আর যেখানে পাও, তাদেরকে হত্যা কর এবং যেখান থেকে তোমাদেরকে বহিষ্কার করেছে, তোমরাও সেখান থেকে তাদেরকে বহিষ্কার কর। ফিতনা (অশান্তি, শিরক বা ধর্মদ্রোহিতা) হত্যা অপেক্ষাও গুরুতর।[১] আর মাসজিদুল হারামের (কা’বা শরীফের) নিকট তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করো না; যতক্ষণ না তারা সেখানে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে। যদি তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তবে তোমরা তাদের হত্যা কর।[২] এটাই তো অবিশ্বাসীদের প্রতিফল।
[১] মক্কায় মুসলিমরা যেহেতু দুর্বল ও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল, তাই কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করা নিষেধ ছিল। হিজরতের পর মুসলিমদের সমস্ত শক্তি মদীনায় একত্রিত হলে তাদেরকে জিহাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে তিনি কেবল তাদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করতেন, যারা অগ্রিম মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসত। এরপর এটাকে আরো সম্প্রসারিত করা হয় এবং মুসলিমরা প্রয়োজন অনুযায়ী কাফেরদের অঞ্চলে গিয়েও জিহাদ করেন। কুরআন কারীমে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করা হয়েছে। এই জন্য নবী করীম (সাঃ) স্বীয় সৈন্যদের তাকীদ করতেন যে, খিয়ানত ও অঙ্গীকার ভঙ্গ করো না। আঙ্গিক বিকৃতি ঘটায়ো না। শিশু, মহিলা এবং গির্জায় উপাসনায় মগ্ন উপাসক বা পুরোহিতদেরকে হত্যা করো না। অনুরূপ বৃক্ষাদি জ্বালাবে না এবং বিনা উদ্দেশ্যে পশুদের হত্যা করবে না। (ইবনে কাসীর-মুসলিম ইত্যাদি)
{حَيْثُ ثَقِفْتُمُوْهُمْ} "যেখানে পাও তাদেরকে হত্যা কর" এর অর্থ হল, যখনই তাদেরকে হত্যা করতে সক্ষম হবে, তখনই তাদেরকে হত্যা কর। (আইসারুততাফাসীর)
{مِنْ حَيْثُ أَخْرَجُوْكُم} অর্থাৎ, যেভাবে কাফেররা তোমাদেরকে মক্কা থেকে বের করেছিল, সেভাবে তোমরাও তাদেরকে মক্কা থেকে বহিষ্কার কর। তাইতো মক্কা বিজয়ের দিন যারা ইসলাম গ্রহণ করেনি, চুক্তির সময় সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাদেরকে সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। 'ফিৎনা'র অর্থ, কুফরী ও শিরক। এটা হত্যার চেয়েও কঠিন (বড় অপরাধ)। তাই এর মূলোৎপাটনের উদ্দেশ্যে জিহাদ থেকে বিমুখ হওয়া উচিত নয়।
[২] 'হারাম' সীমানায় যুদ্ধ করা নিষেধ। কিন্তু কাফেররা যদি 'হারাম'-এর মর্যাদার খেয়াল না রাখে, তাহলে তোমাদেরও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অনুমতি রয়েছে।