উত্তম নামসমূহ আল্লাহরই। সুতরাং তোমরা সে সব নামেই তাকে ডাকো।[১] আর যারা তাঁর নাম সম্বন্ধে বক্রপথ অবলম্বন করে[২] তাদেরকে বর্জন কর, তাদের কৃতকর্মের ফল তাদেরকে দেওয়া হবে।
[১] حُسنى শব্দটি أحسَن শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ। আল্লাহর ঐ সুন্দর নামসমূহ বলতে যে নামগুলোতে বিভিন্ন গুণের; তাঁর মহানুভবতা, মাহাত্ম্য ও শক্তি ইত্যাদি প্রকাশ পায়। সহীহায়নে তার সংখ্যা নিরানব্বই; এক কম একশত বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি তা গণনা করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর আল্লাহ তাআলা বেজোড়, তিনি বেজোড় পছন্দ করেন। (বুখারী দু'আ অধ্যায়, মুসলিম যিকর অধ্যায়) গণনা করার অর্থ , তার উপর ঈমান আনা বা তা গোনা এবং এক একটি ইখলাসের সাথে বর্কতের জন্য পাঠ করা, তা মুখস্থ করা, তার অর্থ বুঝা এবং সেই সব গুণে গুণান্বিত হওয়া। (মিরকাত, মিশকাতের ব্যাখ্যাগ্রন্থ) কোন কোন হাদীসে উক্ত ৯৯ নামের উল্লেখ এসেছে। কিন্তু সে হাদীসগুলি দুর্বল। উলামাগণ সেগুলিকে বর্ণনাকারীর নিজের তরফ হতে বাড়ানো জিনিস বলেছেন; তা হাদীসের অংশ নয়। সেই সাথে উলামাগণ এটাও বলেছেন, যে, আল্লাহর নামের সংখ্যা নিরানব্বইয়ের মধ্যেই সীমিত নয়; বরং তারও অধিক। (ইবনে কাসীর, ফাতহুল ক্বাদীর)
[২] إلحاد (ইলহাদ) এর অর্থ হল এক দিকে ঝুঁকে পড়া। আর এর থেকে 'লাহাদ' এসেছে। লাহাদ ঐ কবরকে বলা হয় যার একদিক খনন করা হয়। দ্বীনের মধ্যে ইলহাদ হল, বক্রপথ অবলম্বন করা বা ধর্মত্যাগী হওয়া। আল্লাহর নামসমূহে বক্রপথ অবলম্বন করা তিনভাবে হতে পারে। (ক) আল্লাহর নামের পরিবর্তন করা, যেমন মুশরিকরা করত। উদাহরণ স্বরূপ মহান আল্লাহর সাত্ত্বিক নাম 'আল্লাহ' থেকে তারা তাদের এক মূর্তির নামকরণ করেছিল 'লাত', আল্লাহর গুণবাচক নাম, 'আযীয' হতে 'উয্যা' নামকরণ করেছিল। (খ) আল্লাহর নামে মনগড়া অতিরিক্ত বা সংযোজন করা, যার আদেশ তিনি দেননি। (গ) তাঁর নাম কম করে দেওয়া; যেমন, তাঁকে একটি নির্দিষ্ট নামেই ডাকা এবং অন্যান্য গুণবাচক নামে ডাকাকে খারাপ মনে করা। (ফাতহুল ক্বাদীর) আল্লাহর নামসমুহে 'বক্রপথ অবলম্বন' করার একটি অর্থ এটাও হতে পারে যে, তার তা'বীল (অপব্যাখ্যা) করা অথবা তা অর্থহীন বা নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া অথবা তার উপমা বা সদৃশ বর্ণনা করা। (আয়সারুত তাফাসীর) যেমন মু'তাযিলা, মুআত্তিলা, মুশাবিবহা ইত্যাদি পথভ্রষ্ট দলগুলোর আচরণ। মহান আল্লাহ এসব থেকে দূরে থাকার ও বাঁচার আদেশ করেছেন।