اُحِلَّ
لَكُمْ
لَیْلَةَ
الصِّیَامِ
الرَّفَثُ
اِلٰی
نِسَآىِٕكُمْ ؕ
هُنَّ
لِبَاسٌ
لَّكُمْ
وَاَنْتُمْ
لِبَاسٌ
لَّهُنَّ ؕ
عَلِمَ
اللّٰهُ
اَنَّكُمْ
كُنْتُمْ
تَخْتَانُوْنَ
اَنْفُسَكُمْ
فَتَابَ
عَلَیْكُمْ
وَعَفَا
عَنْكُمْ ۚ
فَالْـٰٔنَ
بَاشِرُوْهُنَّ
وَابْتَغُوْا
مَا
كَتَبَ
اللّٰهُ
لَكُمْ ۪
وَكُلُوْا
وَاشْرَبُوْا
حَتّٰی
یَتَبَیَّنَ
لَكُمُ
الْخَیْطُ
الْاَبْیَضُ
مِنَ
الْخَیْطِ
الْاَسْوَدِ
مِنَ
الْفَجْرِ ۪
ثُمَّ
اَتِمُّوا
الصِّیَامَ
اِلَی
الَّیْلِ ۚ
وَلَا
تُبَاشِرُوْهُنَّ
وَاَنْتُمْ
عٰكِفُوْنَ ۙ
فِی
الْمَسٰجِدِ ؕ
تِلْكَ
حُدُوْدُ
اللّٰهِ
فَلَا
تَقْرَبُوْهَا ؕ
كَذٰلِكَ
یُبَیِّنُ
اللّٰهُ
اٰیٰتِهٖ
لِلنَّاسِ
لَعَلَّهُمْ
یَتَّقُوْنَ
۟

রোযার রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী-সম্ভোগ বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে, তোমরা আত্মপ্রতারণা করছ। তাই তো তিনি তোমাদের প্রতি সদয় হয়েছেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। অতএব এখন তোমরা তোমাদের পত্নীদের সঙ্গে সহবাস করতে পার এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা (সন্তান) লিখে রেখেছেন, তা কামনা কর। আর তোমরা পানাহার কর; যতক্ষণ কালো সুতা (রাতের কালো রেখা) হতে ঊষার সাদা সুতা (সাদা রেখা) স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়।[১] অতঃপর রাত্রি পর্যন্ত রোযা পূর্ণ কর।[২] আর তোমরা মসজিদে ‘ইতিকাফ’ রত অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করো না।[৩] এগুলি আল্লাহর সীমারেখা; সুতরাং এর ধারে-পাশে যেও না। এভাবে আল্লাহ মানুষের জন্য তাঁর নিদর্শনাবলী সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাতে তারা সাবধান হয়ে চলতে পারে।

[১] ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে একটি নির্দেশ এ রকম ছিল যে, রোযার ইফতারী করার পর থেকে এশার নামায অথবা ঘুমিয়ে পড়া পর্যন্ত পানাহার এবং স্ত্রীর-সহবাস করার অনুমতি ছিল। ঘুমিয়ে গেলে এগুলোর কোনটাই করা যেত না। পরিষ্কার কথা যে, মুসলিমদের জন্য এই বাধ্য-বাধকতা বড়ই কঠিন ছিল এবং এর উপর আমলও বড় কষ্টকর ছিল। মহান আল্লাহ উক্ত আয়াতে এই দু'টি নিষেধাজ্ঞাই উঠিয়ে নিয়ে ইফতারী থেকে ফজর উদয় হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত পানাহার এবং স্ত্রীর সাথে যৌনক্ষুধা নিবারণের অনুমতি দান করলেন। الرَّفَث এর অর্থ, স্ত্রীর সাথে সহবাস করা। الخيط الأبيض (সাদা সুতা বা ভোরের সাদা রেখা)এর অর্থ, সুবহে সাদেক এবং الخيط الأسود (কাল সুতা বা রেখা)এর অর্থ, রাত। (ইবনে কাসীর)

মাসআলাঃ এ থেকে এ কথাও প্রতীয়মান হয় যে, অপবিত্র অবস্থায় রোযা রাখা যায়। কেননা, ফজর পর্যন্ত মহান আল্লাহ সহবাস ইত্যাদির অনুমতি দিয়েছেন এবং সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হাদীস দ্বারাও এর সমর্থন হয়। (ইবনে কাসীর)

[২] অর্থাৎ, রাত (শুরু) হওয়ার সাথে সাথেই (সূর্যাস্তের পর পরই) ইফতারী করে নাও, দেরী করো না। হাদীসেও রোযা তাড়াতাড়ি ইফতারী করার তাকীদ ও ফযীলতের কথা এসেছে। আর দ্বিতীয় নির্দেশ হল, 'বিসাল' (একটানা রোযা) করো না। অর্থাৎ, একদিন রোযা রেখে ইফতারী না করে (এবং সেহরীও না খেয়ে) পরের দিনও রোযা রেখো না। নবী করীম (সাঃ)ও এ রোযা রাখতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। (হাদীস গ্রন্থসমূহ দ্রষ্টব্য)

[৩] ই'তিক্বাফ অবস্থায় স্ত্রী-সঙ্গম ও তার সাথে কোন প্রকার যৌনাচার করার অনুমতি নেই। হ্যাঁ, দেখা-সাক্ষাৎ ও কথাবার্তা জায়েয। {عَاكِفُوْنَ فِي الْمَسَاجِدِ} থেকে সাব্যস্ত করা হয়েছে যে, ই'তিক্বাফের জন্য মসজিদে অবস্থান জরুরী। তাতে সে পুরুষ হোক অথবা মহিলা। নবী করীম (সাঃ)-এর পবিত্রা স্ত্রীগণও মসজিদে ই'তিক্বাফ করতেন। কাজেই মহিলাদের নিজেদের ঘরে ই'তিক্বাফে বসা ঠিক নয়। অবশ্য মসজিদে তাদের জন্য পুরুষ থেকে পৃথকভাবে প্রত্যেক জিনিসের ব্যবস্থা থাকা জরুরী। যাতে পুরুষদের সাথে কোন প্রকারের মেলামেশা না ঘটে। যতক্ষণ পর্যন্ত মসজিদে মহিলাদের জন্য পুরুষদের থেকে পৃথকভাবে উপযুক্ত ও সুরক্ষিত ব্যবস্থা না করা যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে মসজিদে ই'তিক্বাফে বসতে না দেওয়াই উচিত হবে এবং মহিলাদেরও উচিত, তারা যেন এ ব্যাপারে জেদ না ধরে। এটা কেবল একটি নফল ইবাদত, তাই সম্পূর্ণরূপে হেফাযতের ব্যবস্থা না থাকলে এই নফল ইবাদত ত্যাগ করাই ভাল। ফিকহের মূল নীতি হল, 'কল্যাণ আনয়নের উপর অকল্যাণ নিবারণকে প্রাধান্য দিতে হবে।'

আপনার Quran.com অভিজ্ঞতা সর্বাধিক করুন!
এখনই আপনার সফর শুরু করুন:

%