأَنَا۠ أَعْلَمُ بِمَآ أَخْفَيْتُمْ وَمَآ أَعْلَنتُمْ ۚ وَمَن يَفْعَلْهُ مِنكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَآءَ ٱلسَّبِيلِ ١
یٰۤاَیُّهَا
الَّذِیْنَ
اٰمَنُوْا
لَا
تَتَّخِذُوْا
عَدُوِّیْ
وَعَدُوَّكُمْ
اَوْلِیَآءَ
تُلْقُوْنَ
اِلَیْهِمْ
بِالْمَوَدَّةِ
وَقَدْ
كَفَرُوْا
بِمَا
جَآءَكُمْ
مِّنَ
الْحَقِّ ۚ
یُخْرِجُوْنَ
الرَّسُوْلَ
وَاِیَّاكُمْ
اَنْ
تُؤْمِنُوْا
بِاللّٰهِ
رَبِّكُمْ ؕ
اِنْ
كُنْتُمْ
خَرَجْتُمْ
جِهَادًا
فِیْ
سَبِیْلِیْ
وَابْتِغَآءَ
مَرْضَاتِیْ
تُسِرُّوْنَ
اِلَیْهِمْ
بِالْمَوَدَّةِ ۖۗ
وَاَنَا
اَعْلَمُ
بِمَاۤ
اَخْفَیْتُمْ
وَمَاۤ
اَعْلَنْتُمْ ؕ
وَمَنْ
یَّفْعَلْهُ
مِنْكُمْ
فَقَدْ
ضَلَّ
سَوَآءَ
السَّبِیْلِ
۟

হে বিশ্বাসীগণ! আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না।[১] তোমরা তাদের কাছে বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও,[২] অথচ তারা তোমাদের নিকট যে সত্য এসেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে, রসূলকে এবং তোমাদেরকে বহিষ্কৃত করেছে এই কারণে যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহকে বিশ্বাস কর।[৩] যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টিলাভের জন্য আমার পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে বহির্গত হয়ে থাক (তাহলে তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না)।[৪] তোমরা গোপনে তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তোমরা যা গোপন কর এবং তোমরা যা প্রকাশ কর, তা আমি সম্যক অবগত। তোমাদের যে কেউ এটা করে, সে তো সরল পথ হতে বিচ্যুত হয়। [৫]

[১] মক্কার কাফেরগণ এবং নবী (সাঃ)-এর মাঝে হুদাইবিয়াতে যে সন্ধিচুক্তি হয়েছিল, মক্কার কাফেররা তা ভঙ্গ করল। এই জন্য নবী (সাঃ)ও গোপনে মুসলিমদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিলেন। হাত্বেব ইবনে আবী বালতাআ' (রাঃ) বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী একজন মুহাজির সাহাবী ছিলেন। কুরাইশদের সাথে তাঁর কোন আত্মীয়তা ছিল না। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি মক্কাতেই ছিল। তিনি ভাবলেন যে, মক্কার কুরাইশদেরকে যদি নবী (সাঃ)-এর প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়ে দিই, তাহলে এই অনুগ্রহের বদলায় তারা আমার সন্তান-সন্ততি ও মাল-ধনের হিফাযত করবে। তাই তিনি এই সংবাদটা লিখিত আকারে এক মহিলার মাধ্যমে মক্কার কাফেরদের নিকট প্রেরণ করলেন। এদিকে অহীর মাধ্যমে নবী করীম (সাঃ)-কে ব্যাপারটা জানিয়ে দেওয়া হয়। তাই তিনি আলী, মিকদাদ এবং যুবায়ের (রাঃ)-দেরকে বললেন, "যাও, 'রওয্বাতু খাখ' নামক স্থানে মক্কাগামিনী একজন মহিলাকে পাবে; তার কাছে আছে একটি পত্র, সেটি উদ্ধার করে নিয়ে আসবে।" তাঁরা গিয়ে তাঁর কাছ থেকে পত্র উদ্ধার করে নিয়ে এলেন, যা সে তার মাথার চুলের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিল। তিনি হাত্বেব (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন যে, "তুমি এ কাজ কেন করেছ?" তিনি বললেন, 'আমি এ কাজ কুফরী এবং দ্বীন থেকে বিমুখ হয়ে যাওয়ার কারণে করিনি, বরং অন্যান্য মুহাজির সাহাবীদের আত্মীয়-স্বজন মক্কাতে বিদ্যমান থাকায় তারা এঁদের (মুহাজির সাহাবীদের) সন্তান-সন্ততির হিফাযত করে। আমার সেখানে কোন আত্মীয়-স্বজন নেই। তাই আমি চিন্তা করলাম যে, আমি যদি তাদের কিছু জানিয়ে দিই, তবে তারা আমার অনুগ্রহের মূল্য দিয়ে আমার সন্তানদের হিফাযত করবে।' রসূল (সাঃ) এ কথা সত্য জেনে তাঁকে কিছুই বললেন না। তবুও আল্লাহ সতর্কতা স্বরূপ এই আয়াত অবতীর্ণ করলেন। যাতে আগামীতে কোন মু'মিন কোন কাফেরের সাথে যেন এই ধরনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক না রাখে। (বুখারী সূরা মুমতাহিনার তাফসীর, মুসলিম ফাযায়েলে সাহাবা অধ্যায়)[২] অর্থাৎ, নবী (সাঃ)-এর এই প্রস্তুতির খবর তাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাদের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ক স্থাপন করতে চাও?[৩] যখন তাদের তোমাদের সাথে এবং সত্যের সাথে এই ধরনের আচরণ, তখন তোমাদের জন্য কি এটা উচিত যে, তোমরা তাদের সাথে ভালবাসা রাখবে ও সহানুভূতি দেখাবে?[৪] বন্ধনীর মাঝে এটা শর্তের জওয়াব; যা আয়াতে ঊহ্য আছে।[৫] অর্থাৎ, আমার এবং তোমাদের শত্রুদের সাথে ভালবাসার সম্পর্ক জুড়া এবং তাদের কাছে গোপনে পত্র ও বার্তা প্রেরণ করা হল ভ্রষ্টতার পথ, যা অবলম্বন করা কোন মুসলিমের উচিত নয়।