অংশীবাদীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী ও বিশ্বাসীদের জন্য সঙ্গত নয়; যদিও তারা আত্মীয়ই হোক না কেন, তাদের কাছে একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী। [১]
[১] এই আয়াতের তফসীর সহীহ বুখারীতে এইভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, যখন নবী (সাঃ)-এর চাচা আবু তালেবের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এল, তখন নবী (সাঃ) তার নিকট গেলেন। তার নিকট আবু জাহল ও আব্দুল্লাহ বিন আবী উমাইয়্যাহ বসেছিল। নবী (সাঃ) বললেন, "চাচাজান! 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' পড়ে নিন, যাতে আমি আল্লাহর নিকট আপনার জন্য প্রমাণ পেশ করতে পারি। আবু জাহল ও আব্দুল্লাহ বিন আবী উমাইয়্যাহ বলল, "হে আবু তালেব! (মৃত্যুর) সময় আব্দুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করবে?" (শেষে ঐ অবস্থাতেই তার মৃত্যু হল।) নবী (সাঃ) বললেন, "যতক্ষণ আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাকে নিষেধ না করা হবে, ততক্ষণ আমি আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকব।" তখন উক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হল, যাতে মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। (সহীহ বুখারী) এবং সূরা ক্বস্বাস্বের ২৮:৫৬ নং আয়াত (إِنَّكَ لاَ تَهْدِيْ مَنْ أَحْبَبْتَ) আয়াতটিও এই মর্মে অবতীর্ণ হয়েছে। মুসনাদে আহমাদের একটি বর্ণনায় আছে যে, একদা নবী (সাঃ) তাঁর মাতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অনুমতি চাইলে উক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (মুসনাদ আহমদ ৫ম খন্ড ৩৫৫পৃঃ) আর নবী (সাঃ) নিজ সম্প্রদায়ের জন্য যে দু'আ করেছিলেন, (اَللّهُمَّ اغْفِرْ لِقَوْمِيْ فَإِنَّهُمْ لاَ يَعْلَمُوْنَ) "হে আল্লাহ! তুমি আমার সম্প্রদায়কে ক্ষমা করে দাও, কারণ তারা অজ্ঞ।" তা এই আয়াতের বিরোধী নয়। কারণ এই দু'আর অর্থ হল তাদের জন্য হিদায়াত কামনা করা। অর্থাৎ তারা আমার মর্যাদা ও সম্মান থেকে বেখবর, তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দাও, যাতে তারা ক্ষমার যোগ্য হয়ে যায়। আর জীবিত কাফের ও মুশরিকের জন্য হিদায়াতের দু'আ করা বৈধ।