তোমরা কি আশ্চর্যবোধ করছ যে, তোমাদেরই একজনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তোমাদের নিকট উপদেশ এসেছে, যাতে সে তোমাদেরকে সতর্ক করে এবং যাতে তোমরা সাবধান হও ও অনুকম্পা লাভ করতে পার?’ [১]
[১] নূহ (আঃ) এবং আদম (আঃ)-এর মধ্যে ব্যবধান হল দশ শতাব্দী অথবা দশ পুরুষ। নূহ (আঃ)-এর কিছু পূর্ব থেকে সমস্ত মানুষ তাওহীদের উপরেই প্রতিষ্ঠিত ছিল। অতঃপর সর্বপ্রথম তাওহীদ থেকে বিচ্যুতি এইভাবে ঘটে যে, যখন এই জাতির নেক লোকেরা মারা যান, তখন তাঁদের ভক্তরা তাঁদের বসার জায়গাগুলোকে উপাসনালয় বানিয়ে নেয় এবং তাঁদের চিত্রও সেখানে ঝুলিয়ে দেয়। এ থেকে তাদের উদ্দেশ্য ছিল, এইভাবে তারা তাঁদেরকে স্মরণ করে তারাও তাঁদের মত আল্লাহর যিকর ও ইবাদত করবে এবং সেই যিকর ও ইবাদতে তাঁদের অনুকরণ করবে। অতঃপর যখন কিছু কাল অতিবাহিত হল, তখন তারা এই চিত্রগুলোর মূর্তি নির্মাণ করল। তারপর কিছু কাল কেটে গেলে সে মূর্তিগুলো দেবতার আকার ধারণ করল এবং তাদের পূজাপাঠ আরম্ভ হয়ে গেল। এইভাবে নূহ (আঃ)-এর জাতির অদ্দ্, সুওয়া', ইয়াগূস, ইয়াউক ও নাসর নামের পাঁচজন নেক লোক উপাস্য বনে গেলেন। এই অবস্থায় মহান আল্লাহ নূহ (আঃ)-কে তাদের মাঝে নবী বানিয়ে প্রেরণ করলেন। তিনি সাড়ে নয় শত বছর পর্যন্ত তাদেরকে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত দিলেন। কিন্তু অল্প সংখ্যক কিছু লোক ছাড়া তাঁর দাওয়াতের প্রভাব কারো উপর পড়ল না। পরিশেষে ঈমানদারদের ছাড়া সকলকেই ডুবিয়ে ধ্বংস করা হল। এই আয়াতে বলা হচ্ছে যে, নূহ (আঃ)-এর জাতি এ ব্যাপারে বিস্ময় প্রকাশ করেছিল যে, তাদেরই মধ্য থেকে একজন নবী হয়ে এসেছে, যে তাদেরকে আল্লাহর আযাবের ভয় দেখায়? অর্থাৎ, তাদের ধারণা ছিল, মানুষ নবী হওয়ার উপযুক্ত নয়।