الله نزل احسن الحديث كتابا متشابها مثاني تقشعر منه جلود الذين يخشون ربهم ثم تلين جلودهم وقلوبهم الى ذكر الله ذالك هدى الله يهدي به من يشاء ومن يضلل الله فما له من هاد ٢٣
ٱللَّهُ نَزَّلَ أَحْسَنَ ٱلْحَدِيثِ كِتَـٰبًۭا مُّتَشَـٰبِهًۭا مَّثَانِىَ تَقْشَعِرُّ مِنْهُ جُلُودُ ٱلَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ ثُمَّ تَلِينُ جُلُودُهُمْ وَقُلُوبُهُمْ إِلَىٰ ذِكْرِ ٱللَّهِ ۚ ذَٰلِكَ هُدَى ٱللَّهِ يَهْدِى بِهِۦ مَن يَشَآءُ ۚ وَمَن يُضْلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِنْ هَادٍ ٢٣
اَللّٰهُ
نَزَّلَ
اَحْسَنَ
الْحَدِیْثِ
كِتٰبًا
مُّتَشَابِهًا
مَّثَانِیَ ۖۗ
تَقْشَعِرُّ
مِنْهُ
جُلُوْدُ
الَّذِیْنَ
یَخْشَوْنَ
رَبَّهُمْ ۚ
ثُمَّ
تَلِیْنُ
جُلُوْدُهُمْ
وَقُلُوْبُهُمْ
اِلٰی
ذِكْرِ
اللّٰهِ ؕ
ذٰلِكَ
هُدَی
اللّٰهِ
یَهْدِیْ
بِهٖ
مَنْ
یَّشَآءُ ؕ
وَمَنْ
یُّضْلِلِ
اللّٰهُ
فَمَا
لَهٗ
مِنْ
هَادٍ
۟

আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন উত্তম বাণী সম্বলিত এমন এক গ্রন্থ, যাতে পারস্পরিক সাদৃশ্যপূর্ণ একই কথা নানাভাবে বার বার বলা হয়েছে।[১] এতে যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে[২] তাদের চামড়ার (লোম) খাড়া হয়, অতঃপর তাদের দেহ-মন আল্লাহর স্মরণের প্রতি নরম হয়ে যায়।[৩] এটিই আল্লাহর পথনির্দেশ, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দিয়ে পথপ্রদর্শন করেন। আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই।

[১] أَحْسَنُ الْحَدِيْثِ (উত্তম বাণী)এর অর্থ হল কুরআন কারীম। متشابها এর অর্থ, কুরআনের শ্রুতিমধুর ও সুখপাঠ্য বাণী, তার সাহিত্য-শৈলী, শব্দালঙ্কার, অর্থ-সত্যতা ইত্যাদি গুণাবলীতে পারস্পরিক সাদৃশ্যপূর্ণ। অথবা কুরআন পূর্ব আসমানী গ্রন্থসমূহের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। অর্থাৎ, কুরআন অন্য সকল আসমানী কিতাবের অনুরূপ। مَثَانِيَ অর্থাৎ, এই কুরআনে বর্ণিত ইতিহাস ও কাহিনী, আদেশ-উপদেশ ও বিধি-বিধানগুলিকে বারবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

[২] কারণ, তারাই ঐ সকল আযাব ও শাস্তির ধমক, সতর্কবাণী বুঝতে পারে, যা অবাধ্যদের জন্য তাতে বর্ণনা করা হয়েছে।

[৩] অর্থাৎ, যখন আল্লাহর করুণা, ক্ষমা ও অনুগ্রহ লাভের আশা তাদের মনে জাগে তখন তাদের অন্তর নরম হয়ে যায় এবং আল্লাহর স্মরণে মগ্ন হয়ে পড়ে। ক্বাতাদা (রঃ) বলেন "এতে আল্লাহর আওলিয়াগণের গুণাবলী বর্ণনা করা হয়েছে; আল্লাহর ভয়ে তাঁদের অন্তর কম্পিত হয়, তাঁদের চক্ষু অশ্রুসিক্ত হয়ে যায় এবং আল্লাহর যিকর দ্বারা তাঁরা মনে শান্তি পান। যিকর করতে গিয়ে তাঁরা নেশাগ্রস্ত মাতালদের মত এবং সংজ্ঞাহীন বেহুঁশের মত হয়ে যান না। (যেমন তাঁরা নেচেও উঠেন না।) কারণ এসব হল বিদআতীদের আচরণ এবং তাতে শয়তানের হাত থাকে। (ইবনে কাসীর) যেমন বর্তমানেও বিদআতীদের কাওয়ালী-গান বা যিকরের আসর অনুরূপ শয়তানী কার্যকলাপে পরিপূর্ণ; যাতে বিভিন্ন অবস্থার তারা উন্মত্ততা, মূর্ছা, অচৈতন্য, মোহিত, আত্মহারা, বিভোর, ধ্যানমগ্ন, বেহুঁশী, মস্তী ইত্যাদি নাম দিয়ে থাকে। ইমাম ইবনে কাসীর (রহঃ) বলেন, এই বিষয়ে মু'মিনগণ কাফেরদের থেকে কয়েক দিক দিয়ে স্বতন্ত্র। প্রথম এই যে, মু'মিনগণের শ্রাব্য বস্তু হল কুরআন কারীম, আর কাফেরদের শ্রাব্য বস্তু হল নির্লজ্জ গায়িকাদের গান-বাজনা। (যেমন বিদআতীদের শ্রাব্য বস্তু হল শিরকী অতিরঞ্জনমূলক না'ত, গজল ও কাওয়ালী গান।) দ্বিতীয় এই যে, মু'মিনগণ কুরআন শ্রবণ করে আদব ও ভীতি, আশা ও মহব্বত এবং অনুধাবন ও উপলব্ধির সাথে ক্রন্দন করেন এবং সিজদায় লুটিয়ে পড়েন। পক্ষান্তরে কাফেররা হৈ-হাল্লা করে এবং খেলাধূলায় ব্যস্ত থাকে। তৃতীয় এই যে, মু'মিনগণ কুরআন শ্রবণের সময় আদব ও বিনয় প্রকাশ করেন; যেমন সাহাবায়ে কিরামগণের বরকতময় অভ্যাস ছিল। যার ফলে তাঁদের দেহ শিউরে উঠত এবং তাঁদের অন্তর আল্লাহর প্রতি আসক্ত হয়ে যেত। (ইবনে কাসীর)