واذ قلنا للملايكة اسجدوا لادم فسجدوا الا ابليس كان من الجن ففسق عن امر ربه افتتخذونه وذريته اولياء من دوني وهم لكم عدو بيس للظالمين بدلا ٥٠
وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَـٰٓئِكَةِ ٱسْجُدُوا۟ لِـَٔادَمَ فَسَجَدُوٓا۟ إِلَّآ إِبْلِيسَ كَانَ مِنَ ٱلْجِنِّ فَفَسَقَ عَنْ أَمْرِ رَبِّهِۦٓ ۗ أَفَتَتَّخِذُونَهُۥ وَذُرِّيَّتَهُۥٓ أَوْلِيَآءَ مِن دُونِى وَهُمْ لَكُمْ عَدُوٌّۢ ۚ بِئْسَ لِلظَّـٰلِمِينَ بَدَلًۭا ٥٠
وَاِذْ
قُلْنَا
لِلْمَلٰٓىِٕكَةِ
اسْجُدُوْا
لِاٰدَمَ
فَسَجَدُوْۤا
اِلَّاۤ
اِبْلِیْسَ ؕ
كَانَ
مِنَ
الْجِنِّ
فَفَسَقَ
عَنْ
اَمْرِ
رَبِّهٖ ؕ
اَفَتَتَّخِذُوْنَهٗ
وَذُرِّیَّتَهٗۤ
اَوْلِیَآءَ
مِنْ
دُوْنِیْ
وَهُمْ
لَكُمْ
عَدُوٌّ ؕ
بِئْسَ
لِلظّٰلِمِیْنَ
بَدَلًا
۟

(স্মরণ কর,) আমি যখন ফিরিশতাদেরকে বলেছিলাম, ‘তোমরা আদমকে সিজদা কর’, তখন ইবলীস ছাড়া সবাই সিজদা করল; সে ছিল জীনদের একজন।[১] সে তার প্রতিপালকের আদেশ অমান্য করল;[২] তবে কি তোমরা আমার পরিবর্তে তাকে ও তার বংশধরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে; অথচ তারা তোমাদের শত্রু?[৩] সীমালংঘনকারীদের পরিবর্ত কত নিকৃষ্ট![৪]

[১] কুরআনের স্পষ্ট এই বর্ণনা থেকে এ কথা পরিষ্কার হয়ে গেল যে, শয়তান ফিরিশতা ছিল না। ফিরিশতা হলে আল্লাহর নির্দেশকে অমান্য করার তার কোনই উপায় থাকত না। কেননা, ফিরিশতাদের গুণ মহান আল্লাহ এইভাবে বর্ণনা করেছেন, ﴿ لا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ﴾ "তাঁরা আল্লাহ তাআলা যা আদেশ করেন তা অমান্য করেন না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাঁরা তা-ই করেন।" (সূরা তাহরীম ৬৬:৬ আয়াত) এখানে একটি জটিলতা এই থেকে যায় যে, যদি সে ফিরিশতা হয়ে না থাকে, তবে তো সে আল্লাহর সম্বোধনের আওতাভুক্ত ছিল না। কেননা, সম্বোধন তো ফিরিশতাদের করা হয়েছিল। তাঁদেরকেই সিজদা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। 'রূহুল মাআনী'র লেখক বলেছেন যে, সে অবশ্যই ফিরিশতা ছিল না, কিন্তু ফিরিশতাদের সাথেই থাকত এবং তাঁদেরই মধ্যে গণ্য হত। কাজেই সেও اسْجُدُوا لِآدَمَ এই আদেশের আওতাভুক্ত ছিল। আদম (আঃ)-কে সিজদা করার নির্দেশে তাকেও যে সম্বোধন করা হয়েছিল এ কথা সুনিশ্চিত। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেন, ﴿مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ﴾ অর্থাৎ, আমি যখন আদেশ করলাম, তখন তোকে কিসে সিজদা করতে বারণ করল? (সূরা আ'রাফ ৭:১২ আয়াত)[২] فِسْقٌ এর অর্থ হয় বেরিয়ে যাওয়া। ইঁদুর তার গর্ত থেকে বেরিয়ে গেলে বলা হয়, فَسَقَتِ الْفأْرَةُ مِنْ جُحْرِهَا শয়তানও সম্মান ও সম্ভাষণের সিজদাকে অস্বীকার করে প্রতিপালকের আনুগত্য থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল।[৩] অর্থাৎ, তোমাদের জন্য কি এটা ঠিক যে, তোমরা এমন ব্যক্তি ও তার বংশধরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে, যে তোমাদের পিতা আদম (আঃ)-এর শত্রু, তোমাদের শত্রু ও আল্লাহর শত্রু এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে এই শয়তানের আনুগত্য করবে?[৪] দ্বিতীয় একটি অর্থ এই করা হয়েছে যে, "অত্যাচারীরা কতই নিকৃষ্ট পরিবর্ত নির্বাচন করেছে।" অর্থাৎ, আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁর সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন না করে, শয়তানের আনুগত্য ও তাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছে। আর এটা হল অতি নিকৃষ্টতম পরিবর্ত; যা এই যালেমরা গ্রহণ করেছে।