মাদয়ানবাসীদের নিকট তাদের ভ্রাতা শুআইবকে পাঠিয়েছিলাম।[১] সে বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা (কেবল) আল্লাহর উপাসনা কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন (সত্যিকার) উপাস্য নেই। অবশ্যই তোমাদের প্রতিপালক হতে তোমাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণ এসেছে। সুতরাং তোমরা মাপ ও ওজন সঠিকভাবে দাও; লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না[২] এবং পৃথিবীতে শান্তি-স্থাপনের পর বিপর্যয় ঘটিও না। তোমরা বিশ্বাসী হলে তোমাদের জন্য এটিই কল্যাণকর।
[১] 'মাদয়ান' ইবরাহীম (আঃ)-এর পুত্র অথবা পৌত্রের নাম ছিল। অতঃপর তাদের থেকেই গঠিত এই গোত্রের নাম 'মাদয়ান' এবং যে গ্রামে তারা বসবাস করত তারও নাম হয়ে যায় 'মাদয়ান'। এইভাবে গোত্র ও গ্রাম উভয় ক্ষেত্রেই এটা (মাদয়ান) ব্যবহার হয়। এ গ্রামটা হিজাযের পথে 'মাআন'এর সন্নিকটে অবস্থিত। এটাকেই কুরআনের অন্যত্র أَصْحَابُ الأَيْكَةِ (বনের অধিবাসী) বলা হয়েছে। এদের নিকট শুআইব (আঃ)-কে নবী বানিয়ে প্রেরণ করা হয়েছিল।(সূরা শুআরার ২৬:১৭৬ নং আয়াতের টীকা দ্রষ্টব্য)জ্ঞাতব্যঃ প্রত্যেক নবীকে তার সম্প্রদায়ের ভাই বলা হয়েছে। যার অর্থ, সেই জাতির এবং গোত্রের তিনি একজন। আবার এটাকেই কোন কোন স্থানে رَسُوْلًا مِنْهُمْ অথবা مِنْ أَنْفُسِهِمْ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ সবের অর্থ ও উদ্দেশ্য হল, রসূল ও নবী মানুষের মধ্যেকারই একজন মানুষ হন, যাঁকে আল্লাহ তাআলা মানুষের হিদায়াতের জন্য নির্বাচন করেন এবং অহীর মাধ্যমে তাঁর উপর স্বীয় কিতাব ও যাবতীয় বিধি-বিধান অবতীর্ণ করেন।[২] তাওহীদের দাওয়াত দেওয়ার পর এই জাতির মধ্যে ওজনে কম দেওয়ার যে বড় কুঅভ্যাস ছিল, তা থেকে তাদেরকে নিষেধ প্রদান করা হয়েছে এবং মাপ ও ওজন পূর্ণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ত্রুটিও বড় বিপজ্জনক আচরণ ছিল; যার ফলে এই জাতির নৈতিক অবক্ষয় ও অবনতির কথা প্রমাণ হয়। মূল্য পুরো নেওয়া হবে, কিন্তু জিনিস কম দেওয়া হবে, এটা তো জঘন্যতম খিয়ানত। এই কারণেই সূরা মুত্বাফফিফীনে এমন লোকদেরকে ধ্বংসের খবর দেওয়া হয়েছে।