وَمِنْ
حَیْثُ
خَرَجْتَ
فَوَلِّ
وَجْهَكَ
شَطْرَ
الْمَسْجِدِ
الْحَرَامِ ؕ
وَحَیْثُ
مَا
كُنْتُمْ
فَوَلُّوْا
وُجُوْهَكُمْ
شَطْرَهٗ ۙ
لِئَلَّا
یَكُوْنَ
لِلنَّاسِ
عَلَیْكُمْ
حُجَّةٌ ۙۗ
اِلَّا
الَّذِیْنَ
ظَلَمُوْا
مِنْهُمْ ۗ
فَلَا
تَخْشَوْهُمْ
وَاخْشَوْنِیْ ۗ
وَلِاُتِمَّ
نِعْمَتِیْ
عَلَیْكُمْ
وَلَعَلَّكُمْ
تَهْتَدُوْنَ
۟ۙۛ

আর তুমি যেখান হতেই বের হও না কেন, মাসজিদুল হারামের (কা’বা শরীফের) দিকে মুখ ফেরাও এবং যেখানেই থাক না কেন, সেই (কা’বার) দিকেই মুখ ফেরাও।[১] যাতে তাদের মধ্যে সীমালঘংনকারিগণ[২] ছাড়া অন্য কোন লোক তোমাদের সাথে বিতর্ক না করতে পারে।[৩] সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো না,[৪] বরং একমাত্র আমাকেই ভয় কর, যাতে আমি আমার অনুগ্রহ তোমাদেরকে পরিপূর্ণরূপে দান করতে পারি এবং যাতে তোমরা সৎপথ পেতে পার।

[১] ক্বিবলার দিকে মুখ ফিরানোর নির্দেশের তিনবার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। হয় এর উপর তাকীদ ও এর গুরুত্ব বর্ণনা করার জন্য অথবা এই জন্য যে, এটা কোন বিধানকে রহিত ঘোষণা করার প্রথম পরীক্ষা ছিল। তাই মনের মধ্যেকার সন্দেহ-সংশয় ও খুঁতখুঁতে ভাবকে দূর করার জন্য জরুরী ছিল যে, তার বারবার পুনরাবৃত্তি করে মানুষের অন্তরে সুদৃঢ় করে দেওয়া হোক। আবার এও হতে পারে যে, একাধিক কারণের জন্য এ রকম করা হয়েছে। এক কারণ তো এই ছিল যে, নবী করীম (সাঃ)-এর এটা আন্তরিক ইচ্ছা ও আশা ছিল। তা বর্ণনা করার জন্য এ কথা বলা হয়েছে। দ্বিতীয় কারণ, প্রত্যেক ধর্মাবলম্বি ও দাওয়াতদাতার নিজস্ব পৃথক কেন্দ্র (ক্বিবলা) ছিল, তা বর্ণনা করে এ কথার পুনরাবৃত্তি হয়। তৃতীয় কারণ, বিরোধীপক্ষের অভিযোগসমূহের খন্ডনের জন্য তৃতীয়বার তা পুনরুক্ত হয়। (ফাতহুল ক্বাদীর)

[২] এখানে {ظَلَمُوْا} (সীমালংঘনকারী যালেম) থেকে বিদ্বেষ পোষণকারীদেরকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, আহলে-কিতাবদের মধ্যে যারা কট্টর বিদ্বেষী, তারা জানে যে, শেষ নবীর ক্বিবলা কা'বাগৃহ হবে, তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র শত্রুতাবশতঃ বলবে যে, 'বায়তুল মুক্বাদ্দাসের পরিবর্তে কা'বাকে ক্বিবলা বানিয়ে মুহাম্মাদ শেষ পর্যন্ত স্বীয় বাপ-দাদার ধর্মের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে।' আবার কারো কাছে সীমালংঘনকারী বলে উদ্দেশ্য হল মক্কার মুশরিকগণ।

[৩] অর্থাৎ, যাতে আহলে-কিতাব বলতে না পারে যে, আমাদের কিতাবে তো ওদের ক্বিবলা কা'বা শরীফ বলা হয়েছে, অথচ ওরা বায়তুল মুক্বাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামায পড়ছে।

[৪] 'তাদেরকে ভয় করো না' অর্থাৎ, মুশরিকদের কথার পরোয়া করো না। তারা বলেছিল যে, মুহাম্মাদ তো আমাদের ক্বিবলা গ্রহণ করে নিয়েছে, এবার অতি সত্বর দেখবে সে আমাদের দ্বীনও গ্রহণ করে নেবে। 'আমাকেই ভয় কর' অর্থাৎ, যে নির্দেশ আমি দিতে থাকব, তার উপর নির্ভয়ে আমল করতে থাকো। ক্বিবলার পরিবর্তনকে অনুগ্রহ পরিপূর্ণতা ও পথপ্রাপ্তি বলে আখ্যায়িত করে এ কথা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে, অবশ্যই আল্লাহর নির্দেশের উপর আমল মানুষকে অনুগ্রহ, পুরস্কার ও সম্মানের অধিকারী বানায় এবং সে সুপথপ্রাপ্তি তথা হিদায়াতের তওফীক লাভ করে।