যদি তোমরা স্পর্শ করার বা মোহর ধার্য করার পূর্বে স্ত্রীদের তালাক দাও, তবে কোন পাপ হবে না, কিন্তু তাদেরকে যথাসাধ্য উপযুক্ত (ক্ষতিপূরণ) খরচপত্র দিও, সংগতিসম্পন্ন ব্যক্তি তার সাধ্যমত এবং গরীব লোক তার সামর্থ্যানুযায়ী নিয়মমত (ক্ষতিপূরণ) খরচপত্র দানের ব্যবস্থা করবে। এটি সৎকর্মশীল লোকেদের পক্ষে (অবশ্য) কর্তব্য। [১]
[১] এ নির্দেশ এমন মহিলার জন্য, বিবাহের সময় যার দেনমোহর নির্ধারিত হয়নি এবং স্বামী সহবাসের পূর্বেই যাকে তালাক দিয়ে দিয়েছে, (বলা হচ্ছে,) তাকে কিছু না কিছু খরচপত্র (ক্ষতিপূরণস্বরূপ) দিয়ে বিদায় কর। এ খরচপত্র বা ক্ষতিপূরণ প্রত্যেক ব্যক্তির সামর্থ্য অনুযায়ী হওয়া উচিত। সচ্ছল ব্যক্তিরা তাদের সচ্ছলতা অনুযায়ী এবং অসচ্ছলরা তাদের সাধ্য মুতাবেক প্রদান করবে। সৎকর্মশীলদের পক্ষে এটা জরুরী কর্তব্য। আর খরচপত্র বা ক্ষতিপূরণের এই জিনিসকে নির্দিষ্টও করা হয়েছে। কেউ বলেছেন, একটি খাদেম। কেউ বলেছেন, ৫০০ দিরহাম। কেউ বলেছেন, এক বা একাধিক জোড়া কাপড় ইত্যাদি। তবে এ নির্দিষ্টীকরণ শরীয়ত কর্তৃক নয়। প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার সাধ্য অনুযায়ী দেওয়ার এখতিয়ার এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারেও মতভেদ রয়েছে যে, খরচপত্র বা ক্ষতিপূরণ প্রত্যেক প্রকার তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে দেওয়া জরুরী; কেবল সেই তালাকপ্রাপ্তা মহিলার জন্য নির্দিষ্ট নয়, যার কথা এই আয়াতে উল্লেখ হয়েছে। কুরআন কারীমের আরো অন্যান্য আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এটা প্রত্যেক প্রকার তালাকপ্রাপ্তা মহিলার জন্য। আর আল্লাহই ভালো জানেন। খরচপত্র বা ক্ষতিপূরণ স্বরূপ কিছু জিনিস দেওয়ার মধ্যে যে হিকমত, যৌক্তিকতা ও সুফল আছে তা বর্ণনার মুখাপেক্ষী নয়। তালাকের কারণ স্বরূপ তিক্ততা, মন কষাকষি এবং মতবিরোধের সময়ে মহিলার প্রতি অনুগ্রহ করা এবং তার হার্দিক প্রশান্তি ও আন্তরিক তুষ্টির প্রতি যত্ন নেওয়া ভবিষ্যতের সম্ভাব্য বিবাদের পথ রোধ করার জন্য বড়ই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কিন্তু আমাদের সমাজে এই অনুগ্রহ ও উত্তম আচরণের পরিবর্তে তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে এমন নাজেহাল করে বিদায় করা হয় যে, উভয় পক্ষের পারস্পরিক সম্পর্ক চিরকালের জন্য বিদ্বেষপূর্ণ রয়ে যায়।