নিশ্চয়ই এটি আমার সরল পথ।[১] সুতরাং এরই অনুসরণ কর[২] এবং ভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, করলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন তোমরা সাবধান হও।
[১] هَذَا (এটি) বলতে কুরআনে মাজীদ অথবা দ্বীন ইসলাম বা সেই বিধি-বিধানগুলোকে বুঝানো হয়েছে, যা বিশেষভাবে এই সূরাতে উল্লেখ করা হয়েছে। আর তা হল, তাওহীদ, রিসালাত ও পরকাল। এগুলোই হল এমন তিনটি মূল নীতি, যার চতুর্দিকে দ্বীনের চাকা ঘুরছে। অতএব যে অর্থই নেওয়া হোক না কেন উদ্দেশ্য সবের একই।[২] صراط مستقيم কে একবচন শব্দে বর্ণনা করা হয়েছে। কেননা, আল্লাহর অথবা কুরআনের কিংবা রসূলের পথ একটাই, একাধিক নয়। অতএব, অনুসরণ কেবল এই একটি পথেরই করতে হবে, অন্য পথের নয়। আর এটাই হল মুসলিম উম্মার ঐক্যের ভিত্তি। এই সরল পথ থেকে দূরে সরে পড়ার কারণে এই উম্মত বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। অথচ তাদেরকে তাকীদ করা হয়েছে যে, "অন্য পথগুলোতে চলো না। কারণ সেসব পথ তোমাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে।" অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, {أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ} "দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না।" (সূরা শূরা ৪২:১৩) দ্বীনে মতভেদ ও অনৈক্য সৃষ্টি করার কোনই অনুমতি নেই। এই কথাটাকেই নবী করীম (সাঃ) এইভাবে বিশ্লেষণ করেছেন, একদা তিনি তাঁর হাত দিয়ে একটি রেখা টানলেন এবং বললেন, "এটা হল আল্লাহর সরল পথ।" আরো কিছু রেখা তার ডান ও বাম পাশে টানলেন এবং বললেন, "এগুলো হল অন্য কিছু পথ, যার উপর শয়তান বসে আছে এবং সে এই পথগুলোর দিকে মানুষকে আহবান করছে।" অতঃপর তিনি এই (وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا) আয়াত পাঠ করলেন। (মুসনাদ আহমাদ) এমন কি সুনান ইবনে মাজাতে এ কথা সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, তিনি ডানে ও বামে দু'টো করে রেখা টানলেন। অর্থাৎ, সর্বমোট চারটি রেখা টানলেন এবং সেগুলোকে শয়তানের পথ বললেন।