আর যদি তারা তওরাত, ইঞ্জীল ও যা তাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে প্রতিষ্ঠিত থাকত,[১] তাহলে তারা তাদের উপর দিক (আকাশ) ও পায়ের নিচের দিক (পৃথিবী) হতে খাদ্য লাভ করত।[২] তাদের মধ্যে এক দল রয়েছে যারা মধ্যপন্থী, কিন্তু তাদের অধিকাংশ যা করে, তা নিকৃষ্ট! [৩]
[১] তাওরাত ও ইঞ্জীলের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার উদ্দেশ্য হচ্ছে, তার বিধানের অনুসরণ করা, যা তাদেরকে প্রদান করা হয়েছে। আর সেই বিধানের মধ্যে একটা এও ছিল যে, শেষ নবীর প্রতি তারা ঈমান আনয়ন করবে। وما أنزل এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, সমস্ত আসমানী গ্রন্থের উপর ঈমান আনয়ন করা; আর এর মধ্যে কুরআন কারীমও শামিল। সুতরাং আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে, তারা যেন ইসলাম গ্রহণ করে।[২] 'উপর-নীচের' কথা অতিশয়োক্তি রূপে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ, বেশী বেশী এবং বিভিন্ন ধরনের রুযী আল্লাহ তাদেরকে দান করতেন। অথবা 'উপর' বলতে আসমানকে বুঝানো হয়েছে, আর তার অর্থ হচ্ছে, সময় মত আসমান হতে বৃষ্টি বর্ষণ করতেন। আর 'পায়ের নিচে' বলতে যমীনকে বুঝানো হয়েছে, আর তার অর্থ হচ্ছে; যমীন এই পানি নিজের মধ্যে শোষণ করে বিভিন্ন ধরনের ফসলাদি উৎপাদন করত। পরিণামে তাদের জীবন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে পরিপূর্ণ হয়ে যেত। যেমন মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেন, {وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُواْ وَاتَّقَواْ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ} অর্থাৎ, জনপদবাসীরা যদি ঈমান আনত ও তাকওয়া অবলম্বন করত, তাহলে অবশ্যই আমি তাদের উপর আসমান ও যমীনের বরকত নাযিল করতাম। (সূরা আ'রাফ ৭:৯৬ আয়াত)[৩] কিন্তু তাদের বেশীর ভাগ মানুষ ঈমানের রাস্তা অবলম্বন করল না এবং তারা কুফরীর উপরেই অটল থাকল, আর রিসালাতে মুহাম্মাদীকে অস্বীকার করার ব্যাপারে অবিচল থাকল। এই অটল থাকা ও অস্বীকার করাকে 'নিকৃষ্ট কর্ম' বলে আখ্যায়ন করা হয়েছে। মধ্যপন্থী দল থেকে উদ্দেশ্য হচ্ছে, আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) এর মত ৮-৯ জন সাহাবা, যাঁরা মদীনার ইয়াহুদীদের মধ্য হতে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।