وَرَفَعَ
اَبَوَیْهِ
عَلَی
الْعَرْشِ
وَخَرُّوْا
لَهٗ
سُجَّدًا ۚ
وَقَالَ
یٰۤاَبَتِ
هٰذَا
تَاْوِیْلُ
رُءْیَایَ
مِنْ
قَبْلُ ؗ
قَدْ
جَعَلَهَا
رَبِّیْ
حَقًّا ؕ
وَقَدْ
اَحْسَنَ
بِیْۤ
اِذْ
اَخْرَجَنِیْ
مِنَ
السِّجْنِ
وَجَآءَ
بِكُمْ
مِّنَ
الْبَدْوِ
مِنْ
بَعْدِ
اَنْ
نَّزَغَ
الشَّیْطٰنُ
بَیْنِیْ
وَبَیْنَ
اِخْوَتِیْ ؕ
اِنَّ
رَبِّیْ
لَطِیْفٌ
لِّمَا
یَشَآءُ ؕ
اِنَّهٗ
هُوَ
الْعَلِیْمُ
الْحَكِیْمُ
۟

আর ইউসুফ তার পিতা-মাতাকে সিংহাসনে বসাল[১] এবং তারা সবাই তার সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়ল।[২] সে বলল, ‘হে আমার পিতা! এটাই আমার পূর্বেকার স্বপ্নের ব্যাখ্যা;[৩] আমার প্রতিপালক তা বাস্তবে পরিণত করেছেন। আর তিনি আমাকে কারাগার হতে মুক্ত করে[৪] এবং শয়তানের আমার ও আমার ভাইদের মাঝে সম্পর্ক নষ্ট করার পরও[৫] আপনাদেরকে মরু অঞ্চল হতে এখানে এনে দিয়ে[৬] আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আমার প্রতিপালক যা ইচ্ছা তা নিপুণতার সাথে করে থাকেন, তিনি তো সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।

[১] কতিপয় ব্যাখ্যাকরীদের মত যে, ইউসুফ (আঃ)-এর মাতা বলতে বিমাতা এবং আপন খালা ছিলেন। কেননা তাঁর আপন মাতা বিনয়্যামীনের জন্মের পর মারা গিয়েছিলেন। ইয়াকূব (আঃ) তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর বোনকে বিবাহ করেছিলেন। উক্ত খালাই ইয়াকূব (আঃ)-এর সাথে মিসর গিয়েছিলেন। (ফাতহুল কাদীর) কিন্তু ইমাম ইবনে জারীর ত্বাবারী এর বিপরীত বলেছেন যে, ইউসুফ (আঃ)-এর নিজস্ব মাতা মারা যাননি, তিনিই ইয়াকূব (আঃ)-এর সঙ্গে ছিলেন।

[২] কেউ কেউ এর তরজমা করেছেন যে, তারা সবাই আদব ও সম্মান করতঃ তার সামনে অবনত হল। কিন্তু ﴿وَخَرُّوْا لَهُ سُجَّدًا﴾ এর শব্দগুলো প্রমাণ করছে যে, তারা ইউসুফ (আঃ)-এর সামনে মাটিতে সিজদাবনত হয়েছিলেন। অর্থাৎ সিজদার অর্থ এখানে সিজদাই। তবে এই সিজদা সম্মানের সিজদা, ইবাদতের সিজদা নয়। আর সম্মানের (তা'যীমী) সিজদা ইয়াকূব (আঃ)-এর শরীয়তে জায়েয ছিল। ইসলামে শিরকের দরজা বন্ধ করার জন্য সম্মানসূচক সিজদাকেও হারাম ঘোষণা করা হয়েছে, সুতরাং এখন সম্মানসূচক সিজদাও কারো জন্য বৈধ নয়। ("মুআয যখন শাম (দেশ) থেকে ফিরে এলেন তখন নবী (সাঃ)-কে সিজদা করলেন। আল্লাহর রসূল (সাঃ) বললেন, "একি মুআয?" মুআয বললেন, 'আমি শাম গিয়ে দেখলাম, সে দেশের লোকেরা তাদের যাজক ও পাদ্রীগণকে সিজদা করছে। তাই আমি মনে মনে চাইলাম যে, আমরাও আপনার জন্য সিজদা করব।' তা শুনে তিনি বললেন "খবরদার! তা করো না। কারণ, আমি যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য সিজদা করতে কাউকে আদেশ করতাম, তাহলে মহিলাকে আদেশ করতাম, সে যেন তার স্বামীকে সিজদা করে।) (ইবনে মাজাহ ১৮৫৩ নং, আহমাদ ৪/৩৮১, ইবনে হিব্বান ৪১৭১ নং, হাকেম ৪/১৭২, বায্যার ১৪৬১নং, সিলসিলাহ সহীহাহ ১২০৩নং)

[৩] অর্থাৎ ইউসুফ (আঃ) যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, এসব পরীক্ষার সম্মুখীন হওয়ার পর শেষ পর্যন্ত তার এই তা'বীর (ব্যাখ্যা) সামনে এল যে, মহান আল্লাহ তাঁকে রাজ সিংহাসনে বসালেন এবং পিতা-মাতা সহ সকল ভায়েরা তাঁকে সিজদা করলেন।

[৪] আল্লাহর অনুগ্রহসমূহের মধ্যে কূপ থেকে বের করার কথা উল্লেখ করলেন না, যেন তাতে তাঁর ভায়েরা লজ্জিত না হন, এ হল নববী চরিত্র।

[৫] এটাও উদার চরিত্রের একটি নমুনা যে, ভাইদেরকে একটুও দোষারোপ না করে শয়তানকে উক্ত কীর্তিকলাপের কারণ বানালেন।

[৬] মিসরের মত সভ্য এলাকার তুলনায় কানআন একটি মরুভূমির মত এলাকা, তাই তিনি بَدْو (মরু অঞ্চল) শব্দ ব্যবহার করলেন।

আপনার Quran.com অভিজ্ঞতা সর্বাধিক করুন!
এখনই আপনার সফর শুরু করুন:

%