নিশ্চয় তোমরা মৃত্যুর সম্মুখীন হবার পূর্বে তা কামনা করতে,[১] এখন তোমরা তো তা স্বচক্ষে দেখলে?[২]
[১] এখানে সেই সাহাবীদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, যাঁরা বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে না পারার কারণে নিজেদের হৃদয়ে এক প্রকার বঞ্চনা-ব্যথা অনুভব করতেন এবং চাইতেন যে, আবারও যুদ্ধের ময়দান উত্তপ্ত হলে তাঁরাও কাফেরদের শিরচ্ছেদ করে জিহাদের ফযীলত অর্জন করবেন। আর এই সাহাবীরাই উহুদের দিন জিহাদের উদ্দীপনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মদীনার বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু যখন মুসলিমদের বিজয় কাফেরদের অভাবিত আক্রমণের ফলে পরাজয়ে পরিবর্তন হয়ে গেল (যার বিস্তারিত আলোচনা পূর্বে হয়েছে), তখন জিহাদের উদ্দীপনায় ভরপুর যাঁদের অন্তর এমন মুজাহিদরাও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন এবং অনেকে তো পলায়নও করেন। (পরে এর আলোচনা আসবে) অতঃপর অল্প সংখ্যক লোক দৃঢ়তার সাথে ময়দানে টিঁকে থাকেন। (ফাতহুল ক্বাদীর) এই জন্যই হাদীসে এসেছে যে, "তোমরা শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার আশা করো না এবং আল্লাহর নিকট নিরাপত্তা কামনা কর। তবে যদি শত্রুর সাথে মুখোমুখী হওয়ার পরিস্থিতি আপনা আপনিই এসে যায় এবং তোমাদেরকে তাদের সাথে লড়তে হয়, তাহলে তখন (ময়দানে) সুদৃঢ় ও অনড় থাকো। জেনে রাখো! জান্নাত হল তরবারির ছায়ার তলে।" (বুখারী-মুসলিম)
[২]رَأَيْتُمُوهُ এবং تَنْظُرُوْنَ উভয়ের অর্থ একই। অর্থাৎ, দেখা। সুনিশ্চয়তা ও আধিক্য বুঝানোর জন্য উভয় শব্দ ব্যবহূত হয়েছে। অর্থাৎ, তরবারির চমকে, বর্শা-বল্লমের তীক্ষ্ণতায়, তীরের আঘাতে এবং বীরদের সারিবদ্ধতায় তোমরা মৃত্যুকে খুব ভালোভাবে দর্শন করেছ। (ইবনে কাসীর, ফাতহুল ক্বাদীর)