আমি মানুষের জন্য তোমার প্রতি সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি; অতঃপর যে সৎপথ অবলম্বন করে, সে তা নিজেরই কল্যাণের জন্য করে এবং যে বিপথগামী হয়, সে তো বিপথগামী হয় নিজেরই ধ্বংসের জন্য। আর তুমি ওদের তত্ত্বাবধায়ক নও।[১]
[১] মক্কাবাসীদের কুফরীর উপর অটল থাকা নবী (সাঃ)-এর জন্য ছিল বড়ই কষ্টকর। তাই এই আয়াতে তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে যে, তোমার দায়িত্ব কেবল এই কিতাবের কথা বর্ণনা করে দেওয়া, যা আমি তোমার উপর অবতীর্ণ করেছি। তাদেরকে হিদায়াত দান করার দায়িত্ব তোমার নয়। যদি তারা হিদায়াতের পথ অবলম্বন করে নেয়, তবে তাতে তাদেরই লাভ। আর যদি তা অবলম্বন না করে, তবে ক্ষতিগ্রস্ত তারাই হবে। وَكِيل অর্থ, দায়িত্বপ্রাপ্ত, যিম্মেদার। অর্থাৎ, তাদের হিদায়াতের দায়িত্ব তোমার উপর নেই। পরবর্তী আয়াতে মহান আল্লাহ তাঁর এমন এক পরিপূর্ণ কুদরতের এবং বিস্ময়কর কর্মের কথা উল্লেখ করছেন, যা মানুষ প্রতিদিন প্রত্যক্ষ করে। আর তা হল, যখন সে ঘুমিয়ে যায়, তখন তার আত্মা আল্লাহর নির্দেশে তার (দেহ) থেকে যেন বেরিয়েই যায়। কেননা, তখন তার অনুভূতি ও বোধশক্তি বিলুপ্ত হয়ে যায়। আর যখন সে জেগে ওঠে, তখন আত্মাকে ঠিক যেন তার মধ্যে পুনরায় প্রেরণ করা হয়। ফলে তার অনুভূতি পূর্বের ন্যায় ফিরে আসে। অবশ্য যার জীবনের মেয়াদ পূর্ণ হয়ে যায়, তার আত্মা আর ফিরে আসে না এবং সে মৃত্যুর হাতে ধরা খায়। এটাকেই মুফাসসিরগণ 'ওয়াফাতে কুবরা' (বড় মৃত্যু) এবং 'অফাতে স্বুগরা' (ছোট মৃত্যু) বলে আখ্যায়িত করেছেন।