তিনি তোমাদেরকে একই ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন।[১] অতঃপর তিনি তা হতে তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন।[২] তিনি তোমাদের জন্য আট প্রকার পশু অবতীর্ণ করেছেন।[৩] তিনি তোমাদের মাতৃগর্ভের তিন প্রকার অন্ধকারে[৪] পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি[৫] করেন। তিনিই আল্লাহ তোমাদের প্রতিপালক, সার্বভৌমত্ব তাঁরই, তিনি ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। অতএব তোমরা মুখ ফিরিয়ে কোথায় চলেছ? [৬]
[১] অর্থাৎ, আদম (আঃ) থেকে, তাঁকে আল্লাহ তাআলা নিজ হাত দ্বারা তৈরী করেছিলেন এবং তাঁর মধ্যে নিজ রূহ ফুঁকেছিলেন।[২] অর্থাৎ, হাওয়াকে আদম (আঃ)-এর বামপার্শ্বের অস্থি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং এটাও তাঁর কুদরতের বড় কৃতিত্ব। কারণ হাওয়া ছাড়া কোন নারীর সৃষ্টি কোন পুরুষের অস্থি থেকে হয়নি। ফলে হাওয়ার সৃষ্টি সাধারণ নিয়ম-বহির্ভূত এবং আল্লাহর মহাশক্তির একটি নিদর্শন।[৩] এই আয়াতে সেই চার প্রকার চতুষ্পদ জন্তুর (ছাগল, ভেঁড়া, উট, গরু) বর্ণনা হয়েছে, যা নর ও মাদা মিলে আট প্রকার হচ্ছে, যার বর্ণনা সূরা আনআমের ৬:১৪৩-১৪৪ নং আয়াতে পার হয়ে গেছে। أَنْزَلَ خَلَقَ (সৃষ্টির) অর্থে ব্যবহার হয়েছে। অথবা এক বর্ণনায় এসেছে যে, আল্লাহ তাআলা প্রথমে এই সকল চতুষ্পদ জন্তুকে জান্নাতে সৃষ্টি করেছিলেন এবং পরে তাদেরকে অবতীর্ণ করেন। সুতরাং এক্ষেত্রে إنزال এর মূল অর্থ ধরতে হবে। অথবা أَنْزَلَ শব্দ এখানে রূপক অর্থে ব্যবহার হয়েছে। কারণ এসব চতুষ্পদ জন্তু ঘাস-পাতা ছাড়া বাঁচতে পারে না। আর ঘাস-পাতার জন্য আকাশ থেকে অবতীর্ণ পানি নিতান্ত জরুরী। তাই মূলতঃ চতুষ্পদ জন্তু আকাশ থেকেই অবতীর্ণ হয়েছে বলা যায়। (ফাতহুল ক্বাদীর)[৪] প্রথম অন্ধকার মায়ের পেট, দ্বিতীয় গর্ভাশয়, তৃতীয় ঝিল্লী; সেই পাতলা আবরণ যাতে বাচ্চা জড়ানো থাকে।[৫] অর্থাৎ, ভ্রূণ মাতৃগর্ভে বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে, প্রথমে বীর্য, অতঃপর রক্তপিন্ড, অতঃপর গোশতপিন্ড, অতঃপর অস্থির গঠন, তার উপর মাংসের আবরণ। এই সকল স্তর অতিক্রম করার পর পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরী হয়।[৬] অথবা কেন তোমরা হক থেকে বাতিলের দিকে এবং হিদায়াত থেকে ভ্রষ্টতার দিকে ফিরে চলেছ?