وعد الله الذين امنوا منكم وعملوا الصالحات ليستخلفنهم في الارض كما استخلف الذين من قبلهم وليمكنن لهم دينهم الذي ارتضى لهم وليبدلنهم من بعد خوفهم امنا يعبدونني لا يشركون بي شييا ومن كفر بعد ذالك فاولايك هم الفاسقون ٥٥
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مِنكُمْ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِى ٱلْأَرْضِ كَمَا ٱسْتَخْلَفَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ ٱلَّذِى ٱرْتَضَىٰ لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّنۢ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًۭا ۚ يَعْبُدُونَنِى لَا يُشْرِكُونَ بِى شَيْـًۭٔا ۚ وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْفَـٰسِقُونَ ٥٥
وَعَدَ
اللّٰهُ
الَّذِیْنَ
اٰمَنُوْا
مِنْكُمْ
وَعَمِلُوا
الصّٰلِحٰتِ
لَیَسْتَخْلِفَنَّهُمْ
فِی
الْاَرْضِ
كَمَا
اسْتَخْلَفَ
الَّذِیْنَ
مِنْ
قَبْلِهِمْ ۪
وَلَیُمَكِّنَنَّ
لَهُمْ
دِیْنَهُمُ
الَّذِی
ارْتَضٰی
لَهُمْ
وَلَیُبَدِّلَنَّهُمْ
مِّنْ
بَعْدِ
خَوْفِهِمْ
اَمْنًا ؕ
یَعْبُدُوْنَنِیْ
لَا
یُشْرِكُوْنَ
بِیْ
شَیْـًٔا ؕ
وَمَنْ
كَفَرَ
بَعْدَ
ذٰلِكَ
فَاُولٰٓىِٕكَ
هُمُ
الْفٰسِقُوْنَ
۟

তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদেরকে এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে অবশ্যই প্রতিনিধিত্ব দান করবেন; যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য তাদের ধর্মকে -- যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন -- সুদৃঢ় করবেন এবং তাদের ভয় ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে নিরাপত্তা দান করবেন।[১] তারা আমার উপাসনা করবে, আমার কোন অংশী করবে না।[২] অতঃপর যারা অকৃতজ্ঞ (বা অবিশ্বাসী) হবে, তারাই সত্যত্যাগী। [১]

[১] কিছু লোক এই প্রতিশ্রুতিকে সাহাবায়ে কিরামদের সাথে অথবা খোলাফায়ে রাশেদীন (রাঃ)গণের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। কিন্তু উক্ত সীমাবদ্ধতার কোন দলীল নেই। (প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য) কুরআনের শব্দাবলী ব্যাপক এবং ঈমান ও নেক আমলের শর্ত-সাপেক্ষ। অবশ্য এ কথা সত্য যে, সাহাবা (রাঃ) ও খেলাফতে রাশেদার যুগে এবং ইসলামী স্বর্ণযুগে এই ইলাহী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়েছিল। আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে তাঁদেরকে বিজয়ী করেছিলেন। নিজের মনোনীত ধর্ম ইসলামকে উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌঁছে দিয়েছিলেন। মুসলিমদের ভয়কে নিরাপত্তায় পরিণত করেছিলেন। প্রথমতঃ মুসলিমরা আরবের কাফেরদেরকে ভয় করত। পরে অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত হয়ে যায়। নবী (সাঃ) যে সব (অহীলব্ধ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তাও সেই যুগে বাস্তবরূপে দেখা গিয়েছিল। যেমন তিনি বলেছিলেন, "হীরাহ (ইরাকের একটি জায়গা) হতে একজন মহিলা একাকিনী পথ অতিক্রম করে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করবে। তার কোন ভয় ও আশঙ্কা থাকবে না। কিসরার (পারস্য দেশের রাজা) ধন-ভান্ডার তোমাদের পদতলে স্তূপীকৃত হবে।" (বুখারীঃ কিতাবুল মানাক্বিব) সুতরাং সত্য সত্য এ রকমই ঘটেছে। নবী (সাঃ) এও বলেছিলেন যে, "আল্লাহ আমার জন্য পৃথিবীকে সংকুচিত করে দিলেন। অতএব আমি তার পূর্ব ও পশ্চিম অংশ দেখতে পেলাম। অবশ্যই আমার উম্মতের রাজত্ব সেখান পর্যন্ত পৌঁছবে, যেখান পর্যন্ত আমার জন্য পৃথিবী সংকুচিত করা হয়েছিল।" (মুসলিমঃ কিতাবুল ফিতান) শাসন ক্ষমতা ও রাজত্বের এই বিশালতা মুসলিমদের হাতে এসেছিল এবং পারস্য, শাম, মিসর, আফ্রিকা ও অন্যান্য দূর দূরান্তের এলাকা বিজিত হল। আর কুফর ও শিরকের জায়গায় তাওহীদ ও সুন্নতের মশাল সে সব জায়গায় প্রদীপ্ত হল। আর ইসলামী কৃষ্টি-কালচার ও সভ্যতা-সংস্কৃতির পতাকা পৃথিবীর সর্বত্র উড্ডীন হল। কিন্তু উক্ত প্রতিশ্রুতি ছিল শর্তসাপেক্ষ। সুতরাং যখন মুসলিমরা ঈমানের দিক দিয়ে দুর্বল ও সৎকর্ম করায় অলসতা করতে শুরু করল, তখন আল্লাহ তাদের সম্মানকে অপমানে, বিজয়কে পরাজয়ে, স্বাধীনতাকে পরাধীনতায় এবং তাদের সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তাকে ভয় ও আতঙ্কে পরিণত করে দিলেন।

[২] এটিও ঈমান ও সৎকর্মের সাথে আরো একটি বুনিয়াদী শর্ত; যার কারণে মুসলিমরা আল্লাহর সাহায্যের যোগ্য হবে এবং তাওহীদ (একত্ব) এর গুণশুন্য হওয়ার কারণে তারা আল্লাহর সাহায্য হতে বঞ্চিত হবে|

[৩] এই কুফরী থেকে উদ্দেশ্য সেই ঈমান, সৎকর্ম ও তাওহীদ হতে বঞ্চনা; যার ফলে একজন মানুষ আল্লাহর আনুগত্য হতে বের হয়ে কুফরী ও ফাসেকীর (ঈমানহীনতা ও মহাপাপের) গন্ডিতে প্রবেশ করে যায়।