নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, আমানত তার মালিককে প্রত্যর্পণ করবে।[১] আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার-কার্য পরিচালনা করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে।[২] আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন, তা কত উৎকৃষ্ট![৩] নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
[১] অধিকাংশ মুফাসসিরীনদের নিকট এই আয়াত উসমান বিন ত্বালহা (রাঃ)-এর ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। তিনি বংশগতভাবেই কা'বা শরীফের তত্ত্বাবধায়ক এবং তার চাবি-রক্ষক ছিলেন। তিনি হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। মক্কা বিজয়ের পর রসূল (সাঃ) কা'বা শরীফে উপস্থিত হয়ে তওয়াফ ইত্যাদি সেরে নিয়ে উসমান বিন ত্বালহা (রাঃ)-কে ডেকে পাঠালেন। অতঃপর তাঁর হাতে কা'বা শরীফের চাবি হস্তান্তর করে বললেন, এগুলো তোমার চাবি। আজকের দিন হল, অঙ্গীকার পূরণ ও পুণ্যের দিন। (ইবনে কাসীর) কোন বিশেষ কারণে আয়াত অবতীর্ণ হলেও তার নির্দেশ সাধারণ এবং এতে সাধারণ ব্যক্তিবর্গ ও শাসকশ্রেণী উভয়কেই সম্বোধন করা হয়েছে। উভয়কে তাকীদ করা হয়েছে যে, আমানতসমূহ তাদের প্রাপকদের নিকট পৌঁছে দাও। এতে প্রথমতঃ এমন আমানতও শামিল যা কারো কাছে হিফাযতের জন্য রাখা হয়। এতে খিয়ানত না করে চাওয়ার সময় হিফাযতের সাথে যেন তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। দ্বিতীয়তঃ পদ ও দায়িত্ব যোগ্য লোকদেরকেই যেন দেওয়া হয়। কেবল রাজনৈতিক ভিত্তিতে অথবা বংশ, দেশ ও জাতিগত ভিত্তিতে কিংবা আত্মীয়তা ও কোটা ভিত্তিক নিয়মে পদ ও দায়িত্ব দেওয়া এই আয়াতের পরিপন্থী।
[২] এতে বিশেষ করে শাসকদেরকে ন্যায়পরায়ণতা বজায় রাখার এবং সুবিচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একটি হাদীসে এসেছে যে, "বিচারক যতক্ষণ পর্যন্ত যুলুম করে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তার সাথে থাকেন। অতঃপর সে যখন যুলুম শুরু করে দেয়, তখন আল্লাহ তাকে তার নিজের উপর ছেড়ে দেন।" (ইবনে মাজা)
[৩] অর্থাৎ, আমানতসমূহ তাদের প্রাপকদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া এবং ন্যায়পরায়ণতা ও সুবিচার বজায় রাখার উপদেশ।