অতঃপর যখন তাদের উপত্যকার দিকে তারা মেঘ আসতে দেখল, তখন তারা বলতে লাগল, ‘ওটা তো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দান করবে।’ [১] (হূদ বলল,) ‘বরং ওটাই তো তা, যা তোমরা ত্বরান্বিত করতে চেয়েছ;[২] এক ঝড়, যাতে রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।[৩]
[১] দীর্ঘদিন ধরে তাদের ওখানে বৃষ্টি হয়নি। আকাশে উত্থিত মেঘমালা দেখে আনন্দিত হল যে, এবার বৃষ্টি হবে। মেঘকে عارض (দিগন্তপ্রসারী) এই কারণে বলা হয় যে, তা আকাশের দিগন্তে প্রসারিত হয়।[২] এ কথা হূদ (আঃ) তাদেরকে বললেন যে, এটা শুধু মেঘ নয়, যেমনটি তোমরা ভাবছ। বরং এটা সেই আযাব, যার সত্বর আসার দাবি তোমরা করছিলে।[৩] অর্থাৎ, যে বাতাস দ্বারা এই জাতির ধ্বংস সাধিত হয়, তা ঐ মেঘের সাথেই উঠেছিল এবং তা সেখান থেকেই বের হয়েছিল। আল্লাহর ইচ্ছায় তাদেরকে এবং তাদের প্রত্যেক জিনিসকে বিনাশপ্রাপ্ত করে দেওয়া হল। এই জন্য হাদীসে এসেছে যে, একদা আয়েশা (রাঃ) রসূল (সাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, লোকেরা মেঘ দেখে আনন্দিত হয় যে, বৃষ্টি হবে। কিন্তু এর বিপরীত আপনার মুখমন্ডলে চিন্তা ও অস্থিরতার লক্ষণসমূহ লক্ষ্য করা যায়? তিনি বললেন, "আয়েশা! এই মেঘে যে আযাব নেই তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে? এক জাতিকে তো বাতাসের আযাব দ্বারা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তারাও তো মেঘ দেখে বলেছিল, এই মেঘ আমাদের উপর বৃষ্টি বষর্ণ করবে।" (বুখারীঃ তাফসীর সূরা আহক্বাফ, মুসলিমঃ কিতাবুস্ স্বালাত) অন্য এক বর্ণনায় এসেছে যে, যখন প্রবল হাওয়া চলত, তখন তিনি (সাঃ) এই দু'আ পড়তেন। (اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا فِيهَا وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا فِيهَا وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ) (অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি এর কল্যাণ, এর মধ্যে যা আছে তার কল্যাণ এবং যার সাথে এ প্রেরিত হয়েছে তার কল্যাণ তোমার নিকট প্রার্থনা করছি। আর এর অনিষ্ট, এর মধ্যে যা আছে তার অনিষ্ট এবং যার সাথে এ প্রেরিত হয়েছে তার অনিষ্ট হতে পানাহ চাচ্ছি।) আর যখন আকাশে মেঘ ঘন হয়ে যেত, তখন তাঁর রঙ পরিবর্তন হয়ে যেত, তাঁর উপর ভয়ের ভাব সৃষ্টি হত এবং এর ফলে তিনি অস্থির হয়ে পড়তেন। কখনো বাইরে আসতেন, আবার কখনো ভিতরে প্রবেশ করতেন। কখনো আগে যেতেন, আবার কখনো পিছনে। অতঃপর যখন বৃষ্টি বর্ষণ হত, তখন তিনি স্বস্তি লাভ করতেন। (মুসলিম, উক্ত অধ্যায়)