তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ রাতকে দিনে এবং দিনকে রাতে প্রবেশ করান?[১] তিনি চন্দ্রসূর্যকে নিয়মাধীন করেছেন, প্রত্যেকে এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত আপন পথে আবর্তন করে;[২] নিশ্চয় আল্লাহ তোমরা যা কর, সে সম্বন্ধে অবহিত।
[১] অর্থাৎ, রাতের কিছু অংশ নিয়ে দিনে ঢুকিয়ে দেন, যার ফলে দিন বড় ও রাত ছোট হয়; যেমন গ্রীষ্মকালে ঘটে থাকে এবং দিনের কিছু অংশ নিয়ে রাতে ঢুকিয়ে দেন, ফলে রাত বড় ও দিন ছোট হয় যেমন; শীতকালে ঘটে।
[২] 'নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত' উদ্দেশ্য কিয়ামত পর্যন্ত। অর্থাৎ চন্দ্র ও সূর্যের উদয় ও অস্ত যাওয়ার যে প্রাত্যহিক নিয়ম আল্লাহ তাআলা নির্ধারিত করেছেন, তা কিয়ামত পর্যন্ত অনুরূপই বিদ্যমান থাকবে। এর দ্বিতীয় অর্থ হল যে, "এক নির্দিষ্ট কক্ষ পর্যন্ত" অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা উভয়ের চলাফেরার জন্য এক নির্দিষ্ট স্থান ও কক্ষপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন যেখানে তাদের সফর শেষ হয় এবং দ্বিতীয় দিন পুনরায় সেখান থেকে আরম্ভ করে প্রথম স্থানে এসে যায়। একটি হাদীস দ্বারাও এই অর্থেরই সমর্থন হয়; একদা নবী (সাঃ) আবু যার্র (রাঃ)-কে বললেন, তুমি কি জানো এই সূর্য কোথায় অস্ত যায়? উত্তরে আবূ যার্র বললেন, 'আল্লাহ ও তাঁর রসূল ভাল জানেন।' তিনি বললেন, আল্লাহর আরশ হল তার শেষ স্থান। সেখানে যায় এবং আরশের নিচে সিজদা করে এবং নিজ প্রতিপালকের কাছে পুনরায় সেখান থেকে উদিত হওয়ার অনুমতি চায়। এমন সময় আসবে যখন তাকে বলা হবে, 'তুমি যে দিক থেকে এসেছ ঐ দিকেই ফিরে যাও।' তখন সে পূর্ব দিক থেকে উদিত না হয়ে পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে।" যেমন কিয়ামতের নিকটবর্তী নিদর্শনাবলীর ব্যাপারে বলা হয়েছে। (বুখারীঃ তাওহীদ অধ্যায়, মুসলিমঃ ঈমান অধ্যায়) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, 'সূর্য চরকার মত, দিনের বেলায় আকাশে আপন কক্ষপথে চলে, অতঃপর যখন অস্তমিত হয়, তখন রাতের বেলায় পৃথিবীর নিচে (অপর প্রান্তে) আপন কক্ষপথে চলতে থাকে এবং পুনরায় পূর্ব থেকে উদিত হয়। চাঁদের ব্যাপারও অনুরূপ।' (ইবনে কাসীর)