الله الذي رفع السماوات بغير عمد ترونها ثم استوى على العرش وسخر الشمس والقمر كل يجري لاجل مسمى يدبر الامر يفصل الايات لعلكم بلقاء ربكم توقنون ٢
ٱللَّهُ ٱلَّذِى رَفَعَ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ بِغَيْرِ عَمَدٍۢ تَرَوْنَهَا ۖ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِ ۖ وَسَخَّرَ ٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ ۖ كُلٌّۭ يَجْرِى لِأَجَلٍۢ مُّسَمًّۭى ۚ يُدَبِّرُ ٱلْأَمْرَ يُفَصِّلُ ٱلْـَٔايَـٰتِ لَعَلَّكُم بِلِقَآءِ رَبِّكُمْ تُوقِنُونَ ٢
اَللّٰهُ
الَّذِیْ
رَفَعَ
السَّمٰوٰتِ
بِغَیْرِ
عَمَدٍ
تَرَوْنَهَا
ثُمَّ
اسْتَوٰی
عَلَی
الْعَرْشِ
وَسَخَّرَ
الشَّمْسَ
وَالْقَمَرَ ؕ
كُلٌّ
یَّجْرِیْ
لِاَجَلٍ
مُّسَمًّی ؕ
یُدَبِّرُ
الْاَمْرَ
یُفَصِّلُ
الْاٰیٰتِ
لَعَلَّكُمْ
بِلِقَآءِ
رَبِّكُمْ
تُوْقِنُوْنَ
۟

আল্লাহই স্তম্ভ ছাড়া আকাশমন্ডলীকে ঊর্ধ্বে স্থাপন করেছেন; তোমরা তা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হয়েছেন[১] এবং সূর্য ও চন্দ্রকে বশীভূত করেছেন; প্রত্যেকে নির্দিষ্ট মিয়াদে আবর্তন করে।[২] তিনি সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন এবং নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাস করতে পার।

[১] استَوَى عَلَى العَرش এর ভাবার্থ ইতিপূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে যে, এর অর্থ মহান আল্লাহর আরশে অবস্থান করা। হাদীস বিশারদদের তরীকা এটাই যে, তাঁরা আল্লাহর কোন গুণের তা'বীল (অপব্যাখ্যা) করেন না, যেমন অন্যরা মহান আল্লাহর উক্ত গুণের এবং তাঁর অন্যান্য গুণের অপব্যাখ্যা করে থাকে। হাদীস বিশারদগণ এও বলেছেন যে, তাঁর গুণাবলীর কেমনত্বও বর্ণনা করা যাবে না এবং কোন কিছুর সাথে তুলনাও করা যাবে না। তিনি বলেন: ﴿لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ﴾ অর্থ, কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। (সূরা শূরা ৪২:১১)[২] এর একটি অর্থ এই যে, 'প্রত্যেকে নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত আবর্তন করবে।' অর্থাৎ কিয়ামত অবধি আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক চলতে থাকবে। মহান আল্লাহ বলেন, ﴿وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ﴾ অর্থাৎ, সূর্য তার স্থির হওয়ার সময় পর্যন্ত চলছে, এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ। (সূরা ইয়াসীন ৩৬:৩৮) দ্বিতীয় অর্থ এই যে, চন্দ্র এবং সূর্য উভয়েই নিজ নিজ কক্ষপথে আবর্তন করছে। সূর্য নিজের চক্র এক বছরে এবং চন্দ্র এক মাসে পূর্ণ করে নেয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, ﴿وَالْقَمَرَ قَدَّرْنَاهُ مَنَازِلَ﴾ অর্থাৎ, চন্দ্রের জন্যে আমি নির্দিষ্ট করেছি বিভিনণ কক্ষপথ। (সূরা ইয়াসীন ৩৬:৩৯) সাতটি বৃহৎ বৃহৎ গ্রহ রয়েছে, ওদের মধ্যে দু'টি হলো সূর্য এবং চন্দ্র। এখানে শুধু উক্ত দু'টি গ্রহের কথা উল্লেখ করেছেন, কেননা এ দুটিই (মানুষের চক্ষুদৃষ্টিতে) সর্বাধিক বিশাল এবং মহত্বপূর্ণ। এ দুটিও যখন আল্লাহর নির্দেশাধীন, তাহলে অন্যগুলো নিশ্চিতরূপে তাঁর নির্দেশাধীন হবে। আর যখন এরা আল্লাহর হুকুমের অধীনে, তখন এরা মা'বূদ (উপাস্য) হতে পারে না। মা'বূদ তো তিনিই, যিনি এদেরকে অধীনস্থ করে রেখেছেন। তাই তিনি বলেন,﴿لَا تَسْجُدُوا لِلشَّمْسِ وَلَا لِلْقَمَرِ وَاسْجُدُوا لِله الَّذِي خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ﴾ অর্থাৎ, চন্দ্র-সূর্যকে সিজদা করো না, সেই আল্লাহকে সিজদা কর, যিনি তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদত করতে চাও। (সূরা ফুসস্বিলাত ৪১:৩৭) অন্যত্র বলেন, ﴿وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ﴾ অর্থাৎ, সূর্য, চন্দ্র ও তারকারাজি সবই তাঁর হুকুমের অনুগত। (সূরা আ'রাফ ৭:৫৪)