যারা অত্যাচারিত হবার পর আল্লাহর পথে হিজরত (স্বদেশ ত্যাগ) করেছে,[১] আমি অবশ্যই তাদেরকে দুনিয়ায় উত্তম আবাস প্রদান করব।[২] আর পরকালের পুরস্কারই অধিক বড়;[৩] যদি তারা জানত!
[১] হিজরতের অর্থ হল আল্লাহর দ্বীনের জন্য, তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে নিজ মাতৃভূমি, আত্মীয়-সজন, বন্ধু-বান্ধব ছেড়ে এমন স্থানে চলে যাওয়া, যেখানে সহজেই আল্লাহর দ্বীন পালন করা যেতে পারে। এই আয়াতে ঐ সকল মুহাজিরদের মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে। এই আয়াতটি সাধারণ, যা প্রত্যেক মুহাজির ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য। আবার এটিও হতে পারে যে, এই আয়াত ঐ সকল মুহাজিরদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে, যাঁরা নিজ জাতির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে হাবশায় (ইথিউপিয়া) হিজরত করেছিলেন। যাঁদের সংখ্যা ছিল মহিলা সহ এক শত বা তার কিছু বেশি। যাঁদের মধ্যে উসমান গনী ও তাঁর স্ত্রী নবীকন্যা রুক্বাইয়্যা (রায্বিয়াল্লাহু আনহুমা)ও ছিলেন।
[২] حسنة থেকে পবিত্র জীবিকা আবার কেউ কেউ মদীনা অর্থ নিয়েছেন, যা পরবর্তীতে মুসলিমদের কেন্দ্রস্থল হল। ইমাম ইবনে কাসীর বলেছেন, উক্ত দুই কথার মাঝে কোন বিরোধ নেই। কারণ যাঁরা নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য, ঘর-বাড়ি ছেড়ে হিজরত করেছিলেন, মহান আল্লাহ তাঁদেরকে পৃথিবীতেই উত্তম প্রতিদান দিয়েছিলেন। পবিত্র জীবিকাও দান করেছিলেন এবং পুরো আরবের উপর শাসন-ক্ষমতাও দিয়েছিলেন।
[৩] উমার (রাঃ) যখন মুহাজির ও আনসারদের ভাতা নির্ধারিত করলেন, তখন প্রত্যেক মুহাজিরকে ভাতা দিতে গিয়ে বলতেন, এ হল তাই, যার প্রতিশ্রুতি মহান আল্লাহ পৃথিবীতে দিয়েছেন। আর পরকালে যা জমা রেখেছেন তা এর চেয়ে অনেক উত্তম। (ইবনে কাসীর)