অবশ্যই বিশ্বাসীদের প্রতি শত্রুতায় মানুষের মধ্যে ইয়াহুদী ও অংশীবাদীদেরকেই তুমি সর্বাধিক উগ্র দেখবে[১] এবং মানুষের মধ্যে যারা বলে, ‘আমরা খ্রিষ্টান’, তাদেরকেই তুমি সম্প্রীতির ব্যাপারে বিশ্বাসীদের নিকটতর দেখবে। কারণ, তাদের মধ্যে অনেক পন্ডিত ও সংসার-বিরাগী আছে। আর তারা অহংকারও করে না। [২]
[১] এই জন্য যে, ইয়াহুদীদের মধ্যে একগুঁয়েমি, হঠকারিতা, হক থেকে বিমুখতা, দাম্ভিকতা ও গর্ব এবং জ্ঞানী ও ঈমানদারদের অবজ্ঞা করার প্রবণতা ব্যাপক প্রচলিত। আর এ জন্যেই নবীগণকে হত্যা ও তাঁদেরকে মিথ্যাজ্ঞান করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়। এমনকি কয়েক বার তারা মহানবী (সাঃ)-কে হত্যা করার কুচক্রান্ত করে। তাঁকে যাদু করে এবং বিভিন্নভাবে ক্ষতি সাধন করার মত জঘন্য অপচেষ্টাও করে। অনুরূপ কুকীর্তি মুশরিকদেরও।
[২] رهبان এর ভাবার্থ; সৎ, আবেদ, সংসার-বিরাগী বা নির্জনবাসী আর قسيسين এর ভাবার্থ; পন্ডিত। অর্থাৎ, এই খ্রিষ্টানদের মধ্যে জ্ঞান ও বিনয় আছে। আর এই জন্যই ইয়াহুদীদের মত তাদের হঠকারিতা ও দাম্ভিকতা ছিল না। এছাড়া খ্রিষ্টান ধর্মে নম্রতা, উদারতা ও ক্ষমাশীলতার শিক্ষার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ মান আছে। এমন কি তাদের ধর্মগ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে যে, কেউ যদি তোমার ডান গালে চড় মারে, তাহলে তার সামনে বাম গাল বাড়িয়ে দাও। অর্থাৎ ঝগড়া-বিবাদ করবে না। এই কারণে ইয়াহুদীদের তুলনায় খ্রিষ্টানরা মুসলিমদের নিকটতর। খ্রিষ্টানদের এই প্রশংসা ইয়াহুদীদের মোকাবেলায় করা হয়েছে। নচেৎ ইসলাম-বিদ্বেষের অভ্যাস কম-বেশী তাদের মধ্যেও আছে। যেমন এ কথা ক্রুস ও ক্রিসেণ্টের বহু শতাব্দী-ব্যাপী যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে স্পষ্ট এবং যা অদ্যাবধি চলে আসছে। আর বর্তমানে ইয়াহুদী-খ্রিষ্টান উভয়ের মিলিত প্রচেষ্টা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে সরগরম। এই কারণেই কুরআনে উভয় সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করতে নিষেধ করা হয়েছে।