واذ قال ابراهيم رب ارني كيف تحيي الموتى قال اولم تومن قال بلى ولاكن ليطمين قلبي قال فخذ اربعة من الطير فصرهن اليك ثم اجعل على كل جبل منهن جزءا ثم ادعهن ياتينك سعيا واعلم ان الله عزيز حكيم ٢٦٠
وَإِذْ قَالَ إِبْرَٰهِـۧمُ رَبِّ أَرِنِى كَيْفَ تُحْىِ ٱلْمَوْتَىٰ ۖ قَالَ أَوَلَمْ تُؤْمِن ۖ قَالَ بَلَىٰ وَلَـٰكِن لِّيَطْمَئِنَّ قَلْبِى ۖ قَالَ فَخُذْ أَرْبَعَةًۭ مِّنَ ٱلطَّيْرِ فَصُرْهُنَّ إِلَيْكَ ثُمَّ ٱجْعَلْ عَلَىٰ كُلِّ جَبَلٍۢ مِّنْهُنَّ جُزْءًۭا ثُمَّ ٱدْعُهُنَّ يَأْتِينَكَ سَعْيًۭا ۚ وَٱعْلَمْ أَنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌۭ ٢٦٠
وَاِذْ
قَالَ
اِبْرٰهٖمُ
رَبِّ
اَرِنِیْ
كَیْفَ
تُحْیِ
الْمَوْتٰی ؕ
قَالَ
اَوَلَمْ
تُؤْمِنْ ؕ
قَالَ
بَلٰی
وَلٰكِنْ
لِّیَطْمَىِٕنَّ
قَلْبِیْ ؕ
قَالَ
فَخُذْ
اَرْبَعَةً
مِّنَ
الطَّیْرِ
فَصُرْهُنَّ
اِلَیْكَ
ثُمَّ
اجْعَلْ
عَلٰی
كُلِّ
جَبَلٍ
مِّنْهُنَّ
جُزْءًا
ثُمَّ
ادْعُهُنَّ
یَاْتِیْنَكَ
سَعْیًا ؕ
وَاعْلَمْ
اَنَّ
اللّٰهَ
عَزِیْزٌ
حَكِیْمٌ
۟۠

আরো (স্মরণ কর) যখন ইব্রাহীম বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! কিভাবে তুমি মৃতকে জীবিত কর, আমাকে দেখাও।’[১] তিনি বললেন, ‘তুমি কি এ বিশ্বাস কর না?’ সে বলল, ‘অবশ্যই (বিশ্বাস করি)। কিন্তু আমার মনকে প্রবোধ দানের জন্য (দেখতে চাই)!’ তিনি বললেন, ‘তবে চারটি পাখী ধর এবং ঐগুলিকে (পুষে) তোমার বশীভূত কর (তা যবেহর পর টুকরা-টুকরা করে সম্মিলিত কর)। তারপর তাদের এক এক অংশ এক এক পাহাড়ে স্থাপন কর। অতঃপর ঐগুলিকে ডাক দাও, (দেখবে,) ঐগুলি দ্রুতগতিতে তোমার নিকট এসে উপস্থিত হবে। আর জেনে রাখ যে, আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।’

[১] এটা মৃতকে জীবিত করার দ্বিতীয় ঘটনা, যা দেখানো হয়েছিল একজন অতীব সম্মানিত পয়গম্বর ইবরাহীম (আঃ)-এর আশা পূরণের এবং তাঁর আন্তরিক প্রশান্তি লাভের জন্য। চারটি কোন্ কোন্ পাখি ছিল? মুফাসসিরগণ বিভিন্ন নাম উল্লেখ করেছেন। তবে নাম নির্দিষ্টীকরণে কোন লাভ নেই। এই কারণেই মহান আল্লাহ তাদের নামের উল্লেখ করেননি। চারটি বিভিন্ন প্রকারের পাখি ছিল। فَصُرْهُنَّ এর একটি অর্থ করা হয়েছে, أَمِلْهُنَّ (আকৃষ্ট করে নাও) অর্থাৎ, পোষ মানিয়ে নাও। যাতে জীবিত হওয়ার পর সহজেই চিনে নিতে পারো যে, এগুলো সেই পাখিই এবং কোন প্রকারের সন্দেহের অবকাশ না থাকে। তবে এই অর্থে ثُمَّ قَطِّعْهنَ (অতঃপর সেগুলোকে টুকরা টুকরা কর) শব্দ ঊহ্য মেনে নিতে হবে। দ্বিতীয় অর্থ করা হয়েছে, قَطِّعْهُنَّ (সেগুলোকে টুকরা টুকরা করে নাও)। এই অর্থে কোন কিছু ঊহ্য না মেনেও মানে পরিষ্কার হয়ে যায়। অর্থাৎ, সেগুলোকে টুকরা টুকরা করে তাদের অংশগুলো একে অপরের সাথে মিশ্রিত করে বিভিন্ন পাহাড়ে রেখে দাও। অতঃপর সেগুলোকে ডাকো, দেখবে তারা জীবিত হয়ে তোমার কাছে চলে আসবে। ঠিক তা-ই হল। পূর্বের ও বর্তমানের কোন কোন মুফাসসিরগণ (যাঁরা সাহাবী ও তাবেঈনদের তাফসীরের এবং সালফে-সালেহীনদের তরীকার কোন গুরুত্ব দেন না তাঁরা) فَصُرْهُنَّ এর অনুবাদ কেবল 'পোষ মানিয়ে নাও' করেছেন। আর পাখিগুলোকে যবেহ করার পর টুকরা টুকরা করে পাহাড়ে তার অংশগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেওয়ার, তারপর মহান আল্লাহর মহাশক্তি দ্বারা সেগুলোর আপোসে জোড়া লাগার কথা স্বীকার করেন না। বলা বাহুল্য এ অনুবাদ সঠিক নয়। এ রকম অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করলে ঘটনার সমস্ত অলৌকিকতাই শেষ হয়ে যায় এবং মৃতকে জীবিত করে দেখানোর প্রশ্ন থেকেই যায়। অথচ এই ঘটনাকে উল্লেখ করার উদ্দেশ্যই হল, মহান আল্লাহর মৃতকে জীবিত করার গুণ ও তাঁর মহাশক্তিকে প্রমাণ করা। একটি হাদীসে নবী করীম (সাঃ) ইবরাহীম (আঃ)-এর এই ঘটনার উল্লেখ করে বলেছেন, "আমরা ইবরাহীম (আঃ) অপেক্ষা সন্দেহ করার অধিকার বেশী রাখি।" (বুখারী ৩৩২৭নং) আর এর অর্থ এই নয় যে, ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহর কুদরতে সন্দেহ পোষণ করেছিলেন, অতএব সন্দেহ করার অধিকার তাঁর চেয়ে আমাদের বেশী; বরং উদ্দেশ্য হল, তাঁর যে সন্দেহ হতে পারে তার খন্ডন করা। অর্থাৎ, ইবরাহীম (আঃ) মৃতকে জীবিত করার ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহ করেননি। যদি তিনি এ ব্যাপারে সন্দেহ করে থাকতেন, তাহলে অবশ্যই সন্দেহ করার ব্যাপারে আমাদের অধিকার তাঁর চেয়ে বেশী হত। (অধিক জানার জন্য দ্রষ্টব্যঃ ফাতহুল ক্বাদীর)