لقد نصركم الله في مواطن كثيرة ويوم حنين اذ اعجبتكم كثرتكم فلم تغن عنكم شييا وضاقت عليكم الارض بما رحبت ثم وليتم مدبرين ٢٥
لَقَدْ نَصَرَكُمُ ٱللَّهُ فِى مَوَاطِنَ كَثِيرَةٍۢ ۙ وَيَوْمَ حُنَيْنٍ ۙ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنكُمْ شَيْـًۭٔا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ ٱلْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُم مُّدْبِرِينَ ٢٥
لَقَدْ
نَصَرَكُمُ
اللّٰهُ
فِیْ
مَوَاطِنَ
كَثِیْرَةٍ ۙ
وَّیَوْمَ
حُنَیْنٍ ۙ
اِذْ
اَعْجَبَتْكُمْ
كَثْرَتُكُمْ
فَلَمْ
تُغْنِ
عَنْكُمْ
شَیْـًٔا
وَّضَاقَتْ
عَلَیْكُمُ
الْاَرْضُ
بِمَا
رَحُبَتْ
ثُمَّ
وَلَّیْتُمْ
مُّدْبِرِیْنَ
۟ۚ

আল্লাহ তোমাদেরকে তো বহুক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন এবং হুনাইনের যুদ্ধের দিনেও; যখন তোমাদের সংখ্যাধিক্য তোমাদেরকে উৎফুল্ল করেছিল। কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তা তোমাদের জন্য সঙ্কুচিত হয়েছিল, অতঃপর তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে।[১]

[১] মক্কা ও তায়েফের মধ্যস্থলে একটি উপত্যকার নাম হুনাইন। এখানে হাওয়াযিন এবং সাকীফ নামক দুই গোত্র বসবাস করত। এই উভয় গোত্রের লোকেরা তীর নিক্ষেপ কাজে বড় পটু বলে প্রসিদ্ধি ছিল। এরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সে কথা রসূল (সাঃ) জানতে পারলে ১২ হাজার সৈন্য নিয়ে সেই গোত্র দু'টির সাথে লড়াই করার উদ্দেশ্যে 'হুনাইন' উপত্যকায় উপস্থিত হলেন। এই যুদ্ধ মক্কা বিজয়ের ১৮/১৯ দিন পর শওয়াল মাসে সংঘটিত হয়। উল্লিখিত উভয় গোত্রের লোকেরা পরিপূর্ণরূপে প্রস্তুতি নিয়েই ছিল। তারা বিভিন্ন ঘাঁটিতে তীরন্দাজদেরকে মোতায়েন করে দিল। এদিকে মুসলিমদের মাঝে আত্মগর্ব সৃষ্টি হল যে, আজ আমরা কমসে কম সংখ্যা স্বল্পতার কারণে পরাজিত হব না। অর্থাৎ, আল্লাহর মদদ বিস্মৃত হয়ে নিজেদের সংখ্যাধিক্যের উপর ভরসা করে বসলেন। আল্লাহর নিকট এই গর্ব পছন্দ ছিল না। পরিণামস্বরূপ যখন হাওয়াযিনের সুদক্ষ তীরন্দাজরা বিভিন্ন ঘাঁটি থেকে মুসলিম বাহিনীর উপর ধারণাতীতভাবে একই সাথে তীর বর্ষণ করতে শুরু করল, তখন মুসলিম বাহিনী বিচলিত ও বিক্ষিপ্ত হয়ে পলায়ন শুরু করল। যুদ্ধ-ময়দানে কেবল নবী (সাঃ) ১০০ জন মত সৈন্য নিয়ে অবিচলিত থাকলেন। তিনি মুসলিমদেরকে ডাক দিয়ে বললেন, 'হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা আমার কাছে এসো। আমি হলাম আল্লাহর রসূল।' কখনো কখনো তিনি এই যুদ্ধ-কবিতা পড়তেন, أنا النبي لا كذب ـ أنا ابن عبد المطلب অর্থাৎ, 'আমি হলাম নবী, এটা মিথ্যা নয়। আমি আব্দুল মুত্তালিবের সন্তান।' পুনরায় তিনি আব্বাস (রাঃ)-কে (যাঁর গলার আওয়াজ বড় উঁচু ছিল) আদেশ করলেন যে, 'মুসলিমদেরকে একত্রিত করার জন্য ডাক দাও।' অতএব তাঁর আওয়াজ শুনে মুসলিমরা লজ্জিত হলেন এবং পুনরায় ময়দানে একত্রিত হলেন। অতঃপর এমন দৃঢ়তার সাথে যুদ্ধ করলেন যে, আল্লাহ তাআলা তাঁদেরকে জয়ী করে দিলেন। আল্লাহর মদদ এমনভাবে এল যে, তাঁদের উপর সান্ত্বনা অবতীর্ণ করলেন; যার ফলে তাঁদের অন্তর থেকে কাফেরদের ভয় দূর হয়ে গেল। দ্বিতীয়তঃ ফিরিশতাদল প্রেরণ করলেন। এই যুদ্ধে মুসলিমরা (নারী ও শিশু সহ) ৬ হাজার কাফেরকে বন্দী করলেন। (যাদেরকে নবী (সাঃ) তাদের অনুরোধে ছেড়ে দিলেন।) প্রচুর পরিমাণে গনীমতের মাল হস্তগত হল। যুদ্ধের পর কাফেরদের বেশ কয়েকজন সর্দার বা নেতৃস্থানীয় লোক ইসলাম গ্রহণ করেছিল। এখানে তিনটি আয়াতে আল্লাহ তাআলা এই ঘটনাকে সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করেছেন।